পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৩. ৭. ১৬. পুনরুত্থানের কত দিন পর যীশু স্বর্গে গমন করেন?

মথি ও যোহন যীশুর স্বর্গারোহেণ বিষয়টা লেখেননি। যীশুর জীবনের সবচেয়ে বড় অলৌকিক ও প্রসিদ্ধ ঘটনাটা তাঁরা কেন লেখলেন না তা আমরা জানি না। তবে মথি লেখেছেন যে, তিনি শিষ্যদেরকে গালীলে যেতে নির্দেশ দেন এবং গালীলের পাহাড়ে তিনি শিষ্যদেরকে শেষ শিক্ষা দেন। জেরুজালেম থেকে গালীল কয়েক দিনের পথ। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, পুনরুত্থানের অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি চলে যান।

মার্ক ও লূক যীশুর স্বর্গারোহণের কথা লেখেছেন। মার্কের বর্ণনায় তিনি শিষ্যদেরকে তিনবার সাক্ষাৎ দেন: প্রথমে মগ্দলীনী মরিয়ম, এরপর দুজন পথচারী শিষ্য এবং পরে এগারজনকে। এগারজনকে শেষ শিক্ষা দিয়ে তিনি স্বর্গে চলে যান। মার্কের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যীশু পুনরুত্থানের দিনেই এ তিন সাক্ষাৎ প্রদানের পর স্বর্গে গমন করেন।

লূকের ইঞ্জিলের ২৪ অধ্যায় বিষয়টা নিশ্চিত করে। তিনি  লেখেছেন, সেই দিনেই, অর্থাৎ পুনরুত্থানের দিনেই তিনি ইয়াম্মুগামী দু শিষ্যকে সাক্ষাৎ দেন। যীশুকে চেনার পর ‘তখনই’ তারা দুজন জেরুজালেমে যান এবং সেখানে শিষ্যদের দেখা পান। তাঁরা যখন যীশুর সাক্ষাতের বিষয় আলোচনা করছিলেন তখন যীশু তাঁদের মাঝে আগমন করেন। তিনি তাঁদের শেষ শিক্ষা প্রদান করেন। ‘পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে বৈথনিয়া যান এবং শিষ্যদের আশীর্বাদ করতে করতে স্বর্গে চলে যান।’ এ থেকে আমরা নিশ্চিত হই যে, পুনরুত্থানের দিনে ও দিন-পরবর্তী রাতেই এ সব কিছু ঘটে গেল। (বিশেষ করে দেখুন: লূক ২৪/১, ২৪/১৩, ২৪/২১-২২)

কিন্তু প্রেরিতদের কার্যবিবরণীতে এর বিপরীত তথ্য দেওয়া হয়েছে। এ পুস্তকটাও লূকের লেখা বলে মনে করা হয় বলে আমরা জেনেছি। আমরা দেখেছি, এতে লূক তাঁর ইঞ্জিলের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক বক্তব্য প্রদান করে লেখেছেন: ‘‘যে শিষ্যদের তিনি বেছে নিয়েছিলেন, তাঁকে তুলে নেবার আগে সেই শিষ্যদের তিনি পবিত্র আত্মার মধ্য দিয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ... চল্লিশ দিন তিনি শিষ্যদের দেখা দিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় বলেছিলেন।’’  (প্রেরিত ১/১-৩: বাইবেল-২০০০)