৪. ৩. ২. তৌরাতের বিষয়ে নতুন নিয়মের বর্ণনা

নতুন নিয়মের ১৯ নং পুস্তক ইব্রীয় বা ইবরানী বলছে: ‘‘কারণ মূসার মধ্য দিয়ে লোকদের কাছে শরীয়তের সমস্ত হুকুম দেওয়া শেষ হলে পর, তিনি পানি ও লাল রংয়ের ভেড়ার লোম ও এসোবের সঙ্গে বাছুর ও ছাগলের রক্ত নিয়ে কিতাবটাতে ও সমস্ত লোকদের শরীরে ছিটিয়ে দিলেন, বললেন, ‘এটি সেই নিয়মের রক্ত, যে নিয়ম আল্লাহ তোমাদের উদ্দেশে হুকুম করলেন। আর তিনি তাঁবুতে ও সেবাকাজের সমস্ত সামগ্রীতেও সেভাবে রক্ত ছিটিয়ে দিলেন।’’ (ইবরানী ৯/১৯-২১, মো.-১৩)

তৌরাতের (যাত্রাপুস্তক ২৪/৩-৮) বর্ণনা অনুসারে এখানে তিনটা ভুল রয়েছে:

(ক) এখানে ‘বাছুর ও ছাগলের (calves and of goats) রক্ত’ ছিল না। শুধু ‘বৃষদের’ বা ‘ষাড়গুলোর’ (oxen) রক্ত ছিল।

 (খ) রক্ত ছিটানোর সময়ে রক্তের সাথে ‘পানি ও লাল রংয়ের ভেড়ার লোম ও এসোব’ (water, and scarlet wool, and hyssop) ছিল না। বরং শুধু রক্তই ছিল।

(খ) মোশি সে রক্ত কখনোই ‘কিতাবটিতে ও সেবাকার্যের সমস্ত সামগ্রীতে’ (both the book, and all the people) ছিটিয়ে দেননি। বরং তিনি অর্ধেক রক্ত বেদির উপরে ছিটিয়ে দেন এবং বাকি অর্ধেক লোকদের উপর ছিটিয়ে দেন।

হিজরত/ যাত্রপুস্তক ২৪/৩-৮ (মো.-১৩): ‘‘তখন মূসা এসে লোকদেরকে মাবুদের সমস্ত কালাম ও সমস্ত অনুশাসন বললেন, তাতে সমস্ত লোক একস্বরে জবাবে বললো, মাবুদ যে সমস্ত কথা বললেন, আমরা সমস্তই পালন করবো। পরে মূসা মাবুদের সমস্ত কালাম লিখলেন এবং খুব ভোরে উঠে পর্বতের পাদদেশে একটি কোরবানগাহ ও ইসরাইলের বারো বংশানুসারে বারোটি স্তম্ভ নির্মাণ করলেন। আর তিনি বনি-ইসরাইলদের যুবকদেরকে পাঠালে তারা মাবুদের উদ্দেশে পোড়ানো-কোরবানী ও মঙ্গল-কোরবানী হিসেবে ষাড়গুলোকে কোরবানী করলো। তখন মূসা তার অর্ধেক রক্ত নিয়ে থালাই রাখলেন এবং অর্ধেক রক্ত কোরবানগাহ্র উপরে ছিটিয়ে দিলেন। আর তিনি নিয়ম-কিতাবখানি নিয়ে লোকদের কাছে পাঠ করলেন; তাতে তারা বললো, মাবুদ যা যা বললেন, আমরা সমস্তই পালন করব ও মেনে চলব। পরে মূসা সেই রক্ত নিয়ে লোকদের উপরে ছিটিয়ে দিয়ে বললেন, দেখ, এই সেই নিয়মের রক্ত, যা মাবুদ তোমাদের সঙ্গে এসব কালাম অনুযায়ী স্থির করেছেন।’’

তাহলে কি ঈশ্বর বা পবিত্র আত্মা নিজেই নিজের ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিতে এরূপ মারাত্মক ভুল করলেন? এটা কি প্রমাণ করে যে, এটা ঈশ্বর বা পবিত্র আত্মার রচিত? কোনো প্রাজ্ঞ ধর্মগুরুও কি নিজ ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি দিতে এত ভুল করবেন?