উমরাহ হতে হালাল হওয়ার জন্য কুরবানী এবং মাথার চুল কর্তন (النَّحْرُ وَالْحَلْقُ لِلْحِلِّ عَنْ الْعُمْرَةِ):

সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে নিস্কৃতি লাভের পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিজ নিজ পশু কুরবানী করার জন্য সাহাবীগণকে পরামর্শ দিলেন। কিন্তু আল্লাহর শপথ! কেউই আপন স্থান ত্যাগ করলেন না। মনে হল যেন এ কথা তাঁদের কানেই যায় নি।

নাবী কারীম (ﷺ) তিন বার তাঁর উক্তির পুনরাবৃত্তি করলেন। কিন্তু কেউই স্থান ত্যাগ করলেন না। তখন তিনি উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর নিকট গেলেন এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলেন। উম্মুল মু’মিনীন বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি চান যে, সকলে নিজ নিজ পশু কুরবানী করে মস্তক মুন্ডন করুক তাহলে আর কাউকেও কিছু না বলে নিজ পশু যবহ করুন এবং হাজ্জামকে (নাপিতকে) ডাকিয়ে নিয়ে নিজ মস্তক মুন্ডন করে নিন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উম্মুল মু’মিনীনের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করলেন, অর্থাৎ নিজ হাদয়ের পশু যবেহ করলেন এবং হাজ্জামকে ডাকিয়ে নিয়ে নিজ মস্তক মুন্ডন করিয়ে নিলেন।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে কুরবানী ও মস্তক মুন্ডন করতে দেখে অন্যেরা সকলেই নিজ নিজ পশু যবেহ করলেন এবং একে অন্যের সাহায্য নিয়ে মস্তক মুন্ডন করে নিলেন। সমগ্র পরিবেশটা তখন গাম্ভীর্যপূর্ণ এবং সকলেই এতই চিন্তাযুক্ত ছিলেন যে, মনে হচ্ছিল অত্যধিক চিন্তিত থাকার কারণে পরস্পর পরস্পরকে হত্যা করে ফেলবে। সে সময় সাত সাত জনের জন্য একটি গরু এবং একটি উট যবেহ করা হয়।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবূ জাহলের একটি উট যবেহ করেন যার নাকে রূপোর তৈরি একটি নোলক বালি বা বৃত্ত ছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল, এর ফলে কুরাইশ মুশরিকগণ যেন মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে। অতঃপর রাসূলে কারীম (ﷺ) মস্তক মুন্ডনকারীদের জন্য তিনবার ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কাঁচি দ্বারা চুল কর্তনকারীদের জন্য একবার দু‘আ করেন। এ সফরে আল্লাহ তা‘আলা কা‘ব বিন উজরাহ সম্পর্কে এ হুকুম নাযিল করেন যে, যে ব্যক্তি কষ্টের কারণে নিজ মস্তক মুন্ডন করবে (ইহরামের অবস্থায়) সে যেন রোযা পালন করে, অথবা সদকা করে কিংবা কোন পশু যবেহ করে তা উৎসর্গ করে।