নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
নারী-শিশু, পলাতক ও নিরস্ত্রদের হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা نهى قتل النساء والصبيان والهاربين ومن ليس عنده سلاح)

যুদ্ধাবস্থায় একটি নারীর লাশ দেখতে পেয়ে রাসূল (ছাঃ) ধিক্কার দিয়ে বলেন,مَا كَانَتْ هَذِهِ لِتُقَاتِلَ ‘নিশ্চয় এ নারী যুদ্ধের জন্য নয়’। এ সময় তিনি খালেদ বিন অলীদকে খবর পাঠান,لاَ يَقْتُلَنَّ امْرَأَةً وَلاَ عَسِيْفًا ‘কোন নারী এবং কোন নিরস্ত্র ব্যক্তিকে যেন কেউ হত্যা না করে’।[1] এমনিভাবে তিনি শিশুদেরকে হত্যা করতে নিষেধ করেন। যখন তিনি শুনলেন যে, মুশরিকদের সন্তান মনে করে কেউ কেউ তাদের হত্যা করেছে। তিনি বললেন, هَلْ خِيَارُكُمْ إِلاَّ أَوْلاَدُ الْمُشْرِكِينَ وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا مِنْ نَسَمَةٍ تُولَدُ إِلاَّ عَلَى الْفِطْرَةِ حَتَّى يُعْرِبَ عَنْهَا لِسَانُهَا ‘তোমাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিগণ কি মুশরিকদের সন্তান নন? যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন তাঁর কসম করে বলছি, প্রত্যেক সন্তানই ফিৎরাতের উপর জন্ম গ্রহণ করে, যতক্ষণ না সে কথা বলতে শেখে’ (আহমাদ হা/১৫৬২৬, ১৬৩৪২)। এতদ্ব্যতীত যারা পালিয়ে গিয়েছিল, তাদের কাউকে রাসূল (ছাঃ) ধমকাননি। বরং যখন আনাস (রাঃ)-এর মা উম্মে সুলায়েম তাঁকে বললেন, মক্কার নও মুসলিম পলাতকদের হত্যা করার জন্য। কারণ তাদের কারণেই পরাজয় হচ্ছিল। তখন জবাবে তিনি বলেন,يَا أُمَّ سُلَيْمٍ إِنَّ اللهَ قَدْ كَفَى وَأَحْسَنَ ‘হে উম্মে সুলায়েম! নিশ্চয়ই আল্লাহ যথার্থ করেছেন ও সুন্দর ফায়ছালা করেছেন’। এ সময় উম্মে সুলায়েম আত্মরক্ষার জন্য দু’ধারি লম্বা অস্ত্র ‘খঞ্জর’ (خَنْجَرٌ) বহন করছিলেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কেন? জবাবে তিনি বললেন, কোন মুশরিক কাছে এলে আমি এটা দিয়ে তার পেট ফেঁড়ে ফেলব। তার কথা শুনে রাসূল (ছাঃ) হাসতে থাকেন’ (মুসলিম হা/১৮০৯ (১৩৪)

প্রথমোক্ত দলের পশ্চাদ্ধাবনের জন্য ১০০০ সৈন্যসহ খালেদ বিন অলীদকে ত্বায়েফে পাঠানো হয়। দ্বিতীয় দলটির জন্য আবু ‘আমের আল-আশ‘আরীকে একটি সেনাদল সহ আওত্বাসে পাঠানো হয়। তিনি তাদের উপরে জয়লাভ করেন। কিন্তু তাদের নিক্ষিপ্ত তীরের আঘাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তৃতীয় দলটির পিছনে যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়ামের নেতৃত্বে একদল অশ্বারোহীকে নাখলায় পাঠানো হয়। যাদের হাতে তারা পরাভূত হয় এবং তাদের প্রবীণ নেতা দুরাইদ বিন ছিম্মাহ নিহত হন। যিনি যুদ্ধে আদৌ ইচ্ছুক ছিলেন না।

[1]. আবুদাঊদ হা/২৬৬৯; ইবনু হিশাম ২/৪৫৭-৫৮।