৫. ৬. আঞ্চলিক, পেশাগত বা জাতিগত বৈরিতা

বিভিন্ন বংশ, জাতি, দেশ বা শহরের মানুষেরা নিজেদের প্রাধান্য ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক সময় জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। আরব জাতি ও আরবী ভাষা এবং পারসিক জাতি ও ফার্সী ভাষার পক্ষে ও বিপক্ষে হাদীস জালিয়াতি করা হয়েছে। বিভিন্ন বর্ণের বা পেশার পক্ষে বা বিপক্ষে হাদীস বানানো হয়েছে। এ সকল বানোয়াট কথার মধ্যে রয়েছে: ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ভাষা হলো ফারসী ভাষা।’ ‘আল্লাহ যখন ক্রোধান্বিত হন তখন আরবীতে ওহী নাযিল করেন। আর যখন তিনি সন্তুষ্ট থাকেন তখন ফার্সী ভাষায় ওহী নাযিল করেন।’ ‘আরশের আশেপাশে যে সকল ফিরিশতা রয়েছেন তারা ফার্সী ভাষায় কথা বলেন।’ অনুরূপভাবে তাঁতীদের বিরুদ্ধে, স্বর্ণকারদের বিরুদ্ধে ও অন্যান্য পেশার বিরুদ্ধে কুৎসা ও নিন্দা মূলক হাদীস তৈরি করা হয়েছে পেশাগত হিংসাহিংসির কারণে।

বিভিন্ন শহর, দেশ বা জনপদের ফযীলতে বা নিন্দায় হাদীস বানানো হয়েছে। বলতে গেলে তৃতীয় হিজরী শতকের পরিচিত প্রায় সকল শহর ও দেশের প্রশংসায় বা নিন্দায় হাদীস বানানো হয়েছে। মক্কা, মদীনা ইত্যাদি যে সকল শহরের ফযীলতে সহীহ হাদীস রয়েছে সেগুলোর জন্যও অনেক ‘চিত্তাকর্ষক’ জাল হাদীস বানানো হয়েছে।[1]

[1] বিস্তারিত দেখুন: ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূআত ১/৩৫৭-৩৭৩, ২/১৪৭-১৬১; ফাল্লাতা, আল-ওয়াদউ ১/২৬০-২৬৩।