বৃষ্টি-বাদলের দিনে কাদায় পা পিছলে পড়ে যাওয়া বা পানিতে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কায় বারবার মসজিদ আসতে মুসল্লীদের কষ্ট হবে বলেই সরল শরীয়তে সে সময়ও দুই নামাযকে এক সাথে জমা করে পড়ে নেওয়ার অনুমতি দান করেছে।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘মহানবী (ﷺ) মদ্বীনায় যোহ্‌র ও আসর এবং মাগরেব ও এশাকে জমা করে পড়েছেন।’ (এক বর্ণনাকারী) আইয়ুব (আবুশ শা’ষা জাবেরকে) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সম্ভবত: বৃষ্টির সময়?’ উত্তরে (জাবের) বললেন, ‘সম্ভবত:।’ (বুখারী ৫৪৩নং, তামামুল মিন্নাহ্‌, আলবানী ৩২১পৃ:)

হযরত আবূ সালামাহ্‌ (রাঃ) বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে মাগরেব ও এশাকে জমা করে পড়া সুন্নত।’ (আষরাম, নাইলুল আউতার, শাওকানী ৩/২১৮)

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘একদা নবী (ﷺ) মদ্বীনায় যোহ্‌র ও আসর এবং মাগরেব ও এশার নামাযকে জমা করে পড়েছেন। সেদিন না কোন ভয় ছিল আর না বৃষ্টি।’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘তিনি এমন কেন করলেন?’ উত্তরে ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, ‘তিনি তাঁর উম্মতকে অসুবিধায় না ফেলার উদ্দেশ্যে এমনটি করলেন।’ (মুসলিম, সহীহ ৭০৫নং)

উক্ত বর্ণনায় ‘বৃষ্টি ছিল না তাও জমা করে নামায পড়েছেন’ এই কথার দলীল যে, বৃষ্টি হলে জমা করে পড়া এমনিতেই বৈধ। আর এ জমা হবে হাক্বীক্বী (প্রকৃত) জমা (তাকদীম), সূরী (আপাত) জমা নয়। কারণ, তাতেই উম্মতকে অসুবিধায় পড়তে হবে। (দ্র: সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৮৩৭নং)

বৃষ্টির জন্য জমা কেবল তারাই করতে পারে, যারা জামাআতের লোক। যারা জামাআতে বা মসজিদে হাযির হয় না তাদের জন্য জমা বৈধ নয়। যেমন, রোগী (কষ্ট না হলে) বা মহিলা বাড়িতে জমা করতে পারে না।

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি মসজিদেই বা মসজিদের শামিল বা পাশাপাশি বাসায় বাস করে তার জন্যও জমা বৈধ। আসল কথা হল জামাআত। আর জামাআতের ফযীলত বেশী। অতএব জামাআত ছেড়ে তাদের যথাসময়ে নামায পড়া উচিৎ নয়। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫৬০)