হাদীসের নামে জালিয়াতি মৃত্যু, জানাযা, দুআ, যিকর ইত্যাদি ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৭. শুক্রবারে কবর যিয়ারতের বিশেষ ফযীলত

কবর যিয়ারত যে কোনো দিনে যে কোনো সময়ে করা যেতে পারে। কোনো বিশেষ দিনে বা বিশেষ সময়ে কবর যিয়ারতের জন্য বিশেষ ফযীলতের বিষয়ে কোনো সহীহ হাদীস নেই। এ বিষয়ে একটি প্রচলিত হাদীস:

مَنْ زَارَ قَبْرَ أَبَوَيْهِ أَوْ أَحَدِهِمَا كُلَّ جُمْعَةٍ، غُفِرَ لَهُ وَكُتِبَ بَارًّا

‘‘যদি কোনো ব্যক্তি প্রত্যেক শুক্রবারে তার পিতামাতার বা একজনের কবর যিয়ারত করে তবে তার পাপ ক্ষমা করা হবে এবং তাকে পিতামাতার প্রতি দায়িত্ব পালনকারী হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হবে।’’

হাদীসটি ইমাম তাবারানী ও অন্যান্য মুহাদ্দিস সংকলন করেছেন। তাঁরা হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু নু’মান ইবনু আব্দুর রাহমান-এর সূত্রে সংকলন করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু নু’মান ইয়াহইয়া ইবনুল আলা আল-বাজালী থেকে, তিনি আব্দুল কারীম ইবনু আবীল মাখারিক থেকে, তিনি মুজাহিদ থেকে, তিনি আবূ হুরাইরা (রা) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনু নু’মান অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। তার উস্তাদ হিসেবে উল্লিখিত ইয়াহইয়া ইবনুল আলা আল-বাজালী পরিত্যক্ত ও মিথ্যায় অভিযুক্ত রাবী। ইমাম আহমাদ, ওকী প্রমুখ মুহাদ্দিস তাকে স্পষ্টভাবে মিথ্যাবাদী ও জালিয়াত বলে অভিহিত করেছেন। তার উস্তাদ হিসেবে উল্লিখিত ‘আব্দুল কারীম’ও অত্যন্ত দুর্বল রাবী হিসেবে পরিচিত। এভাবে আমরা দেখছি যে, হাদীসটির সনদ অত্যন্ত দুর্বল। বিশেষত ইয়াহইয়া নামক এ মিথ্যাবাদী রাবীর কারণে হাদীসটি জাল বলে গণ্য হয়।[1]

[1] তাবারানী, আল-আউসাত ৬/১৭৫; আস-সগীর ২/১৬০; হাকিম তিরমিযী, নাওয়াদিরুল উসূল ১/১২৬; দাইলামী, আল-ফিরদাউস ৩/৪৯৫; বাইহাকী, শু‘আবুল ঈমান ৬/২০১; হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৫৯; সুয়ূতী, আল-লাআলী ২/৪৪০; ইবনু আর্রাক, তানযীহ ২/৩৭৩; শাওকানী, আল-ফাওয়াইদ ১/৩৪৫।