কারোর দোষ অনুসন্ধান অথবা তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করা আরেকটি কবীরা গুনাহ্। তাই তো আল্লাহ্ তা‘আলা মু’মিনদেরকে এমন করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«يَآ أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اجْتَنِبُوْا كَثِيْرًا مِّنَ الظَّنِّ، إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَّلَا تَجَسَّسُوْا»
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। কারণ, কিছু কিছু অনুমান তো পাপ এবং তোমরা কারোর গোপনীয় দোষ অনুসন্ধান করো না’’। (’হুজুরাত : ১২)
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে উঠে উচ্চ স্বরে বলেন:
يَا مَعْشَرَ مَنْ أَسْلَمَ بِلِسَانِهِ، وَلَمْ يُفْضِ الْإِيْمَانُ إِلَى قَلْبِهِ! لَا تُؤْذُوْا الْـمُسْلِمِيْنَ، وَلَا تُعَيِّرُوْهُمْ وَلَا تَتَّبِعُوْا عَوْرَاتِهِمْ ؛ فَإِنَّهُ مَنْ تَتَبَّعَ عَوْرَةَ أَخِيْهِ الْـمُسْلِمِ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ، وَمَنْ تَتَبَّعَ اللهُ عَوْرَتَهُ يَفْضَحْهُ وَلَوْ فِيْ جَوْفِ رَحْلِهِ.
‘‘হে লোক সকল! তোমরা যারা মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছো; অথচ ঈমান তোমাদের অন্তরে ঢুকেনি তোমরা মুসলিমদেরকে কষ্ট দিও না। তাদেরকে লজ্জা দিও না। তাদের দোষ অনুসন্ধান করো না। কারণ, যে ব্যক্তি তার কোন মুসলিম ভাইয়ের দোষ অনুসন্ধান করলো আল্লাহ্ তা‘আলাও তার দোষ অনুসন্ধান করবেন। আর যার দোষ আল্লাহ্ তা‘আলা অনুসন্ধান করবেন তাকে অবশ্যই তিনি লাঞ্ছিত করে ছাড়বেন যদিও সে নিজ ঘরের অভ্যন্তরেই অবস্থান করুক না কেন’’। (তিরমিযী ২০৩২)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنِ اسْتَمَعَ إِلَى حَدِيْثِ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُوْنَ، أَوْ يَفِرُّوْنَ مِنْهُ صُبَّ فِيْ أُذُنِهِ الْآنُكُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
‘‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের কথা গুপ্তভাবে শুনলো; অথচ সে তাদের কথাগুলো শুনুক তারা তা পছন্দ করছে না অথবা তারা তার অবস্থান টের পেয়ে তার থেকে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে কিয়ামতের দিন এ জন্য তার কানে সিসা ঢেলে দেয়া হবে’’। (বুখারী ৭০৪২)
মু‘আবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন:
إِنَّكَ إِنِ اتَّبَعْتَ عَوْرَاتِ النَّاسِ أَفْسَدْتَهُمْ، أَوْ كِدْتَ أَنْ تُفْسِدَهُمْ.
‘‘নিশ্চয়ই তুমি মানুষের দোষ অনুসন্ধান করলে তাদেরকে ধ্বংস করে দিবে অথবা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছিয়ে দিবে’’। (আবূ দাউদ ৪৮৮৮)
‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাস্’ঊদ্ (রাঃ) এর নিকট জনৈক ব্যক্তিকে আনা হলো যার দাড়ি থেকে তখনো মদের ফোঁটা ঝরছিলো অতঃপর তিনি বললেন:
إِنَّا قَدْ نُهِيْنَا عَنِ التَّجَسُّسِ، وَلَكِنْ إِنْ يَّظْهَرْ لَنَا شَيْءٌ نَأْخُذْ بِهِ.
‘‘আমাদেরকে গোয়েন্দাগিরি বা কারোর দোষ অনুসন্ধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে আমাদের নিকট কোন কিছু প্রকাশ পেলেই তখন সে জন্য আমরা তাকে পাকড়াও করতে পারি’’। (আবূ দাউদ ৪৮৯০)
কেউ কারোর ঘরে তার অনুমতি ছাড়াই উঁকি মারলে ঘরের মালিক কোন বস্ত্ত দিয়ে তার চোখ ফুটো করে দিলে এর জন্য তাকে কোন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
لَوْ أَنَّ امْرًَا اطَّلَعَ عَلَيْكَ بِغَيْرِ إِذْنٍ فَخَذَفْتَهُ بِحَصَاةٍ، فَفَقَأْتَ عَيْنَهُ، لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ جُنَاحٌ.
‘‘কোন ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া তোমার ঘরে উঁকি মারলে অতঃপর তুমি কুঁচি পাথর অথবা কঙ্কর মেরে তার চোখ ফুটো করে দিলে এতে তোমার কোন গুনাহ্ হবে না’’। (বুখারী ৬৯০২; মুসলিম ২১৫৮)