আর-রাহীকুল মাখতূম হুনাইন যুদ্ধ (غَزْوَةُ حُنَيْنٍ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
শত্রুদের যাত্রা এবং আওতাস নামক স্থানে শিবির স্থাপন (مُجَرِّبُ الْحُرُوْبِ يُغَلِّطُ رَأي الْقَائِدِ):

মুসলিমগণের মক্কা বিজয় এক আকস্মিক অভিযানের ফলশ্রুতি। যার ফলে আরব গোত্রসমূহ প্রায় হতভম্ব এবং কিংকর্তব্যবিমৃঢ় হয়ে পড়েছিল। তাদের এবং পার্শ্ববর্তী গোত্রসমূহের এতটুকু ক্ষমতা ছিল না যে, তারা এ আকস্মিক অভিযানকে প্রতিহত করতে পারে। এ কারণে কিছু সংখ্যক জেদী অপরিণামদর্শী ও আত্মগর্বী গোত্র ছাড়া আর সব গোত্রই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট আত্মসমর্পণ করেছিল। এই জেদী ও আত্মগর্বী গোত্রগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল হাওয়াযিন এবং সাকাফ গোত্র। এদের সঙ্গে মুযার জোশাম এবং সা’দ বিন বকরের গোত্রসমূহ এবং বনু হেলালের কিছু সংখ্যক লোক। এ সব গোত্রের সম্পর্ক ছিল কাইসে আইলানের সঙ্গে। পরাজয় স্বীকার ক’রে মুসলিমগণের নিকট আত্মসমর্পণ করাকে তারা অত্যন্ত অপমানজনক বলে মনে করছিল। এ কারণে ঐ সকল গোত্র মালিক বিন আওফ নাসরীর নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল যে, তারা মুসলিমগণকে আক্রমণ করবে।

এ সিদ্ধান্তের পর মুসলিমগণের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ ক’রে মালিক বিন আওফের নেতৃত্বে তারা যাত্রা করল। সম্পদাদি, গবাদি, শিশু সন্তানেরাও ছিল তাদের সঙ্গে। সম্মুখ ভাগে অগ্রসর হয়ে তারা আওতাস উপত্যকায় শিবির স্থাপন করল। এটি হুনাইনের নিকটে বনু হাওয়াযিন গোত্রের অঞ্চলভুক্ত একটি উপত্যকা। কিন্তু এ উপত্যকাটি হুনাইন হতে পৃথক। হুনাইন হচ্ছে অন্য একটি উপত্যকা যা যুল মাজায নামক স্থানের সন্নিকটে অবস্থিত। সেখান থেকে আরাফাতের পথ দিয়ে মক্কার দূরত্ব দশ মাইলেরও বেশী।[1]

[1] ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড ২৭ ও ৪২ পৃঃ।