নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি

৯ম হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে আবুয যুবাইব(أبو الضُّبَيْبِ) এর নেতৃত্বে শাম থেকে ‘বালী’ গোত্রের এই প্রতিনিধি দল মদীনায় আসেন এবং রুওয়াইফি‘ বিন ছাবিত(رُوَيْفِعُ بْنُ ثَابِتٍ الْبَلَوِيّ) এর বাড়ীতে মেহমান হন। তিনি তাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসেন এবং বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এরা আমার কওমের লোক। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ও তার কওমের প্রতিনিধি দলকে ‘মারহাবা’ জানান। অতঃপর তারা ইসলাম কবুল করেন। তখন তাদের উদ্দেশ্যে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাদেরকে ইসলামের প্রতি হেদায়াত দান করেছেন। কেননা যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কিছুর উপরে মৃত্যুবরণ করে, সে জাহান্নামী হবে’। তখন দলনেতা আবুয যুবাইব বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মেহমানদারীর প্রতি আমার আসক্তি রয়েছে। এতে কি আমার জন্য কোন পুরস্কার আছে? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ। প্রত্যেক সৎকর্ম ধনী বা গরীব যার প্রতিই তুমি করবে, সেটি ছাদাক্বা হবে’। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! মেহমানদারীর মেয়াদ কত দিন? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তিনদিন’। অতঃপর প্রশ্ন করলেন, হারানো বকরীর হুকুম কি? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ওটা তোমার বা তোমার ভাইয়ের অথবা নেকড়ের’। তাদের শেষ প্রশ্ন ছিল, হারানো উটের হুকুম কি? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘ওটাকে ছেড়ে দাও, যতক্ষণ না ওর মালিক ওকে পেয়ে যায়’। (উপরে বর্ণিত হাদীছ সমূহ সনদে ও মতনে সরাসরি প্রমাণিত না হ’লেও উক্ত মর্মের ছহীহ হাদীছ সমূহ রয়েছে। -লেখক)

ইসলাম কবুলের পর তারা মেযবানের বাড়ীতে তিন দিন অবস্থান করেন। অতঃপর বিদায়ের সময় রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে উপযুক্ত উপঢৌকনাদি প্রদান করেন (যাদুল মা‘আদ ৩/৫৭৪)

উল্লেখ্য যে, হযরত আমর ইবনুল ‘আছ-এর দাদী ছিলেন এই গোত্রের মহিলা। সেই সুবাদে মুতা যুদ্ধের পর ৮ম হিজরীর জুমাদাল আখেরাতে উক্ত অঞ্চলে তাঁর নেতৃত্বে ৩০০ সৈন্যের একটি বাহিনী পাঠানো হয়। যাতে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে রোমকদের সঙ্গে একজোট না হয়। যেটি ‘সারিইয়া যাতুস সালাসেল’ নামে পরিচিত (যুদ্ধ সমূহ ক্রমিক ৭০)

[শিক্ষণীয় : কেবলমাত্র বিশ্বাস নয় বরং বিধি-বিধান সমূহ পালনের নাম হ’ল ইসলাম।]