হাদীসের নামে জালিয়াতি বেলায়াত, আওলিয়া ও ইলম বিষয়ক ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

আমাদের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি বাক্য:

إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللهِ لاَ يَمُوْتُوْنَ، بَلْ يَنْتَقِلُوْنَ مِنْ دَارِ الْفَنَاءِ إِلَى دَارِ الْبَقَاءِ

প্রচলিত একটি পুস্তকে এ বাক্যটির অনুবাদ লেখা হয়েছে: ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন মৃত্যু নেই বরং তাঁরা স্থানান্তরিত হয় ধ্বংসশীল ইহ জগৎ হতে স্থায়ী পরজগতে’’-আল হাদীস।[1]

এখানে উল্লেখ্য যে, আব্দুল কাদির জীলানীর (রাহ) নামে প্রচলিত ‘সিররুল আসরার’ পুস্তকে এ হাদীসটি অন্যভাবে উল্লেখ করা হয়েছে:

اَلْمُؤْمِنُوْنَ لاَ يَمُوْتُوْنَ، بَلْ يَنْتَقِلُوْنَ مِنْ دَارِ الْفَنَاءِ إِلَى دَارِ الْبَقَاءِ

‘‘মুমিনগণের কোন মৃত্যু নেই বরং তাঁরা স্থানান্তরিত হয় ধ্বংসশীল ইহজগৎ হতে স্থায়ী পরজগতে।’’

দুটি কথাই রাসূলুল্লাহ ()-এর নামে জঘন্য মিথ্যা, বানোয়াট ও জাল কথা। কোনো সহীহ, যয়ীফ বা বানোয়াট সনদেও তা বর্ণিত হয় নি।

আমরা জানি যে, মুমিন-কাফির প্রতিটি মানুষই মৃত্যুর মাধ্যমে ‘‘ধ্বংসশীল ইহ জগৎ থেকে স্থায়ী পরজগতে স্থানান্তরিত হয়।’’ এখানে কারো কোনো বিশেষত্ব নেই। কুরআন ও হাদীস দ্বারা শহীদগণের পারলৌকিক বিশেষ জীবন প্রমাণিত। সহীহ হাদীসের আলোকে নবীগণের পারলৌকিক বিশেষ জীবন প্রমাণিত। এছাড়া অন্য কোনো নেককার মানুষের পারলৌকিক বিশেষ কোনো জীবন প্রমাণিত নয়। আলিমগণ, ওলীগণ, মুআযযিনগণ... ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার নেককার মানুষের মৃত্যু পরবর্তী ‘হায়াত’ বা জীবন সম্পর্কে যা কিছু বলা হয় সবই সনদ বিহীন, ভিত্তিহীন কথা।[2]

[1] খাজা নিযামুদ্দিন আউলিয়া (রাহ), রাহাতুল মুহিববীন, শেষ প্রচ্ছদ।

[2] দরবেশ হূত, আসনাল মাতালিব, পৃ. ২৯৫-২৯৬; দাইলামী, আল-ফিরদাউস ৩/৩৫।