পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

বাইবেলের বৈপরীত্য বিষয়ক লেখনির মধ্যে পাশ্চাত্য গবেষকরা ঈশ্বরের করুণা ও শাস্তির বিষয় উল্লেখ করেছেন। কোথাও বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর মহা করুণাময় এবং তাঁর করুণা সকলের জন্য। যেমন, ‘‘মাবুদ সকলের জন্য মঙ্গলময়, তাঁর করুণা তাঁর সৃষ্ট সমস্ত জিনিসের উপরে আছে।’’ (জবুর/ গীতসংহিতা ১৪৫/৯, মো.-১৩)। অন্যত্র বলা হয়েছে: ‘‘প্রভু সেণহপূর্ণ ও দয়াময়’’। (যাকোব ৫/১১) অন্যত্র বলা হয়েছে: ‘‘ঈশ্বর প্রেম/ আল্লাহ মহববত’’।’’ (১ ইউহোন্না ৪/১৬, মো.-১৩)

এর বিপরীতে বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর মমতা করেন না, করুণাও করেন না। যেমন: ‘‘আর আমি একজনকে অন্য জনের বিরুদ্ধে, আর পিতাদের ও পুত্রদের একসঙ্গে আছড়াব, মাবুদ এই কথা বলেন; আমি মমতা করবো না, কৃপা করবো না, করুণা করবো না; তাদেরকে বিনষ্ট করবো।’’ (যিরমিয়/ ইয়ারমিয়া ১৩/১৪, মো.-১৩)

যদিও শব্দ ব্যবহারে বক্তব্যগুলো সাংঘর্ষিক, একটা ব্যাখ্যা সহজে করা সম্ভব যে, ‘আমি মমতা করিব না, করুণা করিব না’ বলতে অপরাধীদের বুঝানো হয়েছে। যদিও বাক্যে তা বলা হয়নি তবে এরূপ ব্যাখ্যা করা একেবারে অবান্তর নয়। এজন্য এ পর্যায়ের বৈপরীত্য আমরা এ পুস্তকে উল্লেখ করিনি। তবে বাইবেলের বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর একের পাপে অন্যকে শাস্তি দেন, অপরাধীর কারণে নিরপরাধকে শাস্তি দেন এবং পিতার পাপের কারণে কয়েক প্রজন্ম পরের বংশধরদের শাস্তি দেন, অথবা তিনি কোনোদিনই ক্ষমা করেন না...। এ জাতীয় বক্তব্যগুলো নিঃসন্দেহে তাঁর করুণাময়তা বা প্রেমময়তার বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। এজন্য আমরা এ পর্যায়ের বৈপরীত্য ও সমস্যা পরবর্তী আলোচনায় উল্লেখ করব।