আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ سَنُدۡخِلُهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ لَّهُمۡ فِيهَآ أَزۡوَٰجٞ مُّطَهَّرَةٞۖ وَنُدۡخِلُهُمۡ ظِلّٗا ظَلِيلًا ٥٧﴾ [النساء: ٥٧]

“আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা হবে স্থায়ী। সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গীগণ এবং তাদেরকে আমি প্রবেশ করাব বিস্তৃত ঘন ছায়ায়”। [সূরা নিসা, আয়াত: ৫৭]

হাদীসে এসেছে: আবু সায়ীদ আল খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ لِأَهْلِ الجَنَّةِ: يَا أَهْلَ الجَنَّةِ، فَيَقُولُونَ: لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالخَيْرُ فِي يَدَيْكَ، فَيَقُولُ: هَلْ رَضِيتُمْ؟ فَيَقُولُونَ: وَمَا لَنَا لاَ نَرْضَى يَا رَبِّ وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ، فَيَقُولُ: أَلاَ أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ، فَيَقُولُونَ: يَا رَبِّ وَأَيُّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ، فَيَقُولُ: أُحِلُّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا»

“আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতবাসীদের বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ! তারা বলবে, উপস্থিত হে রব, সৌভাগ্য ও কল্যাণতো আপনারই হাতে। তারা বলবে, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছো? তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা কেন সন্তুষ্ট হবো না? আপনি আমাদের এমন নেওয়ামত ও সূখ-শান্তি দিয়েছেন যা কখনো অন্য কাউকে দেননি। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আমি কি তোমাদের এরচেয়ে উত্তম কোনো কিছু দেব? তখন তারা বলবে, হে প্রতিপালক! যা দিয়েছেন তার চেয়ে আবার উত্তম কোনো জিনিস আছে কী? আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, আজ থেকে আমার সন্তুষ্টি তোমাদের উপর স্থায়ী হয়ে গেল। আর কোনো দিন তোমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হবো না”।[1]

হাদীস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্টি লাভ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘আমত। ব্যাপারটা আমরা এভাবে বুঝতে পারি, আপনি যদি কোনো এক ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধানের অধীনে চাকুরী করেন। আর সকল দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে যান, তাহলে সে আপনার প্রাপ্য পুরোপুরিভাবে আদায় করবে। আপনাকে নিয়মের মধ্যে থেকে পদোন্নতি দিবে। এরচেয়ে বেশি কি? কিন্তু তিনি যদি আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে আপনাকে তার প্রিয় করে নেন, তাহলে ব্যাপারটা কত বড় হয়ে গেল। তখন শুধু নির্ধারিত বেতন আর পদোন্নতি নয়। পাবেন সব সুখ শান্তি, সম্মান, এমনকি কর্তৃত্বও।

এভাবেই আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের জান্নাতের সুখ শান্তি দিবেন। কিন্তু যখন তিনি ঘোষণা করবেন আমি স্থায়ীভাবে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম, তখন এটার মর্যাদা ও আনন্দ যে কত বিশাল হবে সেটা শুধু তখনই অনুভব করা যাবে।

আল্লাহ তা‘আলা মেহেরবানী করে আমাদের জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত করুন।

হাদীসে এসেছে: আবু সায়ীদ ও আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত. তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«يُنَادِي مُنَادٍ: إِنَّ لَكُمْ أَنْ تَصِحُّوا فَلَا تَسْقَمُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَحْيَوْا فَلَا تَمُوتُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَشِبُّوا فَلَا تَهْرَمُوا أَبَدًا، وَإِنَّ لَكُمْ أَنْ تَنْعَمُوا فَلَا تَبْأَسُوا أَبَدًا " فَذَلِكَ قَوْلُهُ عَزَّ وَجَلَّ: {وَنُودُوا أَنْ تِلْكُمُ الْجَنَّةُ أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ} [الأعراف: 43]»

“জান্নাতে একজন ঘোষক ঘোষণা দিবে: তোমরা সর্বদা সুস্থ থাকবে কখনো রোগাক্রান্ত হবে না। তোমরা চিরদিন জীবিত থাকবে, কখনো মৃত্যু আসবে না। তোমরা চিরদিন যুব থাকবে। বার্ধক্যে তখনো তোমাদের স্পর্ষ করবে না। তোমরা সর্বদা পরিতৃপ্ত থাকবে। কখনো ক্ষুধার্ত হবে না। আর এটা আল্লাহ তা‘আলার সেই কথার বাস্তবায়ন: তাদেরকে ডেকে বলা হবে, ঐ হলো জন্নাত। তোমরা যা কাজ করেছো, তার বিনিময়ে এর উত্তরাধিকারী করা হলো”।[2]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৫১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮২৯।
[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৮৩৭।