মদপান সকলের নিকট ঘৃণিত বা বর্জনীয় না হলেও মদপান করে মাতলামি করা নিঃসন্দেহে সকলের নিকটই ঘৃণিত ও নিন্দনীয় কর্ম। কিন্তু বাইবেল বলছে যে, ঈশ্বরের প্রিয় নবী নোহ মদ খেয়ে মাতলামির চূড়ান্ত পর্যায়ে উলঙ্গ হন।

‘‘নূহের যে পুত্রেরা জাহাজ থেকে বের হলেন, তাঁদের নাম শাম, হাম ও ইয়াফস (Shem, Ham, Japheth); আর হাম ছিলেন কেনানের পিতা ... পরে নূহ কৃষিকর্ম শুরু করে প্রথমেই একটি আঙ্গুর খেত করলেন। আর তিনি আঙ্গুর-রস (মদ: wine) পান করে মাতাল হলেন এবং তাঁবুর মধ্যে উলংগ হয়ে পড়ে রইলেন। তখন কেনানের পিতা হাম নিজের পিতার উলঙ্গতা দেখে বাইরে এসে তার দুই ভাইকে সংবাদ দিল। তাতে শাম ও ইয়াফস একটি কাপড় নিয়ে নিজেদের কাঁধে রেখে পিছু হেঁটে পিতার উলঙ্গতা আচ্ছাদন করলেন; পিছনের দিকে মুখ থাকাতে তাঁরা পিতার উলঙ্গতা দেখলেন না। পরে নূহ আঙ্গুর-রসের (মদের wine) ঘুম থেকে জেগে উঠে তাঁর নিজের প্রতি কনিষ্ঠ পুত্রের আচরণ অবগত হলেন। আর তিনি বললেন, কেনান বদদোয়াগ্রস্ত হোক, সে তার ভাইদের গোলামদের গোলাম হবে। ... নূহের পুত্র শাম, হাম ও ইয়াফসের বংশ-বৃত্তান্ত এই। বন্যার পরে তাঁদের সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করল। (পয়দায়েশ/ আদিপুস্তক ৯/১৮-২৫ ও ১০/১, মো.-১৩)

বাইবেলের বর্ণনায় প্রতীয়মান যে, অভিশাপ দেওয়ার সময়েও তিনি মাতাল-ই ছিলেন। নইলে নিজের উলঙ্গতায় লজ্জিত না হয়ে পুত্রকে অভিশাপ দেবেন কেন? আর পুত্রের অপরাধে পুত্রকে অভিশাপ না দিয়ে অসহায় নিরপরাধ পৌত্র কেনানকে অভিশাপ দেবেন কেন? হামের চার পুত্রের মধ্যে কনানকে বেছে নেওয়ারই বা কারণ কী? বাইবেল বলল ‘বন্যার পরে তাঁদের সন্তান সন্ততি জন্মিল’। এতে বুঝা যায় যে, এ ঘটনার সময় কেনানের জন্মই হয়নি। এখনো যে শিশু জন্মেনি তাকে পিতার অপরাধে অভিশাপ দেওয়ার মত কর্ম কোনো স্বাভাবিক বুদ্ধির মানুষের পক্ষে কি সম্ভব? এ অধ্যায়ের প্রথমে ঐশ্বরিক অযৌক্তিকতা প্রসঙ্গে আমরা বলেছি যে, সবচেয়ে অস্বাভাবিক বিষয় ঈশ্বরের পক্ষ থেকে এ অভিশাপ কার্যকর করা!!