কিয়ামত দিবসে দু’টি বিরাট ঘর বা বাসস্থান হবে, যা কখনো ধ্বংস হবে না। একটি হলো জান্নাত আর অন্যটি জাহান্নাম। জান্নাত হলো মুত্তাকীদের বাসস্থান ও জাহান্নাম হলো কাফেরদের বাসস্থান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٍ ﴾

‘‘পুণ্যবানগণ থাকবেন পরমানন্দে। আর পাপাচারীরা থাকবে জাহান্নামে’’। (সূরা আল-ইনফিতার: ১৩-১৪) জান্নাত ও জাহান্নাম দু’টিই বর্তমানে প্রস্ত্তত আছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতীদের ব্যাপারে বলেন,

﴿وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾

‘‘তোমরা দৌড়ে চলো তোমাদের রবের ক্ষমার দিকে এবং জান্নাতের দিকে, যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনের সমান। যা প্রস্ত্তত রাখা হয়েছে মুত্তাকীদের জন্য। (সূরা আলইমরান: ১৩৩) আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম সম্পর্কে বলেন,

﴿وَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ﴾

‘‘তোমরা সেই আগুনকে ভয় করো, যা কাফেরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৩১) এ রকম আরো দলীল প্রমাণ করে যে, জান্নাত ও জাহান্নাম এখনো প্রস্ত্তত আছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মতে এ দু’টি কখনো নিঃশেষ হবে না।

আকীদা তাহাবীয়ার ব্যাখ্যাকারী বলেন, বিশেষভাবে একটি কথা জেনে রাখা দরকার যে, ছাওয়াব পাওয়ার কারণ পাওয়া গেলে আল্লাহ তা‘আলা কাউকে ছাওয়াব থেকে মাহরুম করবেন না। আর সৎ কাজ না করাই হচ্ছে ছাওয়াব না পাওয়ার কারণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنْ يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا﴾

‘‘আর যে ব্যক্তি সৎকাজ করবে, সে পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন, যদি সে মুমিন হয়, তাহলে এ ধরণের লোকেরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দু মাত্র যুলুম করা হবেনা’’। (সূরা নিসা: ১২৪) আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَن يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَا يَخَافُ ظُلْمًا وَلَا هَضْمًا﴾

‘‘আর যে ব্যক্তি সৎ কাজ করবে এবং সেই সাথে সে মুমিনও হবে তার প্রতি কোনো যুলুম বা অধিকার হরণের আশংকা নেই’’। (সূরা তোহা: ১১২) এমনি শাস্তি দেয়ার কারণ না পাওয়া গেলে আল্লাহ তা‘আলা কাউকে বিনা অপরাধে শাস্তি দিবেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ﴾

 ‘‘তোমাদের উপর যে মসিবতই এসেছে তা তোমাদের কৃতকর্মের কারণে। বহু সংখ্যক অপরাধকে তো আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন’’ (সূরা শুরা: ৩০)

সুতরাং আল্লাহ তা‘আলাই দানকারী এবং তিনিই প্রতিহতকারী। তিনি যা দান করেন, কেউ তা প্রতিহত করতে পারে না এবং তিনি যা প্রতিহত করেন, কেউ তা দান করতে পারে না। ভাষ্যকারের উক্তি এখানেই শেষ।

মোটকথা সৎ আমল জান্নাতে প্রবেশের কারণ ও মাধ্যম। ঐদিকে অসৎ কর্ম জাহান্নামে প্রবেশের কারণ। আমরা আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, বান্দার দু‘আ কবুলকারী।