জান্নাতবাসীরা পৃথিবীর অবিশ্বাসী সাথীদের অবস্থা দেখতে পাবে

যারা জান্নাতে যাবে পৃথিবীতে তাদের এমন কিছু সহকর্মী, সাথী বন্ধু থাকবে যারা জাহান্নামে যাবে। কারণ, তারা পরকালে বিশ্বাস করতো না। জান্নাতে বসে পৃথিবীর সেই অবিশ্বাসী সঙ্গি-সাথীদের কথা মনে পড়ে যাবে। বলবে, আমার তো অমুক বন্ধু ছিল, কিন্তু সে পরকাল, জান্নাত ও জাহান্নামে বিশ্বাস করতো না। তার অবস্থা এখন কী? সে কোথায় আছে? তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার অবিশ্বাসী বন্ধুদের অবস্থা দর্শন করাবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَأَقۡبَلَ بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ يَتَسَآءَلُونَ ٥٠ قَالَ قَآئِلٞ مِّنۡهُمۡ إِنِّي كَانَ لِي قَرِينٞ ٥١ يَقُولُ أَءِنَّكَ لَمِنَ ٱلۡمُصَدِّقِينَ ٥٢ أَءِذَا مِتۡنَا وَكُنَّا تُرَابٗا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَدِينُونَ ٥٣ قَالَ هَلۡ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ ٥٤ فَٱطَّلَعَ فَرَءَاهُ فِي سَوَآءِ ٱلۡجَحِيمِ ٥٥ قَالَ تَٱللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرۡدِينِ ٥٦ وَلَوۡلَا نِعۡمَةُ رَبِّي لَكُنتُ مِنَ ٱلۡمُحۡضَرِينَ ٥٧﴾ [الصافات: ٥٠، ٥٧]

“অতঃপর তারা মুখোমুখি হয়ে পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করবে। তাদের একজন বলবে, (পৃথিবীতে) আমার এক সঙ্গী ছিল, সে বলত, তুমি কি সে লোকদের অন্তর্ভুক্ত যারা বিশ্বাস করে আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হয়ে যাবো তখনও কি আমাদেরকে প্রতিফল দেওয়া হবে? আল্লাহ বলবেন, তোমরা কি উঁকি দিয়ে দেখবে? অতঃপর সে উঁকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে (পৃথিবীর সঙ্গীকে) দেখবে জাহান্নামের মধ্যস্থলে। সে বলবে, আল্লাহর কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিলে! আমার রবের অনুগ্রহ না থাকলে আমিও তো (জাহান্নামে) হাযিরকৃতদের একজন হতাম”। [সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ৫০- ৫৭]

এ আয়াতসমূহ থেকে আমরা শিখতে পারলাম, পৃথিবীর কর্মস্থল, পড়াশুনা, যাত্রাপথ ইত্যাদি সুত্রে যে সকল সঙ্গী-সাথি আছে তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাসী তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিৎ। যেমন, এ আয়াতে আমরা দেখি জান্নাতী লোকটি বলবে, তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিলে। হ্যা কুরআনের কথা সত্যি। এ সকল অবিশ্বাসী মানুষের সাথে চলাফেরা উঠা-বসা করলে তারা বিশ্বাসীদের আকীদা-বিশ্বাস নষ্ট করে ফেলে।

অন্য আয়াতে এসেছে:

﴿ كُلُّ نَفۡسِۢ بِمَا كَسَبَتۡ رَهِينَةٌ ٣٨ إِلَّآ أَصۡحَٰبَ ٱلۡيَمِينِ ٣٩ فِي جَنَّٰتٖ يَتَسَآءَلُونَ ٤٠ عَنِ ٱلۡمُجۡرِمِينَ ٤١ مَا سَلَكَكُمۡ فِي سَقَرَ ٤٢ قَالُواْ لَمۡ نَكُ مِنَ ٱلۡمُصَلِّينَ ٤٣ وَلَمۡ نَكُ نُطۡعِمُ ٱلۡمِسۡكِينَ ٤٤ وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلۡخَآئِضِينَ ٤٥ وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوۡمِ ٱلدِّينِ ٤٦ حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلۡيَقِينُ ٤٧ فَمَا تَنفَعُهُمۡ شَفَٰعَةُ ٱلشَّٰفِعِينَ ٤٨ فَمَا لَهُمۡ عَنِ ٱلتَّذۡكِرَةِ مُعۡرِضِينَ ٤٩﴾ [المدثر: ٣٨، ٤٩]

“প্রতিটি প্রাণ নিজ অর্জনের কারণে দায়বদ্ধ; কিন্তু ডান দিকের লোকেরা নয়, জান্নাতসমূহের মধ্যে তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে অপরাধীদের সম্পর্কে: কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করালো? তারা বলবে, আমরা সালাত আদায়কারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। আর আমরা অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করতাম না। আর আমরা অনর্থক গল্প-গুজবকারীদের সাথে (বেহুদা আলাপে) মগ্ন থাকতাম। আর আমরা প্রতিদান দিবসকে অবিশ্বাস করতাম। অবশেষে আমাদের কাছে মৃত্যু আগমন করে। অতএব সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোনো উপকার করবে না। আর তাদের কী হয়েছে যে, তারা উপদেশ বাণী থেকে বিমুখ?” [সূরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ৩৮-৪৯]