৪. ৩. ৪. পুরাতন নিয়মের বক্তব্যের ভুল অর্থ গ্রহণ

নতুন নিয়মের লেখকরা পুরাতন নিয়মের সকল প্রশংসা ও গুণকীর্তন সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে যীশুর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে কখনো তাঁরা মূল পাঠকে বিকৃত করেছেন এবং কখনো মূল পাঠকে তার প্রসঙ্গ থেকে বের করে ভুল অর্থে পেশ করেছেন। মূল পাঠের বিকৃতির কিছু নমুনা আমরা পরবর্তী পরিচ্ছেদে আলোচনা করার আশা করছি। এখানে আমরা ভুল অর্থ গ্রহণের একটা নমুনা উল্লেখ করছি।

নতুন নিয়মের ১৯ নং পুস্তক ‘ইব্রীয়’/ ইবরানী। আমরা দেখেছি যে, বিগত প্রায় ২ হাজার বছর এটা সাধু পলের রচিত বলে প্রচার করা হয়েছে। বর্তমানে বাইবেল প্রকাশকরাই স্বীকার করছেন যে, এটা ‘অজ্ঞাত পরিচয় কোনো লেখক’ কর্তৃক লেখা। এ পত্রের শুরুতে লেখক উল্লেখ করেছেন যে, যীশু খ্রিষ্টের মর্যাদা ছিল ফেরেশতা বা স্বর্গদূতদের চেয়েও বেশি; কারণ ঈশ্বর যীশুর ক্ষেত্রে যা বলেছেন ফেরেশতাদের ক্ষেত্রে তা বলেননি: ‘‘কারণ আল্লাহ কোন ফেরেশতাকে কি কোন সময়ে এই কথা বলেছেন, ‘তুমি আমার পুত্র, আমি আজ তোমাকে জন্ম দিয়েছি’, আবার ‘আমি তাঁর পিতা হব ও তিনি আমার পুত্র হবেন’?’’ (ইবরানী ১/৫, মো.-১৩)

এখানে গীতসংহিতা বা জবুর শরীফ ২/৭, ২ শমূয়েল ৭/১৪ ও ১ বংশাবলি ২২/৬-১০ থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতিগুলোর মূল পাঠ নিম্নরূপ:

প্রথম উদ্ধৃতি: গীতসংহিতা ২/৭

পুরাতন নিয়ম থেকে আমরা দেখি যে, রাজা দাউদ আজীবন শত্রু বেষ্টিত ছিলেন, অ-ইহুদি বিভিন্ন জাতির সাথে যুদ্ধ করে তিনি ইহুদি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। একটু পরেই আমরা ১ রাজাবলির উদ্ধৃতিতে দেখব যে, ঈশ্বর দাউদকে বলেন: ‘‘তুমি অনেক রক্তপাত করেছ ও বড় বড় যুদ্ধ করেছ, তুমি আমার নামের উদ্দেশে গৃহ নির্মাণ করবে না; কেননা আমার সাক্ষাতে তুমি অনেক রক্ত মাটিতে ঢেলেছ।’’ (১ বংশাবলি/ খান্দাননামা ২২/৮, মো.-১৩)

গীতসংহিতায় দাউদের এ যুদ্ধরত অবস্থা এবং ঈশ্বরের পক্ষ থেকে তার বিজয়ের প্রতিশ্রুতি বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। দাউদের প্রতি ঈশ্বরের বিশেষ করুণা ও সাহায্য বুঝাতে ‘পুত্রত্ব’, ‘মসীহত্ব’, ‘প্রথমজাত পুত্র’ ইতাদি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ৮৯ গীত (জবুর) বলছে: ‘‘আমার গোলাম দাউদকেই পেয়েছি, আমার পবিত্র তেলে তাকে অভিষিক্ত (মসীহ: খ্রিষ্ট) করেছি (with my holy oil have I anointed him)। আমার হাত তার দৃঢ় সহায় হবে, আমার বাহু তাহাকে বলবান করবে। দুশমন তার প্রতি জুলুম করতে পারবে না... আমি তার দুশমনদেরকে তার সম্মুখে চূর্ণ করবো, তার বিদ্বেষীদেরকে আঘাত করবো। ... সে আমাকে ডেকে বলবে, তুমি আমার পিতা, আমার আল্লাহ ও আমার উদ্ধারের শৈল। আবার আমি তাকে প্রথমজাত করবো। দুনিয়ার বাদশাহদের থেকে সর্বোচ্চ করে নিযুক্ত করবো। (He shall cry unto me, Thou art my father, my God, and the rock of my salvation. Also I will make him my firstborn, higher than the kings of the earth)।’’ (গীতসংহিতা/ জবুর শরীফ  ৮৯/২০-২৭, মো.-১৩)

বিভিন্ন গীতে দাউদ এ বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়েই গীত-সংহিতার দ্বিতীয় গীত বা জবুর শরীফের ২য় জবুরে তিনি বলেন: ‘‘(২) দুনিয়ার বাদশাহরা দণ্ডায়মান হয়, শাসনকর্তারা একসঙ্গে মন্ত্রণা করে, মাবুদের বিরুদ্ধে এবং তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে (against the LORD, and against his anointed)... (৬) আমিই আমার বাদশাহকে স্থাপন করেছি আমার পবিত্র সিয়োন পর্বতে। (৭) আমি মাবুদের নির্দেশের কথা বলবো; তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার পুত্র, আজ আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছি (I will declare the decree: the LORD hath said unto me, Thou art my Son; this day have I begotten thee)। (৮) আমার কাছে যাচ্ঞা কর, আমি তোমাকে উত্তরাধিকার হিসেবে জাতিদেরকে দেব, দুনিয়ার প্রান্তগুলো তোমার অধিকারে এনে দেব। (৯) তুমি লোহার দ- দ্বারা তাদেরকে ভাঙ্গবে...। (১০) অতএব এখন বাদশাহগণ! বিবেচক হও; দুনিয়ার বিচারকগণ! শাসন গ্রহণ কর।’’ (জবুর/ গীতসংহিতা ২/২-১০, মো.-১৩)

উভয় গীত পাঠ করলে পাঠক নিশ্চিত হবেন যে, সকল কিছুই দাউদকে বলা হচ্ছে। কোনোভাবেই অন্য কারো জন্য বা অন্য কারো ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে এগুলো বলা হয়নি। কিন্তু সাধু পল বা অজ্ঞাত লেখক সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে ‘তুমি আমার পুত্র, অদ্য আমি তোমাকে জন্ম দিয়াছি’ কথাটুকুকে যীশুর জন্য বলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। আমরা দেখেছি যে, সাধু পল ও তৎকালীন প্রচারকরা যীশুর অলৌকিক জন্ম সম্পর্কে কিছুই জানতেন না বলেই প্রতীয়মান। তারা যীশুকে ইউসুফ বা যোষেফের ঔরসজাত পুত্র বলে বিশ্বাস করতেন। আর এ বিশ্বাস থেকেই পল বা অজ্ঞাত পরিচয় লেখক দাবি করছেন যে, দাউদকে বলা হলেও এ কথাটা দাউদ পুত্র যীশুকে উদ্দেশ্য করে বলা।

এখানে নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষণীয়:

(ক) কোনো পূর্বপুরুষকে বলা কথাকে কোনোরূপ প্রাসঙ্গিক ও পাঠগত ইঙ্গিত ছাড়া কোনো উত্তর পুরুষের জন্য দাবি করা একান্তই অবান্তর। যীশু যদি ইউসুফের ঔরসজাত সন্তান হতেন তবুও এ কথাটাকে যীশুর জন্য প্রয়োগ করা এবং বর্তমান যুগের কোনো দাউদ বংশীয়ের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা একইরূপ অবান্তর।

(খ) আমরা দেখেছি যে, যীশু কখনোই দাউদ বংশীয় ছিলেন না। ইউসুফ তাঁর পিতা নন। আর তাঁর মাতা হারোণবংশীয়া ছিলেন। কাজেই এ কথাটাকে যীশুর জন্য দাবি করা আর জর্জ বুশ, বারাক ওবামা, ইয়াহূদ বারাক, নরেন্দ্র মোদী, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বা অন্য কারো জন্য দাবি করা একই রূপ অপ্রাসঙ্গিক বিষয়।

(গ) এখানে বলা হয়েছে যে, ‘আজ আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছি’। কথাটার উদ্দেশ্য যদি যীশু হন তবে ত্রিত্ববাদী খ্রিষ্টধর্ম বাতিল হয় এবং যোহনের ইঞ্জিলও বাতিল হয়ে যায়। কারণ এতে প্রমাণিত হয় যে, দাউদের শাসনামলে খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ সালের দিকে পুত্র ঈশ্বরের জন্ম! অথচ ত্রিত্ববাদীদের বিশ্বাসে লক্ষ কোটি বছর পূর্বে পুত্র ঈশ্বরের জন্ম! তিনি পিতারই মত অনাদি। যোহনের ইঞ্জিলের প্রথমে বলা হয়েছে: ‘‘আদিতে কালাম ছিলেন এবং কালাম আল্লাহর কাছে ছিলেন এবং কালাম নিজেই আল্লাহ ছিলেন।’’  (ইউহোন্না/ যোহন ১/১, মো.-১৩)

দ্বিতীয় উদ্ধৃতি: ১ শমূয়েল ৭/১৪

ঈশ্বর নাথন নবীর মাধ্যমে রাজা দাউদকে জানান: ‘‘তোমার দিন সম্পূর্ণ হলে যখন তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হবে, তখন আমি তোমার পরে তোমার বংশকে, যে তোমার ঔরসে জন্মাবে তাকে স্থাপন করবো এবং তার রাজ্য সুস্থির করবো। আমার নামের জন্য সে একটি গৃহ নির্মাণ করবে এবং আমি তার রাজ-সিংহাসন চিরস্থায়ী করবো। আমি তার পিতা হব ও সে আমার পুত্র হবে; সে অপরাধ করলে মানুষ যেভাবে দ- ভোগ করে তেমনি আমি দ- দেব ও মানুষের সন্তানদের প্রহার দ্বারা তাকে শাস্তি দেব। (I will be his father, and he shall be my son. If he commit iniquity, I will chasten him with the rod of men, and with the stripes of the children of men)’’ (২ শামুয়েল ৭/১২-১৪, মো.-১৩)

তৃতীয় উদ্ধৃতি: ১ বংশাবলি/ খান্দাননামা ২২/১০

দাউদের প্রতি ঈশ্বরের এ প্রতিশ্রুতি ১ বংশাবলিতেও উল্লেখ করা হয়েছে: ‘‘পরে তিনি তাঁর পুত্র সোলায়মানকে ডেকে ইসরাইলের আল্লাহ মাবুদের জন্য গৃহ নির্মাণ করতে হুকুম করলেন। আর দাউদ তাঁর পুত্র সোলায়মানকে বললেন, আমার আল্লাহ মাবুদের নামের উদ্দেশে গৃহ নির্মাণ করতে আমারই মনোরথ ছিল; কিন্তু মাবুদের এই কালাম আমার কাছে নাজেল হল, তুমি অনেক রক্তপাত করেছ ও বড় বড় যুদ্ধ করেছ; তুমি আমার নামের উদ্দেশে গৃহ নির্মাণ করবে না; কেননা আমার সাক্ষাতে তুমি অনেক রক্ত মাটিতে ঢেলেছ। দেখ, তোমার একটি পুত্র জনমগ্রহণ করবে, সে বিশ্রামের মানুষ হবে; আমি তার চারদিকের সকল দুশমন থেকে তাকে বিশ্রাম দেব, কেননা তার নাম সোলায়মান (শান্ত) হবে এবং তার সময়ে আমি ইসরাইলকে শান্তি ও নির্বিঘ্নতা দেব। সেই আমার নামের জন্য গৃহ নির্মাণ করবে; আর সে আমার পুত্র হবে, আমি তার পিতা হব এবং ইসরাইলে তার রাজ সিংহাসন চিরকালের জন্য স্থায়ী করবো।’’ (১ বংশাবলি/ খান্দাননামা ২২/৬-১০, মো.-১৩)

দুটো বক্তব্যেই অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে, এখানে দাউদের ঔরসজাত পুত্র শলোমন বা সোলায়মান (আ.)-কে বুঝানো হয়েছে। বিশেষত নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন:

(ক) ইব্রীয় উদ্ধৃত শ্লোকের মধ্যেই বলা হয়েছে ঈশ্বর যার পিতা হবেন এবং যিনি ঈশ্বরে পুত্র হবেন, ‘সে অপরাধ করলে... শাস্তি দেব’। এ থেকে স্পষ্টরূপে প্রমাণিত যে, ঈশ্বরের এ পুত্রটা নিষ্পাপ হবেন না। বরং তিনি পাপ, অন্যায় এবং অপরাধে লিপ্ত হবেন। তিনি যখন পাপ করবেন তখন ঈশ্বর মানুষের লৌহ দ্বারা এবং মানুষদের হাতে প্রহার দ্বারা তাকে শাস্তি দিবেন। শলোমনের ব্যাপারে ইহুদি- খ্রিষ্টানরা এরূপই বিশ্বাস করেন। বাইবেলে তাঁর অনেক পাপের কথা লেখা হয়েছে। পক্ষান্তরে খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস অনুসারে যীশু নিষ্পাপ ছিলেন। তাহলে কিভাবে এ কথাটাকে যীশুর জন্য বলে দাবি করা সম্ভব?

 (খ) ১ বংশাবলিতে স্পষ্টতই বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর যার পিতা হবেন এবং যিনি ঈশ্বরে পুত্র হবেন, দাউদের সে পুত্রের নাম হবে ‘শলোমন’ বা ‘সোলায়মান’।

(গ) উভয় পুস্তকেই বলা হয়েছে যে ঈশ্বরের এ পুত্রই তাঁর নামের জন্য গৃহ নির্মাণ করবেন। আর এটা শুধু শলোমনের জন্য প্রযোজ্য। যীশু ধর্মধাম বা বায়তুল মোকাদ্দস নির্মাণ করেননি, বরং ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী করেন।

(ঘ) উভয় পুস্তকেই স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঈশ্বর যার পিতা হবেন এবং যিনি ঈশ্বরে পুত্র হবেন রাজা হবেন, রাজত্ব করবেন, শান্তিতে রাজত্ব করবেন, তাঁর শত্রুরা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহস পাবে না, তাঁর সময়ে বনি-ইসরাইল জাতি ও রাষ্ট্র শান্তি ও নির্বিঘ্নতা লাভ করবে ইত্যাদি। এগুলো কোনোভাবেই যীশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়; বরং সুনিশ্চিতভাবেই শলোমনের জন্য প্রযোজ্য।

কখনো কখনো খ্রিষ্টান প্রচারকরা দাবি করেন যে, এ প্রতিশ্রুতি বাহ্যত বা যাহিরীভাবে শলেমানের জন্য করা হলেও, প্রকৃতভাবে, অর্থাৎ বাতিনী ও মারিফতী পদ্ধতিতে শলোমনের বংশধর যীশুর জন্য করা হয়েছে। যদি বাইবেলের পাঠের মধ্যে এরূপ কোনো ইঙ্গিত থাকত এবং এ প্রতিশ্রুতিতে উল্লেখ করা গুণাবলিগুলো যীশুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হত তবে তাদের এ দাবিটা বিবেচনা যোগ্য হত। আমরা দেখেছি, এ প্রতিশ্রুতিতে উল্লেখকৃত গুণাবলি কোনোভাবেই যীশুর জন্য প্রযোজ্য নয়। একে যীশুর জন্য প্রয়োগ করা আর বর্তমান যুগের কোনো ইহুদির জন্য প্রয়োগ করা একইরূপ অবান্তর। সর্বোপরি যীশু শলোমনের বংশধর নন। মথির বংশতালিকায় সূত্রধর যোষেফ শলোমনের বংশধর এবং লূকের বংশতালিকায় যোষেফ নাথনের বংশধর। আর যীশু কখনোই যোষেফের ঔরসজাত সন্তান নন। যীশু তাঁর মাতা মরিয়মের সন্তান। আর মরিয়ম দাউদের বংশধর ছিলেন বলে আদৌ প্রমাণ নেই। তিনি হারোণবংশীয়া ছিলেন বলে প্রমাণ রয়েছে।

এভাবে আমরা দেখছি যে, যীশুকে ফেরেশতারা থেকে অধিক মর্যাদাময় প্রমাণের জন্য ইব্রীয় পুস্তকের লেখক পুরাতন নিয়ম থেকে যে উদ্ধৃতি দিয়েছেন তা কখনোই যীশুর জন্য কথিত নয় এবং উদ্ধৃতিগুলোর বিশেষণগুলো কোনোভাবেই যীশুর জন্য প্রযোজ্য নয়। পুরাতন নিয়মের বক্তব্যকে তিনি সম্পূর্ণ ভুল বা বিকৃত অর্থে গ্রহণ করেছেন।

(ঙ) সর্বোপরি, শলোমনের জবানিতে পবিত্র বাইবেলই নিশ্চিত করেছ যে, মাবুদের এ ওয়াদা শলোমনের জন্যই ছিল। পাক-কিতাব বলছে: ‘‘আর ইসরাইলের আল্লাহ মাবুদের নামের উদ্দেশে একটি গৃহ নির্মাণ করতে আমার পিতা দাউদের মনোবাসনা ছিল। কিন্তু মাবুদ আমার পিতা দাউদকে বললেন, আমার নামের উদ্দেশে একটি গৃহ নির্মাণ করতে তোমার মনোবাসনা হয়েছে। তোমার এরকম মনোবাসনা করা ভালই বটে। তবুও তুমি সেই গৃহ নির্মাণ করবে না, কিন্তু তোমার বংশ থেকে উৎপন্ন পুত্রই আমার নামের উদ্দেশে গৃহ নির্মাণ করবে। মাবুদ এই যে কথা বলেছিলেন তা সফল করলেন। মাবুদের ওয়াদা অনুসারে আমি আমার পিতা দাউদের পদে অধিষ্ঠিত ও ইসরাইলের সিংহাসনে উপবিষ্ট হয়ে ইসরাইলের আল্লাহ মাবুদের নামের উদ্দেশে এই গৃহ নির্মাণ করেছি।’’ (২ খান্দাননামা ৬/৭-১০)

পবিত্র বাইবেলের এ সুনিশ্চিত বক্তব্যের পরেও যদি কেউ এ ওয়াদাকে ‘যীশুর জন্য’ বলে দাবি করেন তবে তাকে কি পবিত্র বাইবেলের অভ্রান্ততায় বিশ্বাসী বলে গণ্য করা যায়? এ কথা কি প্রমাণ হয় না যে, এরূপ দাবিদার মূলত বাইবেলের সত্যতায় বিশ্বাস করেন না, বরং বাইবেলের কিছু বক্তব্যকে নিজের ইচ্ছামত ব্যাখ্যা করে নিজের ধর্মবিশ্বাস প্রমাণ করতে চান?