২. সালাতের সময় নারীর চেহারা ব্যতীত পূর্ণ শরীর সতর:

সালাতে নারীর চেহারা ব্যতীত পূর্ণ শরীর সতর, তবে হাত ও পায়ের ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে যদি পর-পুরুষ তাকে না দেখে। গায়রে মাহরাম বা পর-পুরুষের দেখার সম্ভাবনা থাকলে চেহারা, হাত ও পা ঢাকা ওয়াজিব। যেমন, সালাতের বাইরেও এসব অঙ্গ পুরুষের আড়ালে রাখা ওয়াজিব। অতএব, সালাতের সময় মাথা, গর্দান ও সমস্ত শরীর পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢাকা জরুরি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

»لا يقبل الله صلاة حائض - يعني: من بلغت الحيض - إلا بخمار«

“হায়েযা (ঋতুমতী) নারীর সালাত উড়না ব্যতীত গ্রহণ করা হয় না”।[1] অর্থাৎ ঋতু আরম্ভ হয়েছে এমন প্রাপ্তবয়স্কা নারীর সালাত। উড়না দ্বারা উদ্দেশ্য মথা ও গর্দান আচ্ছাদনকারী কাপড়। উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, নারী কি জামা ও উড়নায় সালাত পড়তে পারে নিচের কাপড় ছাড়া? তিনি বলেন:

»إذا كان الدرع سابغا يغطي ظهور قدميها«

“যদি জামা পর্যাপ্ত হয় যা তার পায়ের পাতা ঢেকে নেয়”।[2] উড়না ও জামা দ্বারাই সালাত বিশুদ্ধ।

এ দু’টি হাদীস প্রমাণ করে যে, সালাতে নারীর মাথা ও গর্দান ঢেকে রাখা জরুরি, যা আয়েশা থেকে বর্ণিত হাদীসের দাবি। তার পায়ের বহিরাংশ (পাতা) পর্যন্ত শরীরের অংশও ঢেকে রাখা জরুরি, যা উম্মে সালামার হাদীসের দাবি। যদি পর-পুরুষ না দেখে চেহারা উন্মুক্ত রাখা বৈধ, এ ব্যাপারে সকল আহলে ইলম একমত।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন: “কারণ নারী একাকী সালাত পড়লে উড়না ব্যবহার করার নির্দেশ রয়েছে, সালাত ব্যতীত অন্যান্য সময় নিজ ঘরে মাথা উন্মুক্ত রাখা বৈধ। অতএব, সালাতে পোশাক গ্রহণ করা আল্লাহর হক। কোনো ব্যক্তির পক্ষে উলঙ্গাবস্থায় কা‘বা তাওয়াফ করা বৈধ নয়, যদিও সে রাতের অন্ধকারে একাকী হয়। অনুরূপ একাকী হলেও উলঙ্গ সালাত পড়া দুরস্ত নয়... অতঃপর তিনি বলেন: সালাতে সতর ঢাকার বিষয়টি দৃষ্টির সাথে সম্পৃক্ত নয়, না দৃষ্টি রোধ করার সাথে, আর না দৃষ্টি আকর্ষণ করার সাথে”।[3] সমাপ্ত।

‘মুগনি’ কিতাবে: (২/৩২৮) ইবন কুদামাহ বলেছেন: “স্বাধীন নারীর পুরো শরীর সালাতে ঢেকে রাখা জরুরি, যদি তার কোনো অংশ খুলে যায় সালাত শুদ্ধ হবে না, তবে কম হলে সমস্যা নয়। এ কথাই বলেছেন ইমাম মালিক, আওযা‘ঈ ও শাফে‘ঈ।

[1] তিরমিযী, হাদীস নং ৩৭৭); আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৪১; ইবন মাজাহ; হাদীস নং ৬৫৫; আহমদ (৬/২৫৯)
[2] আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৪০; মালিক, হাদীস নং ৩২৬
[3] মাজমুউল ফতোয়া: (২২/১১৩-১১৪)