নবীদের কাহিনী নবী চরিত ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
পরিশিষ্ট-১ - ১১. মু‘জেযা সমূহ (معجزاته صــــ)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মু‘জেযা সমূহ গণনা করা সম্ভব নয়। প্রসিদ্ধগুলি নিম্নরূপ:

(১) চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করণ।[1]
(২) মি‘রাজের ঘটনা।[2]
(৩) কা‘বাগৃহে ছালাতরত অবস্থায় মাথায় উটের ভুঁড়ি চাপানো যে সাত জনের বিরুদ্ধে তিনি বদ দো‘আ করেছিলেন, তাদের বদর যুদ্ধে নিহত হওয়া।[3]
(৪) কা‘বাগৃহে ছালাতরত অবস্থায় রাসূল (ছাঃ)-এর মাথা পা দিয়ে পিষে দেওয়ার জন্য এগিয়ে এলে আবু জাহল সম্মুখে অগ্নিগহবর দেখে ভয়ে পিছিয়ে যায়।[4]
(৫) ইয়ামনের যেমাদ আযদী রাসূল (ছাঃ)-কে জিনে ধরা রোগী মনে করে ঝাড়-ফুঁক করতে এলে তিনি তাঁর মুখে ইন্নাল হামদা লিল্লাহ, নাহমাদুহূ... শুনে ইসলাম কবুল করেন।[5]
(৬) মক্কায় একদিন আবুবকরকে সাথে নিয়ে রাসূল (ছাঃ) কোথাও যাচ্ছিলেন। ইবনু মাসঊদ বলেন, তখন আমি উক্ববা বিন আবু মু‘আইতের বকরী চরাচ্ছিলাম। তিনি বললেন, হে বৎস! দুধ আছে কি? আমি বললাম, আছে। কিন্তু আমি তো আমানতদার মাত্র। তখন তিনি বললেন, বাচ্চা (নাবালিকা) ছাগীটি নিয়ে এস। অতঃপর আমি নিয়ে গেলে তিনি তার বাঁট ছুঁয়ে দিলেন। তখন দুধ নেমে আসে। ফলে তিনি ও আবুবকর পেট ভরে পান করেন। অতঃপর তিনি পুনরায় বাঁটে হাত দেন ও দুধ বন্ধ হয়ে যায়। যাওয়ার সময় তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, হে বৎস! আল্লাহ তোমাকে অনুগ্রহ করুন’।[6]

(৭) হিজরতের শুরুতে ছওর গিরিগুহায় অবস্থানকালে শত্রুর আগমন টের পেয়ে তিনি বলেন, আমরা দু’জন নই, তৃতীয় জন আমাদের সাথে আল্লাহ আছেন।[7]
(৮) হিজরতকালে উম্মে মা‘বাদের রুগ্ন বকরীর শুষ্ক পালান দুধে ভরে যাওয়া।[8]
(৯) পিছু ধাওয়াকারী সুরাক্বা বিন মালেকের ঘোড়ার পাগুলি মাটিতে দেবে যাওয়া। অতঃপর ফিরে যাওয়া।[9]
(১০) হিজরতের পরপরই ইহূদী পন্ডিত আব্দুল্লাহ বিন সালামের তিনটি প্রশ্নের জওয়াব দেওয়া। যা নবী ব্যতীত কারু পক্ষে সম্ভব ছিল না।[10]
(১১) হোদায়বিয়ার কূয়া থেকে এবং তাবূকের সফরে হাতের আঙ্গুল সমূহ থেকে শুষ্ক ঝর্ণায় পানির প্রবাহ নির্গমন।[11]
(১২) অন্য এক সফরে তৃষ্ণার্ত হ’লে সওয়ারী এক মহিলার দু’টি মশক থেকে পানি নিয়ে একটি পাত্রে ঢালেন। অতঃপর তা থেকে সাথী ৪০ জন ও সওয়ারীর পশুগুলি পান করে। অতঃপর সমস্ত পাত্র ভরে নেওয়া হয়। এরপরেও মহিলাকে তার মশক দু’টি পূর্ণভাবে পানি ভর্তি অবস্থায় ফেরৎ দেওয়া হয়।[12]

(১৩) একবার মদীনার ‘যাওরা’ বাজারে রাসূল (ছাঃ) একটি পানির পাত্রে হাত রাখলে আঙ্গুল সমূহের ফাঁক দিয়ে এত বেশী পানি প্রবাহিত হয় যে, ৩০০ বা তার কাছাকাছি মানুষ তা পান করে পরিতৃপ্ত হয়।[13]
(১৪) মসজিদে নববীতে দূরাগত মুছল্লীদের ওযূর পানিতে কমতি হ’লে রাসূল (ছাঃ) ছোট্ট একটি পাত্রে হাত ডুবিয়ে দেন। অতঃপর তা থেকে ৮০ জনের অধিক মুছল্লী ওযূ করেন।[14]
(১৫) মসজিদে নববীতে মিম্বর স্থাপিত হ’লে রাসূল (ছাঃ) ইতিপূর্বে খেজুর গাছের যে খুঁটিতে ঠেস দিয়ে খুৎবা দিতেন, সেটি ত্যাগ করে মিম্বরে বসেন। তখন খুঁটিটি শিশুর মত চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকে। রাসূল (ছাঃ) নীচে নেমে তার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলে সে থেমে যায়।[15] তিনি বলেন, যদি আমি তাকে বুকে টেনে আদর না করতাম, তাহ’লে সে ক্বিয়ামত পর্যন্ত এভাবেই কাঁদতে থাকত।[16]
(১৬) গাছ ও পাথরের সিজদা করা।[17]
(১৭) বৃক্ষের হেঁটে চলে আসা ও পুনরায় তার স্থানে ফিরে যাওয়া[18] এবং দু’টি গাছ একত্রিত হয়ে তাঁর জন্য নীচু হয়ে তাঁর হাজত সারার জন্য আড়াল করা।[19]
(১৮) বদর যুদ্ধের দিন মুশরিক নেতাদের নিহত হওয়ার স্থান সমূহ নির্দেশ করা।[20]
(১৯) ঐ দিন ঘোড় সওয়ার ফেরেশতা কর্তৃক তার ঘোড়ার প্রতি নির্দেশ ‘হায়যূম! আগে বাড়ো’ বলার পরেই নিহত শত্রুর পতন হওয়া।[21]
(২০) ওহোদের যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-এর ডাইনে ও বামে সাদা পোষাকধারী দু’জন ব্যক্তির যুদ্ধ করা’। যারা ছিলেন জিবরাঈল ও মীকাঈল।[22]
(২১) তাঁর উম্মৎ সাগরে নৌযুদ্ধে গমন করবে এবং উম্মে হারাম হবেন তাদের অন্যতম। মু‘আবিয়া (রাঃ) ও ইয়াযীদের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হয়।[23]
(২২) রোমকরা পরাজিত হ’লে তিনি বলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই রোমকরা বিজয়ী হবে
(২৩) রোম ও পারস্য সাম্রাজ্য বিজিত হবে। ওমর ও ওছমান (রাঃ)-এর সময় যা বাস্তবায়িত হয়।
(২৪) হাসান বিন আলীর মাধ্যমে মুসলমানদের বিবদমান দু’টি বড় দলের মধ্যে সন্ধি হবে। হাসান (রাঃ)-এর খেলাফত ত্যাগ ও মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর খেলাফত গ্রহণের মাধ্যমে যা বাস্তবায়িত হয়।

(২৫) নাজাশীর মৃত্যুর দিন মদীনায় ছাহাবীদের উক্ত খবর দেওয়া এবং গায়েবানা জানাযা পড়া
(২৬) ভন্ডনবী আসওয়াদ ‘আনাসী আজ রাতে ইয়ামনে নিহত হবে এবং তা বাস্তবায়িত হওয়া
(২৭) খন্দক যুদ্ধে পরিখা খননকালে শক্ত পাথর তাঁর কোদালের আঘাতে গুঁড়া হয়ে বালুর স্তূপে পরিণত হওয়া।[24]
(২৮) আরেকটি পাথরে আঘাত করার পর তার একাংশ ভেঙ্গে পড়লে তিনি বলেন ওঠেন, আল্লাহু আকবর! আমাকে পারস্যের সাম্রাজ্য দান করা হয়েছে...
(২৯) তিন দিন না খেয়ে পেটে পাথর বাঁধা ক্ষুধার্ত রাসূল-কে খাওয়ানোর জন্য ছাহাবী জাবের (রাঃ) একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করলেন এবং তাঁর স্ত্রী এক ছা‘ (আড়াই কেজি) যব পিষে আটা তৈরী করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তখন ঐ সময় পরিখা খননরত ১০০০ ছাহাবীর সবাইকে সাথে নিয়ে আসেন। অতঃপর সকলে তৃপ্তির সাথে খাওয়ার পরেও আগের পরিমাণ আটা ও মাংস অবশিষ্ট থেকে যায়।[25]
(৩০) ক্ষুধার কষ্টে রাসূল (ছাঃ)-এর কণ্ঠস্বর দুর্বল বুঝতে পেরে ছাহাবী আবু ত্বালহা স্ত্রী উম্মে সুলায়েম-কে বললে তিনি তাঁর জন্য কয়েকটি রুটি কাপড়ে জড়িয়ে পুত্র আনাসকে দিয়ে গোপনে পাঠিয়ে দেন। পরে রাসূল (ছাঃ) সকল সাথীকে নিয়ে আবু ত্বালহার বাড়ীতে আসেন। অতঃপর রুটিগুলি টুকরা টুকরা করেন এবং বিসমিল্লাহ বলে ১০ জন করে সবাইকে খেতে বলেন। দেখা গেল ৮০ জন খাওয়ার পরেও আরও উদ্বৃত্ত রইল’।[26] মুসনাদে আহমাদের বর্ণনায় এসেছে, রুটিগুলি দুই মুদ বা অর্ধ মুদ যবের আটার তৈরী ছিল।[27]
(৩১) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খাদ্য ভক্ষণ অবস্থায় (কখনো কখনো) তার তাসবীহ শুনতে পেতাম’।[28]

(৩২) (ক) এক সফরে একটি উট এসে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট অভিযোগ পেশ করে। তখন তিনি মালিককে ডেকে বলেন, এই উটের কাছ থেকে অধিক কাজ নেওয়া হয় এবং তাকে খাদ্য কম দেওয়া হয়। অতএব এর সঙ্গে সদাচরণ কর। (খ) কিছু দুর গিয়ে এক স্থানে রাসূল (ছাঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন। তখন মাটি ফুঁড়ে একটি গাছ উঠে এসে তাঁকে ছায়া করল। অতঃপর চলে গেল। (গ) অতঃপর কিছু দুর গিয়ে একটি ঝর্ণার নিকটে একজন মহিলা তার জিনে ধরা ছেলেকে নিয়ে আসল। রাসূল (ছাঃ) তার নাক ধরে বললেন, বেরিয়ে যাও! আমি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ’। ফেরার পথে উক্ত মহিলাটি তার ছেলের সুস্থতার কথা জানালো’।[29] আনাস (রাঃ) কর্তৃক অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, আনছারদের একটি বাগিচায় গেলে উট এসে তাঁর সামনে সিজদায় পড়ে যায়।[30]

(৩৩) ৫ম হিজরীতে খন্দক যুদ্ধে পরিখা খননের সময় ‘আম্মার বিন ইয়াসিরকে তিনি বলেন, ‘হে ‘আম্মার! জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর। তোমাকে বিদ্রোহী দল হত্যা করবে’।[31] অতঃপর তিনি ৩৭ হিজরীতে আলী ও মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মধ্যে সংঘটিত ছিফফীন যুদ্ধে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে যুদ্ধ করা অবস্থায় ৯৩ বছর বয়সে শহীদ হন’।[32]
(৩৪) ইহূদী নেতা সালাম ইবনুল হুক্বাইক্ব-কে হত্যা শেষে আবু রাফে‘ দুর্গ থেকে ফেরার সময় আব্দুল্লাহ বিন আতীকের এক পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাতে হাত বুলিয়ে দেওয়ার পর তিনি সাথে সাথে পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান।[33]
(৩৫) তোমরা সত্ত্বর মাসজিদুল হারামে বিজয়ী বেশে প্রবেশ করবে বলে স্বপ্ন বর্ণনা। যা হোদায়বিয়ার সন্ধি ও পরবর্তীতে মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
(৩৬) পারস্যরাজ কিসরা তাঁর চিঠি ছিঁড়ে ফেললে তিনি বলেন, তার সাম্রাজ্যকে ছিন্নভিন্ন করুন।
(৩৭) কিসরার গবর্ণর প্রেরিত দূতদ্বয়কে তাদের সম্রাট আজ রাতেই নিহত হবে বলে খবর দেওয়া এবং তা সত্যে পরিণত হওয়া (ছহীহাহ হা/১৪২৯)।
(৩৮) খায়বর যুদ্ধে আহত সালামা বিন আকওয়া‘ পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হ’লে রাসূল (ছাঃ) সেখানে তিনবার থুক মারেন। তাতে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়ে যান।[34]
(৩৯) খায়বর যুদ্ধে বিজয়ের দিন সকালে তিনি বলেন, আজ আমি যার হাতে পতাকা দিব, তার হাতেই বিজয় আসবে। পরে চোখের অসুখে কাতর আলীকে ডেকে এনে তার চোখে হাত বুলিয়ে দেন। তাতে তিনি সুস্থ হয়ে যান। অতঃপর খায়বরের শ্রেষ্ঠ না‘এম দুর্গ জয় করেন।[35]
(৪০) মুতার যুদ্ধে গমনের সময় তিনি সেনাপতি যায়েদ, জা‘ফর ও আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা-এর আগাম শাহাদাতের খবর দেন। অতঃপর যুদ্ধের ময়দানে তাঁদের শাহাদাতের পর মদীনায় দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে সবাইকে তিনি খবর দেন এবং খালেদ বিন অলীদের হাতে যুদ্ধ জয়ের সুসংবাদ দেন।[36]
(৪১) হোনায়েন যুদ্ধে সংকটকালে তিনি এক মুষ্ঠি বালু শত্রুদের দিকে ছুঁড়ে মারেন। তাতে সবাই পালিয়ে যায়।[37]
(৪২) একই যুদ্ধে মুসলিম পক্ষের জনৈক দুর্ধর্ষ যোদ্ধাকে তিনি বলেন, এই ব্যক্তি জাহান্নামী। পরে দেখা গেল তিনি আত্মহত্যা করে মারা গেলেন।[38]

(৪৩) মদীনার লাবীদ বিন আ‘ছাম তার মাথার চুল ও চিরুনীতে জাদু করেন। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় তার নিকটে দু’জন ব্যক্তি এসে বলেন, ‘যারওয়ান’ কূয়ার নীচে সেটি পাথর চাপা দেওয়া আছে। পরে সেখান থেকে সেটি বের করা হয়।[39]
(৪৪) হোনায়েন যুদ্ধে গণীমত বণ্টনকালে তাঁর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশকারী যুল-খুওয়াইছেরাহ-কে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, তার অনুসারী একদল লোক হবে, যাদের ছালাত, ছিয়াম ও তেলাওয়াত তোমাদের চাইতে উত্তম হবে। এরা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে বেরিয়ে যায়।[40] পরবর্তীতে চরমপন্থী খারেজী দলের উদ্ভব উক্ত ছিল ভবিষ্যদ্বাণীরই বাস্তবতা।
(৪৫) আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর দাবীক্রমে তিনি বলেন, চাদর বিছিয়ে দাও। অতঃপর তিনি তাতে দো‘আ করে ফুঁক দিলেন। তাতে তিনি আর কোনদিন হাদীছ ভুলে যাননি।[41]
(৪৬) খরায় আক্রান্ত মদীনায় বৃষ্টির জন্য দো‘আ চাইলে তিনি দো‘আ করেন। ফলে প্রচুর বৃষ্টিতে মদীনার রাস্তা-ঘাট ডুবে যেতে থাকে। তখন তিনি পুনরায় দো‘আ করেন। ফলে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়।[42]

(৪৭) তাবূক যুদ্ধে গমনের সময় যুল-বিজাদায়েনকে তিনি বলেন, তুমি যদি প্রচন্ড জ্বরে মারা যাও, তাতেও তুমি শহীদ হিসাবে গণ্য হবে। পরে তাবূক পৌঁছে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।[43] (৪৮) ফাযালাহ বিন ওবায়েদ (রাঃ) বলেন, তাবূক থেকে ফেরার পথে আমাদের উটগুলি কষ্টে হাসফাস করতে থাকে। তখন রাসূল (ছাঃ) দো‘আ করেন। ফলে মদীনায় আসা পর্যন্ত তারা সবল থাকে’।[44]
(৪৯) আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নেকড়ে একটি বকরীকে ধরে নিল। তখন রাখাল সেটি ছিনিয়ে নিল। নেকড়ে বলল, তুমি কি আল্লাহকে ভয় কর না? তুমি আমার রিযিক ছিনিয়ে নিলে। যা আল্লাহ আমার জন্য পাঠিয়েছিলেন। রাখাল বলল, কি আশ্চর্য! আমার সঙ্গে নেকড়ে মানুষের মত কথা বলছে। তখন নেকড়ে বলল, আমি কি তোমার নিকটে এর চাইতে বিস্ময়কর খবর দিব না? মুহাম্মাদ ইয়াছরিবে এসেছেন। তিনি মানুষকে গায়েবের খবর দিচ্ছেন। তখন রাখালটি দ্রুত মদীনায় প্রবেশ করল এবং এসে দেখল রাসূল (ছাঃ) সমবেত মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে বলছেন, অতদিন ক্বিয়ামত হবে না, যতদিন না পশুরা মানুষের সাথে কথা বলবে...।[45]
(৫০) একদিন তিনি আবুবকর, ওমর ও ওছমানকে সাথে নিয়ে ওহোদ পাহাড়ে ওঠেন। ফলে পাহাড়টি কেঁপে ওঠে। তখন তিনি পা দিয়ে আঘাত করে বলেন, হে পাহাড়! থাম। তোমার উপরে একজন নবী, একজন ছিদ্দীক্ব ও দু’জন শহীদ আছেন’।[46] অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল (ছাঃ) ওছমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আল্লাহ তোমাকে পোষাক পরাবেন। যদি মুনাফিকরা সেই পোষাক খুলে নিতে চায়, তাহ’লে তুমি কখনই তা তাদেরকে খুলে দিয়ো না। একথা তিনি তিনবার বলেন’।[47] বস্তুত এই ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলে যায়।

[1]. বুখারী হা/৩৮৬৮-৬৯; মুসলিম হা/২৮০০; মিশকাত হা/৫৮৫৪-৫৫।

[2]. বুখারী হা/৩৮৮৭; মুসলিম হা/১৬২; মিশকাত হা/৫৮৬২-৬৬।

[3]. বুখারী হা/২৪০, ৫২০; মুসলিম হা/১৭৯৪; মিশকাত হা/৫৮৪৭।

[4]. মুসলিম হা/২৭৯৭; মিশকাত হা/৫৮৫৬।

[5]. মুসলিম হা/৮৬৮; মিশকাত হা/৫৮৬০।

[6]. আহমাদ হা/৩৫৯৮, সনদ ‘হাসান’।

[7]. বুখারী হা/৩৬৫৩; মুসলিম হা/২৩৮১; মিশকাত হা/৫৮৬৮।

[8]. হাকেম হা/৪২৭৪; মিশকাত হা/৫৯৪৩।

[9]. বুখারী হা/৩৬১৫; মুসলিম হা/২০০৯ (৭৫); মিশকাত হা/৫৮৬৯।

[10]. বুখারী হা/৪৪৮০; মিশকাত হা/৫৮৭০।

[11]. বুখারী হা/৩৫৭৬, ৪১৫০; মিশকাত হা/৫৮৮৩-৮৪; মুসলিম হা/৭০৬ (১০)।

[12]. বুখারী হা/৩৫৭১; মিশকাত হা/৫৮৮৪।

[13]. বুখারী হা/৩৫৭২; মুসলিম হা/২২৭৯ (৬); মিশকাত হা/৫৯০৯।

[14]. বুখারী হা/১৯৫।

[15]. বুখারী হা/৩৫৮৪-৮৫; মিশকাত হা/৫৯০৩।

[16]. ইবনু মাজাহ /১৪১৫; ছহীহাহ হা/২১৭৪।

[17]. তিরমিযী হা/৩৬২০; মিশকাত হা/৫৯১৮।

[18]. দারেমী হা/২৩; আহমাদ হা/১২১৩৩; মিশকাত হা/৫৯২৪।

[19]. মুসলিম হা/৩০১২; মিশকাত হা/৫৮৮৫।

[20]. মুসলিম হা/১৭৭৯ (৮৩); মিশকাত হা/৫৮৭১।

[21]. মুসলিম হা/১৭৬৩ (৫৮); মিশকাত হা/৫৮৭৪।

[22]. বুখারী হা/৫৮২৬; মুসলিম হা/২৩০৬ (৪৬); মিশকাত হা/৫৮৭৫।

[23]. বুখারী হা/২৭৮৮-৮৯; মুসলিম হা/১৯১২; মিশকাত হা/৫৮৫৯।

[24]. বুখারী হা/৪১০২; মুসলিম হা/২০৩৯; মিশকাত হা/৫৮৭৭।

[25]. বুখারী হা/৪১০২; মুসলিম হা/২০৩৯; মিশকাত হা/৫৮৭৭।

[26]. বুখারী হা/৫৪৫০; মুসলিম হা/২০৪০; মিশকাত হা/৫৯০৮।

[27]. আহমাদ হা/১৩৪৫২, ১২৫১৩ হাদীছ ছহীহ। উল্লেখ্য যে, চার মুদে এক ছা‘ হয়। যার পরিমাণ আড়াই কেজি চাউলের সমান।

[28]. বুখারী, ফাৎহুল বারী হা/৩৫৭৯; মিশকাত হা/৫৯১০।

[29]. দারেমী হা/১৭; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১৪১৬৮, সনদ ‘হাসান’; মিশকাত হা/৫৯২২, আলবানী বলেন, শাওয়াহেদ-এর কারণে হাদীছ ছহীহ, ঐ, টীকা-১; ছহীহাহ হা/৪৮৫।

[30]. আহমাদ হা/১২৬৩৫, সনদ ‘ছহীহ লে গায়রিহী’; ছহীহ ইবনু হিববান হা/৪১৬২।

[31]. মুসলিম হা/২৯১৫; মিশকাত হা/৫৮৭৮।

[32]. আল-ইছাবাহ, ‘আম্মার ক্রমিক ৫৭০৮; আল-ইস্তী‘আব, ‘আম্মার ক্রমিক ১৮৬৩।

[33]. বুখারী হা/৪০৩৯ ‘যুদ্ধ বিগ্রহ’ অধ্যায়-৬৪, ‘আবু রাফে‘ হত্যা’ অনুচ্ছেদ-১৬।

[34]. বুখারী হা/৪২০৬ ‘খায়বর যুদ্ধ’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/৫৮৮৬।

[35]. বুখারী হা/২৯৪২, ৩৭০১; মুসলিম হা/২৪০৬; মিশকাত হা/৬০৮০।

[36]. মিশকাত হা/৫৮৮৭; বুখারী হা/৪২৬২।

[37]. মুসলিম হা/১৭৭৭ (৮১); মিশকাত হা/৫৮৯১।

[38]. বুখারী হা/৬৬০৬; মিশকাত হা/৫৮৯২।

[39]. বুখারী হা/৫৭৬৫; মুসলিম হা/২১৮৯ (৪৩); মিশকাত হা/৫৮৯৩।

[40]. বুখারী হা/৩৩৪৪; মুসলিম হা/১০৬৪; মিশকাত হা/৫৮৯৪।

[41]. বুখারী হা/২৩৫০; মুসলিম হা/২৪৯৩; মিশকাত হা/৫৮৯৬।

[42]. বুখারী হা/১০১৩; মুসলিম হা/৮৯৭ (৯); মিশকাত হা/৫৯০২।

[43]. হাদীছ ‘হাসান’, তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ১৮৮৭।

[44]. আহমাদ হা/২৪০০১, হাদীছ ছহীহ।

[45]. আহমাদ হা/১১৮০৯, হাদীছ ছহীহ।

[46]. বুখারী হা/৩৬৮৬; তিরমিযী হা/৩৬৯৭; মিশকাত হা/৬০৭৪।

[47]. তিরমিযী হা/৩৭০৫; ইবনু মাজাহ হা/১১২; মিশকাত হা/৬০৬৮ ‘ওছমানের মর্যাদা’ অনুচ্ছেদ।