তালবিয়া পড়ে-পড়ে পবিত্র কাবার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন। পবিত্র কাবার চার পাশে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদুল হারামের উঁচু বিল্ডিং। এ বিল্ডিংটির যে কোনো দরজা দিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করুন। প্রথমে ডান পা এগিয়ে দিন। আল্লাহ যেন আপনার জন্য তাঁর রহমতের সকল দরজা খুলে দেন সে আকুতি নিয়ে মসজিদে প্রবেশের দোয়াটি পড়ুন। সম্ভব হলে নীচের দোয়াটি পড়ুন।

بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلى رَسُوْلِ اللهِ ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذُنُوْبِيْ، وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লাহুম্মাগফির লি যুনুবি ওয়াফতাহ লি আবওয়াবা রাহমাতিক্।

অর্থ: আললাহর নামে আরম্ভ করছি। সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর ওপর। হে আল্লাহ আপনি আমার জন্য আপনার রহমতের সকল দরজা উন্মুক্ত করে দিন।

এরপর আপনার কাজ হবে তাওয়াফ শুরু করা। বায়তুল্লাহ শরীফ দেখামাত্র দু’হাত উঠানোর ব্যাপারে যে একটি কথা আছে তা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।[1] তবে বায়তুল্লাহ শরীফ দৃষ্টির আওতায় এলে দোয়া করার অনুমতি রয়েছে। ওমর (রাঃ) যখন বায়তুল্লাহর দিকে তাকাতেন তখন নীচের দোয়াটি পড়তেন—

اللّهُمَّ أنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ السَّلامُ فَحَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلامِ [2]

যথার্থভাবে তাওয়াফ সম্পন্ন করার জন্য নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলোর প্রতি নজর রাখুন—

  1. ছোট-বড় সকল প্রকার নাপাকি থেকে পবিত্র হয়ে তাওয়াফ করা।
  2. তাওয়াফের শুরুতে মনে মনে নিয়ত করা। এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেই চলবে। বিভিন্ন পুস্তকে তাওয়াফের যে নিয়ত লেখা আছে তা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
  3. সতর ঢাকা অবস্থায় তাওয়াফ করা।
  4. হাজরে আসওয়াদ ইস্তিলাম (চুম্বন-স্পর্শ) অথবা ইশারা করে তাওয়াফ শুরু করা এবং হাজরে আসওয়াদ বরাবর এসে তাওয়াফ শেষ করা।
  5. হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করতে না পারলে হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র ডান হাত উঠিয়ে ইশারা করা ও بِسْمِ اللهِ اللهُ أَكْبَرُ বলা।
  6. হাতিমের বাইরে দিয়ে তাওয়াফ করা।
  7. হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামানি ব্যতীত কাবার অন্য কোনো অংশ তাওয়াফের সময় স্পর্শ না করা। হাঁ, তাওয়াফ শেষ হলে বা অন্য কোনো সময় মুলতাযামের জায়গায় হাত-বাহু-গন্ডদেশ ও বক্ষ রাখা যেতে পারে।
  8. মাকামে ইব্রাহীম স্পর্শ না করা।
  9. পুরুষদের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব পবিত্র কাবার কাছ দিয়ে তাওয়াফ করা।
  10. নারীদের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে একপাশ হয়ে তাওয়াফ করা।
  11. খুশুখুজুর সাথে তাওয়াফ করা ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না বলা।
  12. রুকনে য়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে

رَبَّنَا آَتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

-এই দোয়া পড়া।

  1. প্রত্যেক তাওয়াফে ভিন্ন ভিন্ন দোয়া আছে এরূপ বিশ্বাস না করা।
  2. সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করা।
  3. তাওয়াফ করার সময় নারীদের স্পর্শ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা।
  4. তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করা। জায়গা না পেলে অন্য কোথাও আদায় করা।
  5. সালাত শেষে যমযমের পানি পান করা ও মাথায় ঢালা।
[1] - والحاصل أنه ليس في الباب ما يدل على مشروعية رفع اليدين عند رؤية البيت وهو حكم شرعي لا يثبت إلا بدليل (শাওকানী: নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০)

[2] - শাওকানী : নাইলুল আওতার, পৃ: ৯৬০