নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
মুসলিম বাহিনীর মার্রুয যাহরান ত্যাগ (مغادرة مر الظهران للجيش الإسلامى)

১৭ই রামাযান সোমবার সকালে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) মার্রুয যাহরান ত্যাগ করে মক্কায় প্রবেশের জন্য যাত্রা শুরু করলেন।[1] তিনি আববাসকে বললেন যে, আপনি আবু সুফিয়ানকে নিয়ে উপত্যকা থেকে বের হওয়ার মুখে সংকীর্ণ পথের পার্শ্বে পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে থাকবেন। যাতে সে মুসলিম বাহিনীর সংখ্যা ও শক্তি স্বচক্ষে দেখতে পারে। আববাস (রাঃ) তাই-ই করলেন। এরপর যখনই স্ব স্ব পতাকা সহ এক একটি গোত্র ঐ পথ অতিক্রম করে, তখনই আবু সুফিয়ান আববাসের নিকটে ঐ গোত্রের পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। যেমন আসলাম, গেফার, জোহায়না, মুযায়না, বনু সোলায়েম ও অন্যান্য গোত্র সমূহ। কিন্তু আবু সুফিয়ান ঐসব লোকদের তেমন মূল্যায়ন না করে বলেন, এদের সাথে আমার কি সম্পর্ক? এরপরে যখন আনছার ও মুহাজির পরিবেষ্টিত হয়ে লোহার বর্ম পরিহিত অবস্থায় জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে একটি বিরাট দলকে আসতে দেখলেন তখন আবু সুফিয়ান বলে উঠলেন, সুবহানাল্লাহ হে আববাস এরা কারা? আববাস (রাঃ) বললেন, মুহাজির ও আনছার বেষ্টিত হয়ে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আসছেন’। আবু সুফিয়ান বিস্ময় ভরা কণ্ঠে বললেন,مَا لِأَحَدٍ بِهَؤُلاَءِ قِبَلٌ وَلاَ طَاقَةٌ ‘কারু পক্ষে এদের মুকাবিলার ক্ষমতা বা শক্তি হবে না’। অতঃপর বললেন,واللهِ يَا أَبَا الْفَضْلِ لَقَدْ أَصْبَحَ مُلْكُ ابْنِ أَخِيكَ الْيَوْمَ عَظِيمًا ‘আল্লাহর কসম, হে আবুল ফযল! তোমার ভাতিজার সাম্রাজ্য তো আজ অনেক বড় হয়ে গেছে’। আববাস (রাঃ) বললেন,يَا أَبَا سُفْيَانَ إنَّهَا النُّبُوَّةُ ‘হে আবু সুফিয়ান, এটা (রাজত্ব নয় বরং) নবুঅত’। আবু সুফিয়ান বললেন,نَعَمْ إِذَنْ ‘হ্যাঁ, তাহ’লে তাই’।[2]

[1]. মানছূরপুরী ৮ম হিজরীর ২০শে রামাযান বলেছেন (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন ১/১১৮, ২/৩৬৮)। যা ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই জানুয়ারী বৃহস্পতিবার হয়। মুবারকপুরী ৮ম হিজরীর ১৭ই রামাযান মঙ্গলবার বলেছেন (আর-রাহীক্ব ৪০১ পৃঃ)। আধুনিক গণনায় ১৭ই রামাযান সোমবার হয়। আলোচনা দ্রষ্টব্য : ‘মক্কা বিজয়’ অধ্যায়, টীকা-৭৩২-৩৩।

[2]. ইবনু হিশাম ২/৪০৪; আলবানী, ফিক্বহুস সীরাহ পৃঃ ৩৭৮, হায়ছামী, মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ, সনদ ছহীহ।