নিয়্যাত নামে ‘নাওয়াইতু আন...’ বলে যা কিছু প্রচলিত আছে সবই পরবর্তী যুগের আলিমদের বানানো কথা। এগুলোকে হাদীস মনে করলে বা রাসূলুল্লাহ () এরূপ নিয়্যাত পাঠ করেছেন বা এভাবে নিয়্যত করতে বলেছেন বলে মনে করলে বা দাবি করলে তা ভিত্তিহীন মিথ্যা দাবি হবে।

নিয়্যাত অর্থ উদ্দেশ্য বা ইচ্ছা (inteneion)। উদ্দেশ্যের উপরেই ইবাদতের সাওয়াব নির্ভর করে। নিয়্যাত মানুষের অন্তরের আভ্যন্তরীণ সংকল্প বা ইচ্ছা, যা মানুষকে উক্ত কর্মে উদ্বুদ্ধ বা অনুপ্রাণিত করেছে। নিয়্যাত করতে হয়, বলতে বা পড়তে হয় না। রাসূলুল্লাহ কখনো জীবনে একটিবারের জন্যও ওযু, গোসল, নামায, রোযা ইত্যাদি কোনো ইবাদতের জন্য কোনো প্রকার নিয়্যাত মুখে বলেন নি। তাঁর সাহাবীগণ, তাবিয়ীগণ, ইমাম আবু হানীফা (রহ.)-সহ চার ইমাম বা অন্য কোনো ইমাম ও ফকীহ কখনো কোনো ইবাদতের নিয়্যাত মুখে বলেন নি বা বলতে কাউকে নির্দেশ দেন নি।

পরবর্তী যুগের কোনো কোনো আলিম এগুলো বানিয়েছেন। তাঁরাও বলেছেন যে, মনের মধ্যে উপস্থিত নিয়্যাতই মূল, তবে এগুলো মুখে উচ্চারণ করলে মনের নিয়্যাত একটু দৃঢ় হয়। এজন্য এগুলো বলা ভালো। তাঁদের এ ভালোকে অনেকেই স্বীকার করেন নি। মুজাদ্দিদে আলফে সানী ওযু, নামায, রোযা ইত্যাদি যে কোনো ইবাদতের জন্য মুখে নিয়্যাত করাকে খারাপ বিদ‘আত হিসাবে নিন্দা করেছেন এবং কঠোরভাবে এর বিরোধিতা করেছেন। আমি ‘‘এহ্ইয়াউস সুনান’’ গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।[1]

[1] এহ্ইয়াউস সুনান: সুন্নাতের পুনরুজ্জীবন ও বিদআতের বিসর্জন, পৃ. ১৩৮-১৫৭।