হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
৫২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয়া

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয়া আরেকটি মারাত্মক কবীরা গুনাহ্।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ، لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ، فَوَ الَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ! لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيْفَهُ.

‘‘তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না। তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না। সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ আল্লাহ্ তা‘আলার রাস্তায় উহুদ্ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ সাদাকা করলেও তাদের কারোর এক অঞ্জলি সমপরিমাণ অথবা তার অর্ধেকের সাওয়াব পাবে না’’। (মুসলিম ২৫৪০)

আবূ সাঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) ও আব্দুর রহমান বিন্ ‘আউফ (রাঃ) এর মাঝে কোন একটি ব্যাপার নিয়ে মনোমালিন্য হলে খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) আব্দুর রহমান বিন্ ‘আউফ (রাঃ) কে গালি দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতে পেয়ে খালিদ বিন্ ওলীদ (রাঃ) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:

لَا تَسُبُّوْا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِيْ، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَوْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيْفَهُ.

‘‘তোমরা আমার (প্রথম যুগের) কোন সাহাবাকে গালি দিও না। কারণ, তোমাদের কেউ আল্লাহ্ তা‘আলার রাস্তায় উহুদ্ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ সাদাকা করলেও তাদের কারোর এক অঞ্জলি সমপরিমাণ অথবা তার অর্ধেকের সাওয়াব পাবে না’’। (বুখারী ৩৬৭৩; মুসলিম ২৫৪১)

যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদেরকে গালি দেয় তাদের উপর আল্লাহ্ তা‘আলা, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত পতিত হবে।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ سَبَّ أَصْحَابِيْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْـمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ.

‘‘যে ব্যক্তি আমার কোন সাহাবাকে গালি দিলো তার উপর আল্লাহ্ তা‘আলা, ফিরিশ্তা ও সকল মানুষের লা’নত পতিত হোক’’। (ত্বাবারানী/কবীর ১২৭০৯ সা’হীহুল্ জামি’, হাদীস ৫২৮৫)

‘আলী, আন্সারী সাহাবীগণ এমনকি যে কোন সাহাবীকে ভালোবাসা ঈমানের পরিচায়ক।

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

وَالَّذِيْ فَلَقَ الْـحَبَّةَ وَبَرَأَ النَّسَمَةَ! إِنَّهُ لَعَهْدُ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ  إِلَيَّ أَنْ لَا يُحِبَّنِيْ إِلاَّ مُؤْمِنٌ، وَلَا يُبْغِضُنِيْ إِلاَّ مُنَافِقٌ.

‘‘সে সত্তার কসম যিনি বীজ থেকে উদ্ভিদ এবং সকল প্রাণী করেছেন! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন: একমাত্র মু’মিনই তোমাকে ভালোবাসবে এবং একমাত্র মুনাফিকই তোমার সাথে শত্রুতা পোষণ করবে’’। (মুসলিম ৭৮)

আনাস্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

آيَةُ الْإِيْمَانِ حُبُّ الْأَنْصَارِ، وَآيَةُ النِّفَاقِ بُغْضُ الْأَنْصَارِ.

‘‘আন্সারী সাহাবাগণকে ভালোবাসা ঈমানের পরিচায়ক এবং তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা মুনাফিকির পরিচায়ক’’। (বুখারী ১৭, ৩৭৮৪; মুসলিম ৭৪)

বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আন্সারী সাহাবাগণ সম্পর্কে বলেন:

الْأَنْصَارُ لَا يُحِبُّهُمْ إِلاَّ مُؤْمِنٌ، وَلَا يُبْغِضُهُمْ إِلاَّ مُنَافِقٌ، فَمَنْ أَحَبَّهُمْ أَحَبَّهُ اللهُ، وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ أَبْغَضَهُ اللهُ.

‘‘একমাত্র মু’মিনই আন্সারী সাহাবাগণকে ভালোবাসবে এবং একমাত্র মুনাফিকই তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে। যে ব্যক্তি তাদেরকে ভালোবাসলো আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে ভালোবাসবেন এবং যে ব্যক্তি তাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করলো আল্লাহ্ তা‘আলা তার সাথে বিদ্বেষ পোষণ করবেন’’। (বুখারী ৩৭৮৩; মুসলিম ৭৫)