نازل এর আভিধানিক অর্থ নিম্নগামী ও অবতরণকারী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রাবির দূরত্ব অধিক হলে নিম্নগামী হয়, তাই এ প্রকার হাদিসকে ‘নাযিল’ বলা হয়।

‘নাযিল’ এর পারিভাষিক সংজ্ঞা প্রসঙ্গে লেখক রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন: “আর ‘আলি সনদের বিপরীত ঐ সনদ যা নিম্নগামী”।

নিচু সনদের প্রতি মুহাদ্দিসদের অনীহা সর্বদা, তবে উঁচু সনদ অপেক্ষা ‘নিচু সনদে আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকলে নিচু সনদই উঁচু। উঁচু সনদে দুর্বল রাবি থাকলে তার কোনো ফায়দা নেই। এমতাবস্থায় মূর্খ ব্যতীত কেউ নিচু সনদে অনীহা প্রকাশ করে না।

নাযেলের প্রকারসমূহ: আমরা উপরে আলি সনদের যে প্রকারগুলো উল্লেখ করেছি, তার বিপরীত সবগুলো প্রকার নাযেল। তাই পৃথকভাবে তার আলোচনা করার প্রয়োজন নেই।

জ্ঞাতব্য: আমরা এখানে ‘আলি ও নাযিল সম্পর্কে নাতি-দীর্ঘ আলোচনা করেছি, যার উদ্দেশ্য পাঠকদের এ বিষয়ে পরিপক্ব করে তোলা, যেন তারা বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখিত উসুলে হাদিসের পরিভাষাগুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে সক্ষম হন। অন্যথায় এ যুগে ‘আলি সনদের তেমন গুরুত্ব নেই। কেউ তার প্রতি গুরুত্বারোপ করলেও তার সাথে সহি ও দ্বা‘ঈফের কোনো সম্পর্ক নেই। অধিকন্তু উঁচু সনদের কতক প্রকার বহু পূর্বে নিঃশেষ হয়ে গেছে।

উঁচু ও নিচু আপেক্ষিক বিষয়। যদি বলা হয় এ সনদ উঁচু, তার অর্থ নিচু সনদ অপেক্ষা উঁচু; যদি বলা হয় এ সনদ নিচু, তার অর্থ উঁচু সনদ অপেক্ষা নিচু। এ ছাড়া সনদ উঁচু কিংবা নিচু হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। কখনো যুগের বিবেচনায় সনদ উঁচু বা নিচু হয়। এক যুগের বিবেচনায় এক সনদ উঁচু, কিন্তু অপর যুগের বিবেচনায় নিচু। হাফেয ইব্‌ন হাজার রাহিমাহুল্লাহ্ যদি দশজন রাবির পরম্পরায় একটি হাদিস বর্ণনা করেন, তার বিবেচনায় তা উঁচু সনদ। এ হাদিস ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ্ যদি সাত অথবা আটজন রাবির পরম্পরায় বর্ণনা করেন, তার বিবেচনায় তা নাযিল।