আল্লাহ তা‘আলা নবীদের মর্যাদায় তারতম্য করেছেন। কেউ কারো থেকে শ্রেষ্ঠ। শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল। শ্রেষ্ঠত্বের বিবেচনায় দ্বিতীয় ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

«فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى، قَدِ اتَّخَذَنِي خَلِيلًا، كَمَا اتَّخَذَ إِبْرَاهِيمَ خَلِيلًا».

“নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে খলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন, যেমন তিনি খলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন ইবরাহীমকে”।[1] অতঃপর মর্যাদার বিবেচনায় তৃতীয় স্থানে আছেন মূসা ‘আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿ وَكَلَّمَ ٱللَّهُ مُوسَىٰ تَكۡلِيمٗا ١٦٤ ﴾ [النساء : ١٦٤]

“আর আল্লাহ মূসার সাথে সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছেন”।[2] দ্বিতীয় দলিল তার উম্মতের সংখ্যা অধিক হবে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

«وَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الْأُفُقَ، فَرَجَوْتُ أَنْ تَكُونَ أُمَّتِي، فَقِيلَ هَذَا مُوسَى وَقَوْمُهُ».

“আমি বিরাট একদল দেখলাম, যা দিগন্ত আড়াল করে রেখেছে। আমি আশা করেছি দলটি আমার উম্মত হোক, আমাকে বলা হল: এ হচ্ছে মূসা ও তার কওম”।[3] অপর হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لَا تُخَيِّرُونِي عَلَى مُوسَى، فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ، فَإِذَا مُوسَى بَاطِشٌ بِجَانِبِ الْعَرْشِ، فَلَا أَدْرِي، أَكَانَ فِيمَنْ صَعِقَ، فَأَفَاقَ قَبْلِي، أَمْ كَانَ مِمَّنْ اسْتَثْنَى اللَّهُ ؟».

“তোমরা আমাকে মূসার উপর প্রাধান্য দিয়ো না, কারণ মানুষেরা সংজ্ঞাহীন হবে, আমি সর্বপ্রথম সংজ্ঞা ফিরে পাব, তখন দেখব মূসা আরশের পার্শ্ব ধরে আছেন। আমি জানি না, তিনি সংজ্ঞাহীনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন আমার পূর্বে জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন, না আল্লাহ যাদেরকে সংজ্ঞামুক্ত রেখেছেন তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন”?[4] ইসরা ও মেরাজের হাদিসে তার মর্তবা ষষ্ঠ আসমানে বিধৃত হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় মর্যাদার বিবেচনায় মূসা ‘আলাইহিস সালাম তৃতীয় স্থানে।

চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছেন ঈসা ও নূহ ‘আলাইহিমুস সালাম। তাদের দু’জনের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণে আলেমগণ দ্বিমত করেছেন। কেউ বলেন ঈসা ‘আলাইহিস সালাম শ্রেষ্ঠ, কেউ বলেন নূহ ‘আলাইহিস সালাম শ্রেষ্ঠ। কেউ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণে নীরবতা অবলম্বন করেন। উল্লেখিত পাঁচজন সবাই শ্রেষ্ঠ রাসূল। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿فَٱصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ أُوْلُواْ ٱلۡعَزۡمِ مِنَ ٱلرُّسُلِ ٣٥﴾ [الاحقاف: ٣٥]

“অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের রাসূলগণ”।[5] অন্যত্র ইরশাদ করেন:

﴿وَإِذۡ أَخَذۡنَا مِنَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ مِيثَٰقَهُمۡ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٖ وَإِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۖ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّيثَٰقًا غَلِيظٗا ٧﴾ [الاحزاب : ٧]

“আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহিম, মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম”।[6]

এখানে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বাগ্রে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ لَخَاتَمُ النَّبِيِّينَ، وَإِنَّ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَام لَمُنْجَدِلٌ فِي طِينَتِهِ».

“আমি আল্লাহর বান্দা, নিশ্চয় সর্বশেষ নবী, তখন আদম ‘আলাইহিস সালাম ছিল মাটিতে মিশ্রিত”।[7]


[1] মুসলিম: (৮৩২)

[2] সূরা নিসা: (১৬৪)

[3] বুখারি: (৩১৮১)

[4] মুসলিম: (৪৩৮৪)

[5] সূরা আহযাব: (৩৫)

[6] সূরা আহযাব: (৭)

[7] আহমদ: (১৬৮১৭)