নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর সাহাবিগণ শিক্ষকরূপে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েন। তখন দীন প্রচার ও দীনকে অবিকৃত রাখা উভয় দায়িত্ব বর্তায় তাদের উপর, কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জানার সুযোগ নেই। তাই সাহাবিগণ হাদিসের শুদ্ধতা রক্ষার স্বার্থে কতক নীতির অনুসরণ করেন, যেমন তারা হাদিস বর্ণনা কমিয়ে দেন, বর্ণনার পূর্বে শুদ্ধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন ও অপরকে শুনিয়ে যাচাই করেন, নিম্নে তার কতক নমুনা পেশ করছি:

১. সাহাবিগণ শুদ্ধতা রক্ষার স্বার্থে হাদিস বর্ণনা কমিয়ে দেন:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর সাহাবিগণ হাদিস বর্ণনার সংখ্যা কমিয়ে দেন, যেন তাতে ভুল ও মিথ্যা প্রবেশ না করে। এক সাহাবি হাদিসের খিদমত আঞ্জাম দিতে সক্ষম হলে অপর সাহাবি চুপ থাকেন। কম বর্ণনা হাদিস স্মরণ রাখার একটি পদ্ধতি। অনেক সাহাবি বার্ধক্য জনিত স্মরণ শক্তি হ্রাস পেয়েছে সন্দেহে হাদিস বর্ণনা বন্ধ রাখেন। মাস ও বছর পার হত, তবু কতক সাহাবি বলতেন না: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন’। ভুল থেকে সুরক্ষার জন্য তারা এরূপ করতেন। কুরআন ত্যাগ করে মানুষ যেন হাদিসের প্রতি বেশী মনোযোগী না হয়, সে জন্যও তারা হাদিস বর্ণনা কম করেন।ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কোনো দেশে মুজাহিদ বা শিক্ষকরূপে কাউকে প্রেরণ করার সময় বলতেন: “তোমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কম বর্ণনা কর, এ ক্ষেত্রে আমি তোমাদের অংশীদার”।[1] তার উদ্দেশ্য হাদিস গোপন করা নয়, বরং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কোনো বিষয়কে সম্পৃক্ত করার পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করা। তাই অধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবির সংখ্যা খুব কম।

>
[1] তাবরানি ফিল আওসাত: (২/৩২৬), হাদিস নং: (২১১৭), হাকেম: (১/১০২) হাদিসটি সহি বলেছেন, আর ইমাম হাবি তার সমর্থন করেছেন।