রমাযানের রোযা আল্লাহর কিতাব, তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর হাদীস ও মুসলিম উম্মাহর ইজমা’ (সর্বসম্মতি) মতে চিরকালের জন্য ফরয।

কুরআন কারীমে মহান আল্লাহ বলেন,

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ- أَيَّاماً مَعْدُودَاتٍ﴾

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হল, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর ফরয করা হয়েছিল। যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার। তা নির্ধারিত কয়েক দিন--।’’(কুরআনুল কারীম ২/১৮৩-১৮৪)

তিনি আরো বলেন,

﴿شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدىً لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ﴾

‘‘রমাযান মাস; যে মাসে মানুষের দিশারী এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোযা রাখে।’ (কুরআনুল কারীম ২/১৮৫)

হাদীসে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘ইসলামের ভিত্তি হল ৫টি কর্ম; আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্যিকারে উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) তাঁর রসূল (দূত) -এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া, নামায কায়েম করা, যাকাৎ প্রদান করা, রমাযানের রোযা রাখা এবং সামর্থ্য থাকলে কা’বাগৃহের হজ্জ করা।’’[1]

তালহা বিন উবাইদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমার উপর আল্লাহ কি কি রোযা ফরয করেছেন তা আমাকে বলে দিন।’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘রমাযান মাসের রোযা।’’ লোকটি বলল, ‘এ ছাড়া অন্য কিছু কি আমার কর্তব্য আছে?’ তিনি বললেন, ‘‘না, তবে যদি তুমি নফল রোযা রাখ, তাহলে ভিন্ন কথা।’’[2]

আর মুসলিম উম্মাহ এ বিষয়ে একমত যে, রমাযানের রোযা ফরয। তা ইসলামের অন্যতম রুকন, খুঁটি বা ভিত্তি। এ ফরয হওয়ার কথা সহজ উপায়ে সকলের জানা। সুতরাং যে কেউ তা অস্বীকার করবে সে মুরতাদ্দ্ কাফের। তাকে তওবা করার জন্য আহবান করা হবে। তাতে সে তওবা করলে এবং রোযা ফরয বলে মেনে নিলে উত্তম। নচেৎ, (সরকার) তাকে কাফের অবস্থায় হত্যা করবে।[3]

[1] (বুখারী ৮, মুসলিম ১৬নং, তিরমিযী, নাসাঈ)

[2] (বুখারী, ১৮৯১, মুসলিম)

[3] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৩৮৩, ফুসূল ৪-৫পৃঃ)