পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৩. ৯. ১২. তৌরাত পালন মুক্তির সহায়ক না বাধা?

এ বিষয়ক আরেকটা বৈপরীত্য, তৌরাত পালন কি মুক্তির সহায়ক না মুক্তির প্রতিবন্ধক? উপরের বক্তব্যে যীশু স্পষ্টভাবেই বলেছেন যে, সাধারণ ইহুদিদের চেয়ে এবং আলিম ও ফরীশীদের চেয়েও পূর্ণতর ভাবে শরীয়তের বিধান পালন না করলে বেহেশতে প্রবেশ করা যাবে না। কিন্তু বাইবেলের কোথাও বলা হয়েছে যে, তৌরাত বা শরীয়ত পালন শুধু অপ্রয়োজনীয়ই নয়; উপরন্তু বিভিন্নভাবে তা মুক্তির পথে প্রতিবন্ধক।

(ক) শরীয়ত পালনের মাধ্যমে পাপের জ্ঞান জন্মে ফলে তা মুক্তির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে: ‘‘শরীয়তের কাজ দ্বারা কোন প্রাণী তাঁর সাক্ষাতে ধার্মিক বিবেচিত হবে না, কেননা শরীয়ত দ্বারা গুনাহর জ্ঞান জন্মে’’ (রোমীয় ৩/২০, মো.-১৩)।

(খ) শরীয়তই সকল শত্রুতা ও হানাহানির উৎস ফলে তা মুক্তির প্রতিবন্ধক: ‘‘শত্রুতাকে, অর্থাৎ বিধিবদ্ধ আজ্ঞাকলারূপ ব্যবস্থাকে, নিজ মাংসে লুপ্ত করিয়াছেন (abolished in his flesh the enmity, even the law of commandments contained in ordinances)।’’ (ইফিষীয় ২/১৫)

(গ) শরীয়ত পালনকারীর জন্য মুক্তির পথ চিররুদ্ধ, কারণ সে বদদোয়াপ্রাপ্ত বা অভিশপ্ত, অর্থাৎ মালঊন বা লানত প্রাপ্ত। পল বলেন: ‘‘বাস্তবিক যারা শরীয়তের কাজ অবলম্বন করে তারা সকলে বদদোয়ার অধীন, কারণ লেখা আছে, ‘যে কেউ শরীয়ত কিতাবে লেখা সমস্ত কথা পালন করার জন্য তাতে স্থির না থাকে, সে বদদোয়াগ্রস্ত।’’ (গালাতীয় ৩/১০: কি. মো.-২০১৩)। কি. মো.-২০০৬: ‘‘পাক-কিতাবে লেখা আছে, সেই লোক বদদোয়াপ্রাপ্ত, যে শরীয়তে লেখা প্রত্যেকটি কথা পালন করে না।’’