কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা চতুর্থ অধ্যায়: আরকানুল ঈমান ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি

উপরের আয়াতে বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের পূর্বাভাসসমূহ প্রকাশিত হয়েছে। এ সকল পূর্বাভাসের অন্যতম সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর আগমন। সাহল ইবনু সায়িদ আস সায়িদী বলেন:

بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةَ كَهَذِهِ مِنْ هَذِهِ أَوْ كَهَاتَيْنِ وَقَرَنَ بَيْنَ السَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى

‘‘রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাতের তর্জনী ও মধ্যমা অঙ্গুলী একত্রিত করে বলেন: ‘‘আমি প্রেরিত হয়েছি কিয়ামতের সাথে এভাবে পাশাপাশি।’’[1]

এভাবে আমরা দেখছি যে, খাতমুন নুবুওয়াত বা নুবুওয়াতের ধারার পরিসমাপ্তি কিয়ামতের অন্যতম পূর্বাভাস। বিভিন্ন হাদীসে কিয়ামতের আরো অনেক পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি যে, কিয়ামতের পূর্বে আরব উপদ্বীপে নদনদী প্রবাহিত হবে এবং ক্ষেত-খামার ছড়িয়ে পড়বে। ইরাকের ফুরাত নদীর তলদেশ থেকে স্বর্ণ বা সম্পদ প্রকাশিত হবে, যে জন্য ভয়ঙ্কর যুদ্ধবিগ্রহ ছড়িয়ে পড়বে। সামগ্রিকভাবে মানুষের জাগতিক উন্নতি ঘটবে, জীবনযাত্রা উন্নত হবে, অল্প সময়ে মানুষ অনেক সময়ের কাজ করবে, অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাপক হবে, অধিকাংশ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল ও স্বাবলম্বী হয়ে যাবে। তবে মানুষের বিশ্বাস ও ধার্মিকতা কমে যাবে, নৈতিক মূল্যবোধের ব্যাপক অবক্ষয় ঘটবে, পাপ, অনাচার ইত্যাদি ব্যাপকভাবে প্রসার লাভ করবে, মিথ্যা ও ভন্ড নবীগণের আবির্ভাব ঘটবে, হত্যা, সন্ত্রাস, ও বৃহৎ পরিসরের যুদ্ধ হতে থাকবে। এ সকল আলামাত প্রকাশের এক পর্যায়ে বিশেষ আলামতগুলি প্রকাশিত হবে।

[1] বুখারী, আস-সহীহ ৪/১৮৮১, ৫/২০৩১, ২৩৮৫; মুসলিম, আস-সহীহ ২/৫৯২, ২২৬৮-২২৬৯।