নাবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর বাল্য, কৈশোর এবং প্রথম যৌবনে পেশাভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কোন কাজ-কর্মের কথা পাওয়া যায় না। তবে নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায় যে, বনু সা‘দ গোত্রে দুধমা’র গৃহে থাকাবস্থায় অন্যান্য বালকদের সঙ্গে ছাগল চরানোর উদ্দ্যেশে মাঠে গমন করতেন।[1] মক্কাতেও কয়েক কীরাত অর্থের বিনিময়ে তিনি ছাগল চরাতেন।[2]

অধিকন্তু, কৈশোরে চাচা আবূ ত্বালীবের সঙ্গে বাণিজ্য উপলক্ষে তিনি সিরিয়া গমন করেছিলেন। বর্ণিত আছে যে, তিনি (ﷺ) সায়িব বিন আবূ মাখযূমীর সাথে ব্যবসা করতেন এবং তিনি একজন ভাল অংশীদার ছিলেন। না তোষামোদী ছিলেন, না ঝগড়াটে ছিলেন। তিনি যখন মক্কা বিজয়ের সময় আগমন করেন তখন তাকে সাদর সম্ভাষন জানান এবং বললেন, হে আমার ভাই এবং ব্যবসায়ের অংশীদার।

তারপর যখন তিনি পঁচিশ বছর বয়সে পদার্পণ করেন তখন খাদীজাহ (রাঃ)-এর সম্পদ নিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে গমন করেন। ইবনে ইসহাক্ব হতে বর্ণিত আছে যে, খাদীজাহ (রাঃ) বিনতে খুওয়াইলিদ এক সম্ভ্রান্ত সম্পদশালী ও ব্যবসায়ী মহিলা ছিলেন। ব্যবসায়ে অংশীদারিত্ব এবং প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী লভ্যাংশের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তিনি ব্যবসায়ীগণের নিকট অর্থলগ্নী করতেন। পুরো কুরাইশ গোত্রই জীবন জীবিকার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে লিপ্ত থাকতেন। যখন খাদীজাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সত্যবাদিতা, উত্তম চরিত্র, সদাচার এবং আমানত হেফাজতের নিশ্চয়তা সম্পর্কে অবগত হলেন তখন তিনি মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর নিকট এক প্রস্তাব পেশ করলেন যে, তিনি তাঁর অর্থ নিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে তাঁর দাস মায়সারার সঙ্গে শাম দেশে গমন করতে পারেন। তিনি স্বীকৃতিও প্রদান করেন যে, অন্যান্য ব্যবসায়ীগণকে যে হারে লভ্যাংশ বা মুনাফা প্রদান করা হয় তাঁকে তার চাইতে অধিকমাত্রায় মুনাফা প্রদান করা হবে। মুহাম্মাদ (ﷺ) এ প্রস্তাব গ্রহণ করলেন এবং তার অর্থ সম্পদ নিয়ে দাস মায়সারার সঙ্গে শাম দেশে গমন করলেন।[3]

[1] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১৬৬ পৃঃ।

[2] সহীহুল বুখারী, আল এজারত্ব বাবু রাইল গানামে আলা কাবারিতা ১ম খন্ড ৩০১ পৃঃ।

[3] ইবনে হিশাম ১ম খন্ড ১৮৭-১৮৮ পৃঃ।