মহান আল্লাহ বলেন,

إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ (22) عَلَى الْأَرَائِكِ يَنظُرُونَ (23) تَعْرِفُ فِي وُجُوهِهِمْ نَضْرَةَ النَّعِيمِ (24)

অর্থাৎ, পুণ্যবানগণ তো থাকবে পরম স্বাচ্ছন্দ্যে। তারা সুসজ্জিত আসনে বসে দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখমণ্ডলে স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবে। (মুতাফফিফীনঃ ২২-২৪)।

জান্নাতীগণ জান্নাতে পরিপূর্ণ নেয়ামত লাভ করবে। নিজ দেহ ও আকৃতি-প্রকৃতিতেও পরিপূর্ণ শক্তি ও সৌন্দর্য লাভ করবে। সকলেই আদি পিতা আদম (আঃ)-এর মত দীর্ঘ দেহী হবে ষাট হাত। তাদের হৃদয়ও হবে একটি মানুষের হৃদয়ের মতো, পবিত্র ও নির্মল।

জান্নাতে জান্নাতীরা অসীম রূপবান ও রূপবতী হবে। তাদের অপ্রয়োজনীয় কোন লোম থাকবে না। পুরুষদের গোঁফ-দাড়িও থাকবে না। চক্ষুযুগল হবে কাজলবরণ। সকলেই হবে ৩৩ বছরের যুবক।

রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “জান্নাতের প্রথম প্রবেশকারী দলটির আকৃতি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত হবে। অতঃপর তাদের পরবর্তী দলটি আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় জ্যোতির্ময় হবে। তারা (জান্নাতে) পেশাব করবে না, পায়খানা করবে না, থুথু ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুণী হবে স্বর্ণের। তাদের ঘাম হবে কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধ কাঠ। তাদের স্ত্রী হবে আয়তলোচনা হুরগণ। তারা সকলেই একটি মানব কাঠামো, আদি পিতা আদমের আকৃতিতে হবে (যাদের উচ্চতা হবে) ষাট হাত পর্যন্ত।” (বুখারী-মুসলিম)

বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, “(জান্নাতে) তাদের পাত্র হবে স্বর্ণের, তাদের গায়ের ঘাম হবে কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন দু’জন স্ত্রী থাকবে, যাদের সৌন্দর্যের দরুন মাংস ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের মজ্জা দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না। পারস্পরিক বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর একটি অন্তরের মত হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠে রত থাকবে।”

রাসুলল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “জান্নাতবাসীরা জান্নাতের মধ্যে পানাহার করবে; কিন্তু পায়খানা করবে না, তারা নাক ঝাড়বে না, পেশাবও করবে না। বরং তাদের ঐ খাবার ঢেকুর ও কস্তুরীবৎ সুগন্ধময় ঘাম (হয়ে দেহ থেকে বের হয়ে যাবে)। তাদের মধ্যে তাসবীহ ও তাকবীর পড়ার স্বয়ংক্রিয় শক্তি প্রক্ষিপ্ত হবে, যেমন শ্বাসক্রিয়ার শক্তি স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে।” (মুসলিম)

তিনি আরো বলেন, “জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তারা লোম ও শুশ্রুবিহীন হবে। যেন তাদের চোখে সুরমা লাগানো হয়েছে। তাদের বয়স হবে (ত্রিশ অথবা) তেত্রিশ।” (আহমাদ, তিরমিযী)

দুনিয়াতে বিশ্রাম গ্রহণকারীরা বিশ্রাম নেয়। কোন ক্লান্তি থেকে আরাম নেয় ও গভীরভাবে নিদ্রা যায়। জান্নাতে কোন ক্লান্তি নেই, নিদ্রা নেই। নিদ্রা হলে যে আরাম ও আনন্দ চলে যাবে। তাছাড়া নিদ্রা হল এক প্রকার মৃত্যু। জান্নাতে কোন প্রকার মৃত্যু নেই। (সিঃ সহীহাহ ১০৮৭নং)