নবীদের কাহিনী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) - মাদানী জীবন ডঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ১ টি
ওহোদ যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য বিষয়সমূহ- ৭. নিজেদের হাতে নিজেদের মৃত্যু (اقتتال بالخطأ بين المسلمين)

খালেদ বিন ওয়ালীদের অতর্কিত হামলায় দিশেহারা মুসলিম বাহিনীর মধ্যে দু’ধরনের লোকের সৃষ্টি হয়। একদল কাফিরদের বেষ্টনীর মধ্যে পড়ে জান বাঁচানোর জন্য পালিয়ে গিয়ে মদীনায় ঢুকে পড়ে এবং কেউ পাহাড়ের মাথায় উঠে পড়ে। অন্যদল শত্রুসেনাদের মধ্যে মিশে যায়। এ বিষয়ে মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ওহোদ যুদ্ধের দিন মুশরিকরা পরাজিত হয়। এরপর ইবলীস ডাক দিয়ে বলে, أَىْ عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ ‘ওহে আল্লাহর বান্দারা পিছনে’ (অর্থাৎ পিছন দিক থেকে আক্রমণ কর)’। তার কথায় সামনের সারির সৈন্যরা পিছন দিকে ফিরে আসে এবং পিছনের সারির সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। হুযায়ফা (রাঃ) দেখেন যে, তাঁর পিতা ইয়ামানের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। তিনি তখন বলে ওঠেন, أَىْ عِبَادَ اللهِ، أَبِى أَبِى ‘হে আল্লাহর বান্দারা! উনি আমার পিতা, উনি আমার পিতা’। কিন্তু আল্লাহর কসম! (মুসলিম) সৈন্যরা আক্রমণ হ’তে বিরত হ’ল না। অতঃপর তারা তাঁকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা বললেন, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন! উরওয়া বলেন, ‘আল্লাহর কসম! হুযায়ফা-র মধ্যে সর্বদা কল্যাণ বিরাজমান ছিল। অবশেষে তিনি আল্লাহ তা‘আলার সাথে মিলিত হন’ (বুখারী হা/৪০৬৫)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, তখন হুযায়ফা (রাঃ) বলেন,يَغْفِرُ اللهُ لَكُمْ وَهُوَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ ‘আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন! তিনি শ্রেষ্ঠ দয়াশীল’। রাসূল (ছাঃ) তাকে তার পিতার রক্তমূল্য দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা না নিয়ে মাফ করে দেন।[1]

[1]. ইবনু হিশাম ২/৮৭-৮৮; বর্ণনাটির সনদ ছহীহ (তাহকীক ইবনু হিশাম ক্রমিক ১১৪৬); হাকেম হা/৪৯০৯, ৩/২০২ পৃঃ।