[প্রশ্ন নং ১০] আমি বিভিন্ন লোকের টাকা পয়সা চুরি করেছি, এখন আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। যাদের টাকা পয়সা চুরি করেছি তাদের ঠিকানাও জানি না? অন্য আরেকজন বলে, আমি এক বিদেশী কোম্পানীর কিছু টাকা পয়সা মেরে দিয়েছি। তাদের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে এবং তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে? তৃতীয় আরেকজন বলে, আমি এক দোকান থেকে কিছু মালপত্র চুরি করেছিলাম। বর্তমানে সে দোকানের স্থান পরিবর্তন হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। নতুন ঠিকানাও জানি না!

উত্তর: আপনি যথা সম্ভব তাদের ঠিকানা তালাশ করুন। যদি পেয়ে যান তাহলে তাদের প্রাপ্য ফেরত দিবেন। (আলহামদু লিল্লাহ) যদি মালিক মারা গিয়ে থাকে তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে ফেরত দিবেন। চেষ্টা করেও যদি তাদেরকে না পান, তাহলে এসব মাল আপনি তাদের নিয়তে দান করে দিবেন। তাদের জন্যই নিয়ত করবেন, যদিও কেউ কাফের হয়ে থাকে। কেননা আল্লাহ তাদেরকে এ দুনিয়ায় তার প্রতিদান দিবেন পরকালে তারা (কাফেরেরা) কিছুই পাবে না।

এই মাসআলাটির মত একটি মাসআলা ইবনুল কাইয়্যেম (রহেমাহুল্লাহ্) তাঁর মাদারেজুস সালেকীন নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। মুসলিম বাহিনীর এক সৈনিক গনীমাতের মাল চুরি করে। এর কিছুকাল পরে সে তাওবা করে। অতঃপর সে চুরি করা মালামাল নিয়ে সেনাপতির কাছে হাজির হয়। সেনাপতি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে বলেন, আমি কিভাবে সকল সৈন্যদের নিকট এসব পৌছাবো? (তারা তো বিভক্ত হয়ে গেছে)। এরপর সে সৈনিক হাজ্জাজ বিন শায়েরের নিকট এসে এ ব্যাপারে ফতওয়া চায়।

তিনি বলেন, হে লোক ! নিশ্চয়ই আল্লাহ সেনাবাহিনীর সকলকে জানেন, তাদের নামধামও অবগত এবং বংশ পরিচয়ও জানেন। সুতরাং তুমি পঞ্চমাংশ তার প্রাপককে দিয়ে দিবে এবং বাকী ওদের পক্ষ থেকে দান করে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাদের আমলনামায় নেকী পৌছে দিবেন। সে তখন সেভাবেই আমল করে বিষয়টি খলিফা মুয়াবিয়াকে জানায়। তখন তিনি বলেন, আমি যদি তোমাকে এভাবে ফাতওয়া দিতে পারতাম তাহলে তা আমার অর্ধেক সম্পদের চেয়েও আমার কাছে বেশী পছন্দনীয় হতো। ইমাম ইবনে তাইমিয়ার (রহেমাহুল্লাহ্) এ ধরনেরই একটি ফাতওয়া রয়েছে যা মাদারেজুস সালেকীনেও উল্লেখ করা হয়েছে।