হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
১৫৪. উচ্চ স্বরে কুর‘আন তিলাওয়াত করে অথবা যে কোন কথা বলে মসজিদের কোন মুসল্লিকে কষ্ট দেয়া

উচ্চ স্বরে কুর‘আন তিলাওয়াত করে অথবা যে কোন কথা বলে মসজিদের কোন মুসল্লিকে কষ্ট দেয়া হারাম কাজ।

আবূ সা’ঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মসজিদে ই’তিকাফ করলে সাহাবাদের উচ্চ কিরাত শুনতে পান। তখন তিনি পর্দা উঠিয়ে বলেন:

أَلَا إِنَّ كُلَّكُمْ مُنَاجٍ رَبَّهُ، فَلَا يُؤْذِيَنَّ بَعْضُكُمْ بَعْضًا، وَلَا يَرْفَعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِيْ الْقِرَاءَةِ أَوْ قَالَ: فِيْ الصَّلَاةِ.

‘‘জেনে রাখো, তোমাদের প্রত্যেকেই তার প্রভুর সাথে একান্তে আলাপ করে। সুতরাং তোমাদের কেউ যেন এ সময় অন্যকে কষ্ট না দেয় এবং নামাযের ভেতরে বা বাইরে উচ্চ স্বরে কিরাত না পড়ে’’।

(আবূ দাউদ ১৩৩২)

উচ্চ স্বরে কিরাত পড়ার চাইতে নিচু স্বরে কিরাত পড়ায় সাওয়াব বেশি।

’উক্ববাহ্ বিন্ ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْـجَاهِرُ بِالْقُرْآنِ كَالْجَاهِرِ بِالصَّدَقَةِ، وَالْـمُسِرُّ بِالْقُرْآنِ كَالْـمُسِرِّ بِالصَّدَقَةِ.

‘‘উচ্চ স্বরে কুর‘আন পড়া প্রকাশ্য সাদাকার ন্যায়। আর নিচু স্বরে কুর‘আন পড়া লুক্কায়িত সাদাকার ন্যায়’’। (আবূ দাউদ ১৩৩৩)

তবে উচ্চ স্বরে কুর‘আন পড়ায় কারোর কোন ক্ষতি না হয়ে যদি লাভ হয় তা হলে তাতে কোন অসুবিধে নেই।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা রাত্রি বেলায় ঘর থেকে বের হয়ে দেখলেন আবূ বকর (রাঃ) নিচু স্বরে নামায পড়ছেন আর ’উমর (রাঃ) উচ্চ স্বরে। যখন তাঁরা উভয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একত্রিত হলেন তখন তিনি বললেন: হে আবূ বকর! আমি একদা তোমাকে নিচু স্বরে নামায পড়তে দেখলাম। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আমি যাঁর সাথে একান্তে আলাপ করছিলাম তিনি তো আমার আওয়ায শুনেছেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’উমর (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বললেন: হে ’উমর! আমি একদা তোমাকে উচ্চ স্বরে নামায পড়তে দেখলাম। তখন ’উমর (রাঃ) বললেন: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আমি শয়তানকে তাড়াচ্ছিলাম আর ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগাচ্ছিলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো দেখলেন বিলাল (রাঃ) এক সূরাহ থেকে কিছু আয়াত আবার অন্য সূরাহ থেকে আরো কিছু আয়াত তিলাওয়াত করছেন। তখন তিনি বিলাল (রাঃ) কে একদা এ ব্যাপারে জানালে তিনি বলেন: কথাগুলো খুবই সুন্দর! আল্লাহ্ তা‘আলা সবগুলো একত্রিত করে নিবেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবাইকে বললেন: তোমরা সবাই ঠিক করেছো। (আবূ দাউদ ১৩৩০)

‘আয়িশা (রাযিয়াল্লাহু আন্হা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা জনৈক সাহাবী রাত্রি বেলার নামাযে উচ্চ স্বরে কিরাত পড়েছেন। ভোর হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সম্পর্কে বললেন: আল্লাহ্ তা‘আলা অমুককে দয়া করুন! সে গতরাত আমাকে অনেকগুলো আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যা আমার পড়া থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলো। (আবূ দাউদ ১৩৩১)