হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ পরিচিতি মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি

কেউ শয়তানের ধোকায় পড়ে ব্যভিচার করে ফেললে সে যদি অবিবাহিত হয় তা হলে তাকে একশ’টি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করা হবে। আর যদি সে বিবাহিত হয় তা হলে তাকে রজম তথা পাথর মেরে হত্যা করা হবে।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«الزَّانِيَةُ وَالزَّانِيْ فَاجْلِدُوْا كُلَّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا مِئَةَ جَلْدَةٍ، وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِيْ دِيْنِ اللهِ، إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِّنَ الْـمُؤْمِنِيْنَ»

‘‘ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী; তাদের প্রত্যেককে তোমরা একশ’ করে বেত্রাঘাত করবে। আল্লাহ্’র বিধান কার্যকরী করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবিত করতে না পারে যদি তোমরা আল্লাহ্ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাকো এবং মু’মিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে’’। (নূর : ২)

আবূ হুরাইরাহ্ ও যায়েদ বিন্ খালিদ জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন:

جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! اِقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ، فَقَامَ خَصْمُهُ فَقَالَ: صَدَقَ، اِقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ، فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ: إِنَّ ابْنِيْ كَانَ عَسِيْفًا عَلَى هَذَا، فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ، فَقَالُوْا لِيْ: عَلَى ابْنِكَ الرَّجْمُ، فَفَدَيْتُ ابْنِيْ مِنْهُ بِمِئَةٍ مِنَ الْغَنَمِ وَوَلِيْدَةٍ، ثُمَّ سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَقَالُوْا: إِنَّمَا عَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِئَةٍ وَتَغْرِيْبُ عَامٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ : لَأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ، أَمَّا الْوَلِيْدَةُ وَالْغَنَمُ فَرَدٌّ عَلَيْكَ، وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِئَةٍ وَتَغْرِيْبُ عَامٍ، وَأَمَّا أَنْتَ يَا أُنَيْسُ! فَاغْدُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا فَارْجُمْهَا، فَغَدَا عَلَيْهَا أُنَيْسٌ فَرَجَمَهَا.

‘‘জনৈক বেদুঈন ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! আপনি আমাদের মাঝে কুর‘আনের ফায়সালা করুন। তার প্রতিপক্ষও দাঁড়িয়ে বললো: সে সত্য বলেছে। আপনি আমাদের মাঝে কুর‘আনের ফায়সালা করুন। তখন বেদুঈন ব্যক্তিটি বললো: আমার ছেলে এ ব্যক্তির নিকট কামলা খাটতো। ইতিমধ্যে সে এর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার করে বসে। সবাই আমাকে বললো: তোমার ছেলেটিকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে। তখন আমি আমার ছেলেকে ছাড়িয়ে নেই একে একটি বান্দি ও একশ’টি ছাগল দিয়ে। অতঃপর আলিমদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা বললো: তোমার ছেলেকে একশ’টি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করতে হবে। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি তোমাদের মাঝে কুর‘আনের বিচার করছি, বান্দি ও ছাগলগুলো তোমাকে ফেরত দেয়া হবে এবং তোমার ছেলেকে একশ’টি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করতে হবে। আর হে উনাইস্! তুমি এর স্ত্রীর নিকট যাও। অতঃপর তাকে রজম করো। অতএব উনাইস্ তার নিকট গেলো। অতঃপর তাকে রজম করলো’’।

(বুখারী ২৬৯৫, ২৬৯৬; মুসলিম ১৬৯৭, ১৬৯৮; তিরমিযী ১৪৩৩; আবূ দাউদ ৪৪৪৫; ইব্নু মাজাহ্ ২৫৯৭)

’উবাদা বিন্ স্বামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

خُذُوْا عَنِّيْ، خُذُوْا عَنِّيْ، فَقَدْ جَعَلَ اللهُ لَـهُنَّ سَبِيْلًا، الْبِكْرُ بِالْبِكْرِ جَلْدُ مِئَةٍ وَنَفْيُ سَنَةٍ، وَالثَّيِّبُ بِالثَّيِّبِ جَلْدُ مِئَةٍ وَالرَّجْمُ.

‘‘তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। তোমরা আমার নিকট থেকে বিধানটি সংগ্রহ করে নাও। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের জন্য একটি ব্যবস্থা দিয়েছেন তথা বিধান অবতীর্ণ করেছেন। অবিবাহিত যুবক-যুবতীর শাস্তি হচ্ছে, একশ’টি বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ ও মহিলার শাস্তি হচ্ছে, একশ’টি বেত্রাঘাত ও রজম তথা পাথর মেরে হত্যা’’।

(মুসলিম ১৬৯০; আবূ দাউদ ৪৪১৫, ৪৪১৬; তিরমিযী ১৪৩৪; ইব্নু মাজাহ্ ২৫৯৮)

উক্ত হাদীসে বিবাহিত পুরুষ ও মহিলাকে একশ’টি বেত্রাঘাত করার কথা থাকলেও তা করতে হবে না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা’য়িয ও গা’মিদী মহিলাকে একশ’টি করে বেত্রাঘাত করেননি। বরং অন্য হাদীসে তাদেরকে শুধু রজম করারই প্রমাণ পাওয়া যায়।

আরেকটি কথা হচ্ছে, শরীয়তের সাধারণ নিয়ম এই যে, কারোর উপর কয়েকটি দন্ডবিধি একত্রিত হলে এবং তার মধ্যে হত্যার বিধানও থাকলে তাকে শুধু হত্যাই করা হয়। অন্যগুলো করা হয় না। ’উমর ও ’উস্মান (রা.) এটির উপরই আমল করেছেন এবং ‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ মাসঊদ (রাঃ) থেকেও ইহা বর্ণিত হয়েছে। তবে ‘আলী (রাঃ) তাঁর যুগে কোন এক ব্যক্তিকে রজমও করেছেন এবং বেত্রাঘাতও। ‘আব্দল্লাহ্ বিন্ ‘আববাস্, উবাই বিন্ কা’ব্ এবং আবূ যরও এ মত পোষণ করেন।

আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

ضَرَبَ رَسُوْلُ اللهِ  وَغَرَّبَ، وَضَرَبَ أَبُوْ بَكْرٍ  وَغَرَّبَ، وَضَرَبَ عُمَرُ  وَغَرَّبَ.

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরেছেন (বেত্রাঘাত করেছেন) ও দেশান্তর করেছেন, আবূ বকর (রাঃ) মেরেছেন ও দেশান্তর করেছেন এবং ’উমর (রাঃ) মেরেছেন ও দেশান্তর করেছেন’’। (তিরমিযী ১৪৩৮)

’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

أَتَتِ النَّبِيَّ اِمْرَأَةٌ مِنْ جُهَيْنَةَ، وَهِيَ حُبْلَى مِنَ الزِّنَا، فَقَالَتْ: يَا نَبِيَّ اللهِ! أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَيَّ، فَدَعَا رَسُوْلُ اللهِ  وَلِيَّهَا، فَقَالَ: أَحْسِنْ إِلَيْهَا، فَإِذَا وَضَعَتْ فَأْتِنِيْ بِهَا، فَفَعَلَ، فَأَمَرَ بِهَا، فَشُكَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا، ثُمَّ أُمِرَ بِهَا فَرُجِمَتْ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا، فَقَالَ عُمَرُ: أَتُصَلِّيْ عَلَيْهَا يَا نَبِيَّ اللهِ! وَقَدْ زَنَتْ؟! فَقَالَ: لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِّمَتْ بَيْنَ سَبْعِيْنَ مِنْ أَهْلِ الْـمَدِيْنَةِ لَوَسِعَتْهُمْ، وَهَلْ وَجَدْتَ أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلهِ تَعَالَى.

‘‘একদা জনৈকা জুহানী মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো। তখন সে ব্যভিচার করে গর্ভবতী। সে বললো: হে আল্লাহ্’র নবী! আমি ব্যভিচারের শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত। অতএব আপনি তা আমার উপর প্রয়োগ করুন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অভিভাবককে ডেকে বললেন: এর উপর একটু দয়া করো। এ যখন সন্তান প্রসব করবে তখন তুমি তাকে আমার নিকট নিয়ে আসবে। লোকটি তাই করলো। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করলে তার কাপড় শরীরের সাথে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হলো। এরপর তাকে রজম করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার নামায পড়ান। ’উমর (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আশ্চর্যান্বিতের স্বরে বললেন: আপনি এর জানাযার নামায পড়াচ্ছেন, অথচ সে ব্যভিচারিণী?! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: সে এমন তাওবা করেছে যা মদীনাবাসীর সত্তরজনকে বন্টন করে দেয়া হলেও তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। তুমি এর চাইতেও কি উৎকৃষ্ট কিছু পেয়েছো যে তার জীবন আল্লাহ্ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য বিলিয়ে দিয়েছে।

(মুসলিম ১৬৯৬; আবূ দাউদ ৪৪৪০; তিরমিযী ১৪৩৫; ইব্নু মাজাহ্ ২৬০৩)

’উমর (রাঃ) তাঁর এক দীর্ঘ খুতবায় বলেন:

إِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا بِالْـحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ، فَكَانَ فِيْمَا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ، قَرَأْنَاهَا، وَوَعَيْنَاهَا، وَعَقَلْنَاهَا، فَرَجَمَ رَسُوْلَ الله ، وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ، فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَّقُوْلَ قَائِلٌ: مَا نَجِدُ الرَّجْمَ فِيْ كِتَابِ اللهِ، فَيَضِلُّوْا بِتَرْكِ فَرِيْضَةٍ أَنْزَلَهَا اللهُ.

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য ধর্ম দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর উপর কুর‘আন অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর উপর যা অবতীর্ণ করেছেন তার মধ্যে রজমের আয়াতও ছিলো। আমরা তা পড়েছি, মুখস্থ করেছি ও বুঝেছি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন এবং আমরাও তাঁর ইন্তেকালের পর রজম করেছি। আশঙ্কা হয় বহু কাল পর কেউ বলবে: আমরা কুর‘আন মাজীদে রজম পাইনি। অতঃপর তারা আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি ফরয কাজ ছেড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে’’।

(বুখারী ৬৮২৯; মুসলিম ১৬৯১; আবূ দাউদ ৪৪১৮)

’উমর (রাঃ) যে আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তা হচ্ছে:

«الشَّيْخُ وَالشَّيْخَةُ إِذَا زَنَيَا، فَارْجُمُوْهُمَا أَلْبَتَّةَ، نَكَالًا مِّنَ اللهِ، وَاللهُ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ»

‘‘বয়স্ক (বিবাহিত) পুরুষ ও মহিলা যখন ব্যভিচার করে তখন তোমরা তাদেরকে সন্দেহাতীতভাবে পাথর মেরে হত্যা করবে। এটি হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তিস্বরূপ এবং আল্লাহ্ তা‘আলা পরাক্রমশালী ও সুকৌশলী’’।

উক্ত আয়াতটির তিলাওয়াত রহিত হয়েছে। তবে উহার বিধান এখনও চালু।

কোন অবিবাহিত ব্যভিচারী কিংবা ব্যভিচারিণী যদি এমন অসুস্থ অথবা দুর্বল হয় যে, তাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে একশ’টি বেত্রাঘাত করা হলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে তা হলে তাকে একশ’টি বেত একত্র করে একবার প্রহার করা হবে।

সা’ঈদ্ বিন্ সা’দ্ বিন্ ’উবা’দাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

كَانَ فِيْ أَبْيَاتِنَا رُوَيْجِلٌ ضَعِيْفٌ، فَخَبُثَ بِأَمَةٍ مِنْ إِمَائِهِمْ، فَذَكَرَ ذَلِكَ سَعِيْدٌ لِرَسُوْلِ اللهِ ، فَقَالَ: اِضْرِبُوْهُ حَدَّهُ، فَقَالُـوْا: يَا رَسُوْلَ اللهِ! إِنَّهُ أَضْعَفُ مِنْ ذَلِكَ، فَقَالَ: خُذُوْا عِثْكَالًا فِيْهِ مِئَةُ شِمْرَاخٍ، ثُمَّ اضْرِبُوْهُ بِهِ ضَرْبَةً وَاحِدَةً، فَفَعَلُوْا.

‘‘আমাদের এলাকায় জনৈক দুর্বল ব্যক্তি বসবাস করতো। হঠাৎ সে জনৈকা বান্দির সাথে ব্যভিচার করে বসে। ব্যাপারটি সা’ঈদ্ (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালে তিনি বললেন: তাকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিয়ে দাও তথা একশ’টি বেত্রাঘাত করো। উপস্থিত সকলে বললো: হে আল্লাহ্’র রাসূল! সে তো তা সহ্য করতে পারবে না। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: একটি খেজুর বিহীন একশ’টি শাখাগুচ্ছ বিশিষ্ট থোকা নিয়ে তাকে তা দিয়ে এক বার মারবে। অতএব তারা তাই করলো’’।

(আহমাদ ৫/২২২; ইব্নু মাজাহ্ ২৬২২)

অমুসলিমকেও ইসলামী বিচারাধীন রজম করা যেতে পারে।

জা’বির বিন্ ‘আব্দুল্লাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

رَجَمَ النَّبِيُّ  رَجُلًا مِنْ أَسْلَمَ، وَرَجُلًا مِنَ الْيَهُوْدِ وَامْرَأَةً.

‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আস্লাম বংশের একজন পুরুষকে এবং একজন ইহুদি পুরুষ ও একজন মহিলাকে রজম করেন’’। (মুসলিম ১৭০১)

ব্যভিচারের কারণে কোন সন্তান জন্ম নিলে এবং ভাগ্যক্রমে সে জীবনে বেঁচে থাকলে তার মায়ের সন্তান রূপেই সে পরিচয় লাভ করবে। বাপের নয়। কারণ, তার কোন বৈধ বাপ নেই। অতএব ব্যভিচারীর পক্ষ থেকে সে কোন মিরাস পাবে না।

আবূ হুরাইরাহ্ ও ‘আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الحَجَرُ.

‘‘সন্তান মহিলারই এবং ব্যভিচারীর জন্য শুধু পাথর তথা রজম’’।

(বুখারী ২০৫৩, ২২১৮, ৬৮১৮; মুসলিম ১৪৫৭, ১৪৫৮; ইব্নু হিববান ৪১০৪; হা’কিম ৬৬৫১; তিরমিযী ১১৫৭; বায়হাক্বী ১৫১০৬; আবূ দাউদ ২২৭৩; ইব্নু মাজাহ্ ২০৩৫, ২০৩৭; আহমাদ ৪১৬, ৪১৭)

‘আব্দুল্লাহ্ বিন্ ‘আমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ عَاهَرَ أَمَةً أَوْ حُرَّةً فَوَلَدُهُ وَلَدُ زِنَا، لَا يَرِثُ وَلَا يُوْرَثُ.

‘‘যে ব্যক্তি কোন বান্দি অথবা স্বাধীন মহিলার সঙ্গে ব্যভিচার করলো তার সন্তান হবে ব্যভিচারের সন্তান। সে মিরাস পাবে না এবং তার মিরাসও কেউ পাবে না’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২৭৯৪)

যে কোন ঈমানদার পবিত্র পুরুষের জন্য কোন ব্যভিচারিণী মেয়েকে বিবাহ করা হারাম। তেমনিভাবে যে কোন ঈমানদার সতী মেয়ের জন্যও কোন ব্যভিচারী পুরুষকে বিবাহ করা হারাম।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«الزَّانِيْ لَا يَنْكِحُ إِلاَّ زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً، وَالزَّانِيَةُ لَا يَنْكِحُهَا إِلاَّ زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ، وَحُرِّمَ ذَلِكَ عَلَى الْـمُؤْمِنِيْنَ»

‘‘একজন ব্যভিচারী পুরুষ আরেকজন ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিকা মেয়েকেই বিবাহ করে এবং একজন ব্যভিচারিণী মেয়েকে আরেকজন ব্যভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিকই বিবাহ করে। মু’মিনদের জন্য তা করা হারাম’’। (নূর : ৩)