হে ভাইসব! নিশ্চয় ‘তাশাব্বুহ’ তথা কাফের মুশরিকদের অনুসরণ-অনুকরণ করে তাদের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের বিষয়টি ঐসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো সম্পর্কে মুসলিমগণের গুরুত্ব প্রদান করা উচিত। কারণ, আজকের মুসলিমগণের অনেকই দীনের ক্ষেত্রে অনুকরণের মারাত্মক ও বড় বড় প্রকারসমূহে লিপ্ত হয়ে গেছে বরং তাদের কতগুলো দল বা গোষ্ঠী এমন সব কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে, যা কুফুরী, পথভ্রষ্টতা, শির্ক, বিদ‘আত অথবা এগুলো ব্যতীত অন্য কোনো অপরাধ। যদিও তার পক্ষ থেকে অনুকরণ করার বিষয়টি ছিল এমন, যাতে প্রাচীন কালের মুসলিমগণও লিপ্ত ছিল; কিন্তু বিষয়টি তখন এমন পর্যায়ে পৌঁছে নি, যে পর্যায়ে বর্তমান সময়ে পৌঁছেছে। সুতরাং এ যুগে আমরা অধিকাংশ কাজের ক্ষেত্রে মুসলিমগণকে অমুসলিমদের অনুসরণ করতে দেখতে পাচ্ছি; শুধু আল্লাহ যাকে রক্ষা করেছেন, সে ব্যতীত।

দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, আজকের মুসলিমগণ অধিকাংশ বিষয়ে কাফিরদের অনুসারী। ইবাদাত সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের কোনো একটি বিষয়ে অথবা আচার-আচরণজনিত বৈশিষ্ট্যসমূহের কোনো একটি বৈশিষ্ট্যে অথবা এরূপ কোনো বিষয়ে। এক্ষেত্রে তারা আংশিক অনুসরণ করছে না; বরং আকীদা-বিশ্বাস, শরী‘আত, চরিত্র, চালচলন পদ্ধতি, গবেষণা পদ্ধতি, শিক্ষা পদ্ধতি, অর্থনীতি ও রাজনীতিসহ জীবনের অধিকাংশ দিক ও বিভাগের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ অনুসরণকারী। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সেসব আমদানি করা মানবরচিত আইন ও বিধিবিধান, যার মাধ্যমে তারা বিচার-ফায়সালার ক্ষেত্রে আল্লাহর দীনকে বর্জন করেছে। ফলে অধিকাংশ মুসলিম আজ এমন কতগুলো দল ও রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যারা কাফিরদের রাষ্ট্র ও সংস্থাসমূহের কাছে বিচার-ফয়সালার জন্য দ্বারস্থ হয়; বরং তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে শালিস মানার চেয়ে তাদেরকে অধিক পরিমাণে শালিস মানে। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে মুসলিমগণ তাদের পরাজিত মন-মানসিকতা ও তাদের দীন থেকে তাদের পদস্খলনের কারণে নৈতিক চরিত্র, চালচলন ও প্রকাশ্য সত্য-সঠিক নীতি থেকে দূরে সরে গেছে। এমনকি কোনো কোনো মুসলিম দেশে সুন্নাহ হয়ে গেছে অপরিচিত, কাফিরদের চরিত্র ও রীতিনীতি হয়ে গেছে আসল বস্তু। এটা এমন একটি বিষয়, যা সকলেই অবগত! আল্লাহর শুকরিয়া যে, আমাদের এ দেশে অর্থাৎ সৌদি আরবে মুসলিমগণের বাহ্যিক চালচলনের অধিকাংশই ইসলাম অনুযায়ী অব্যাহত আছে। আর অব্যাহতভাবে নৈতিক চরিত্র, আচর-আচরণ, বিধিবিধান ও শাসনব্যবস্থা ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে। আর এটা হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বড় নিয়ামত, তা রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য।