ব্যাংকের সুদ কি হালাল সূচি ও বিবরন শাইখ মুশ্তাক আহমাদ কারীমী ১ টি

মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগ-এর শাখা সংস্থা ইসলামিক ফিক্হ একাডেমী সউদী আরবের উচ্চপদস্থ উলামা বোর্ডের বীমা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে।

উক্ত বোর্ড ৪/৪/১৩৯৭ হিঃ তে প্রস্তাবনামা (৫১নং) পাস করে। যাতে বাণিজ্যিক বীমাকে অবৈধ বলা হয়েছে। আর সমবায় বীমাকে নিম্নোক্ত দলীলাদির ভিত্তিতে বৈধ বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে।

১- সমবায় বীমা অনুদানমূলক চুক্তির পর্যায়ভুক্ত; যার লক্ষ্য হল বিপদের সময় কেবল পরস্পরকে সাহায্য করা এবং দুর্ঘটনার সময় দায়িত্বশীলতার বোঝা বহনে অপরের সাথে অংশ গ্রহণ করা। আর তা এইরূপে যে, কতিপয় লোক মিলে কিছু কিছু নগদ টাকা চাঁদাস্বরূপ দিয়ে অংশ নেবে। যাতে সম্ভাব্য দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সময়ে এ অর্থ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং সমবায় বীমা প্রতিষ্ঠানের সদস্যদলের উদ্দেশ্য বাণিজ্য অথবা অপরের অর্থের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন হয় না। এ দলের উদ্দেশ্য থাকে, কেবলমাত্র দুর্ঘটনা ও বিপদের ভারকে আপোসের মধ্যে ভাগাভাগি করে বহন করা এবং অপরের ক্ষতিপূরণে সাহায্য করা।

২- সমবায় বীমা (নিছক বেশী নেওয়ার সূদ ও সময় দেওয়ার বিনিময়ে ঋণের সূদ) উভয় প্রকার সূদ থেকেই পবিত্র। অতএব এতে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের বীমা-চুক্তি কোন সূদী চুক্তি নয়। আর তারা তাদের কিস্তীতে জমা করা টাকাকে সূদী কারবারেও খাটায় না।

৩- সমবায় বীমাতে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের উপার্জিতব্য মুনাফা অনির্দিষ্ট ও অজানা থাকার কারণে এ চুক্তির কোন ক্ষতি হয় না। কারণ, এরা সকলে সহায়তা ও অনুদানে অংশগ্রহণকারী। সুতরাং এর মাঝে না কোন ক্ষতির ঝুঁকি আছে, আর না কোন ধোঁকাবাজী ও জুয়াবাজী। পক্ষান্তরে বাণিজ্যিক বীমাতে এ সবকিছুই বিদ্যমান। কারণ এ বীমাতে যে চুক্তি হয় তা হল নিছক টাকার বিনিময়ে টাকা দেওয়া-নেওয়ার বাণিজ্যিক চুক্তি।

৪- সমবায় বীমার সদস্যদের কিস্তীতে জমা করা টাকা নিয়ে তাদের একটি গ্রুপ বা তাদের কোন প্রতিনিধি স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে অথবা কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ব্যবসা করে পুঁজি বৃদ্ধি করা হয়। আর তাতেও সেই উদ্দেশ্যই থাকে, যে উদ্দেশ্যে সমবায় বীমা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

উক্ত সিদ্ধান্তনামায় স্বাক্ষরকারী হলেন নিম্নলিখিত উচ্চ পদস্থ উলামায়ে কেরাম ঃ

১- মুহাম্মদ আলী হারাকান, জেনারেল সেক্রেটারী, ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগ।

২- আব্দুল্লাহ বিন হুমাইদ, উচ্চ বিচারবিভাগীয় পরিষদ্পাল, সউদী আরব।

৩- আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায, প্রধান, ইলমী গবেষণা, ফতোয়া, দাওয়াত এবং পথনির্দেশনা বিভাগ, সউদী আরব।

৪- মুহাম্মদ মাহমূদ সাওয়াফ, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

৫- সালেহ বিন উসাইমীন, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

৬- মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ সুবাইয়িল, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

৭- মুহাম্মদ রশীদ রাববানী মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

৮- মুসতাফা যারকা, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

৯- মুহাম্মদ রশীদী, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

১০- আবুবকর জূমী, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।

১১- আব্দুল কুদ্দূস হাশেমী নদবী, মেম্বর, ফিক্হ একাডেমী।[1]

[1] (দিরাসাতুন শারইয়্যাহ ৪৭৭-৬০৬ পৃষ্ঠা, মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ২৬/৩৪১-৩৪৩)