যে ব্যক্তি রমাযান মাস প্রবেশ (চাঁদ) হওয়ার কথা ফজরের পর দিনের কোন অংশে জানতে পারে তার উচিৎ, (আগে কিছু খেয়ে থাকলেও) বাকী দিন পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। কারণ, সে দিন হল রমাযানের পহেলা তারীখ। আর রমাযানের কোন দিনে কোন গৃহবাসী (অমুসাফির) সুস্থ মানুষের জন্য রোযা ভঙ্গকারী কোন জিনিস ব্যবহার করা বৈধ নয়।

কিন্তু তাকে কি ঐ দিনটি কাযা করতে হবে? এ ব্যাপারে উলামাদের মাঝে মতভেদ আছে। অধিকাংশ উলামা মনে করেন যে, তাকে ঐ দিনটি কাযা করতে হবে। কারণ, সে (পানাহার করেছে, তা না করলেও) (ফজরের আগে রাত্রি বা) দিনের শুরু থেকে রোযার নিয়ত করেনি। বরং দিনের কিছু অংশ তার বিনা নিয়তে অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর নিয়ত ছাড়া কিছু শুদ্ধ হয় না। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক মানুষের তাই প্রাপ্য হয়, যার সে নিয়ত করে থাকে।’’[1]

তিনি আরো বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি ফজরের পূর্বে রাত্রি থেকে নিয়ত না করে থাকে, তার রোযা হয় না।’’[2]

বলা বাহুল্য, এখানে রোযা বলতে ফরয রোযাকে বুঝানো হয়েছে। কারণ, নফল রোযার নিয়ত দিনের বেলায় করলেও হয়ে যায়। তবে শর্ত হল, ইতিপূর্বে সে যেন রোযা নষ্টকারী কোন জিনিস ব্যবহার না করে থাকে। (এ কথা নফল রোযার অধ্যায়ে বলা হবে ইন শাআল্লাহ।)

পক্ষান্তরে কিছু উলামা মনে করেন যে, ঐ দিন কাযা করা জরুরী নয়। কারণ, (যদি সে কোন রোযা নষ্টকারী জিনিস ব্যবহার করেই ফেলেছে, তাহলে) সে তো না জেনেই করেছে। আর যে না জেনে কিছু করে, তার না জানাটা একটা গ্রহণযোগ্য ওজর।[3]

তবুও বলা যায় যে, কাযা করে নেওয়াটাই পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এবং দায়মুক্ত হওয়ার শ্রেষ্ঠ পথ। যেহেতু মানুষের একটি দিন কাযা করে নেওয়া এবং নিঃসন্দেহে নিজের দায়িত্ব পালন করে নেওয়া সন্দেহে পড়া থেকে উত্তম। আর মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তো বলেছেনই, ‘‘যে জিনিস তোমাকে সন্দেহে ফেলে সে জিনিসকে বর্জন করে তুমি সেই জিনিস গ্রহণ কর, যা তোমাকে সন্দেহে ফেলে না।’’[4] একটাই তো দিন; যা কাযা করা অতি সহজ এবং কোন কষ্ট নেই তাতে। বিশেষ করে তাতে রয়েছে সন্দেহের নিরসন, মনের শান্তি এবং হৃদয়ের সান্ত্বনা।[5]

[1] (বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭নং)

[2] (নাসাঈ, দারাকুত্বনী, সুনান, বাইহাকী, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৯১৪, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৬৫৩৪, ৬৫৩৫নং)

[3] (যামাঃ ২/৭৪, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৬/২৫১)

[4] (আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে হিববান, সহীহ, ত্বাবারানী, মু’জাম, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৩৩৭৭-৩৩৭৮নং)

[5] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৩৪৩, সামানিয়া ওয়া আরবাঊন সুআলান ফিস্-সিয়াম ৩৭পৃঃ, ইবনে বায, ফাসিঃ মুসনিদ ১৯পৃঃ, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ৩০/১১৬)