প্রশ্নঃ (১৪৫) তাকদীরে উমরী, যা মাতৃগর্ভে বীর্য থেকে সন্তান তৈরী হওয়ার সময় সম্পন্ন হয় তার দলীল কি?

উত্তরঃ তাকদীরে উমরী, যা মাতৃগর্ভে বীর্য থেকে সন্তান তৈরী হওয়ার সময় সম্পন্ন হয় তার অসংখ্য দলীল রয়েছে। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ

هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنْشَأَكُمْ مِنَ الأَرْضِ وَإِذْ أَنْتُمْ أَجِنَّةٌ فِي بُطُونِ أُمَّهَاتِكُمْ فَلاَ تُزَكُّوا أَنْفُسَكُمْ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَى

‘‘তিনি তোমাদের সম্পর্কে ভাল জানেন, যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং এ সময় তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রুণ হিসেবে ছিলে। অতএব তোমরা নিজেদের প্রশংসা করো না। তিনি ভাল জানেন কে মুত্তাকী’’। (সূরা নাজমঃ ৩২) আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

(إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ثُمَّ يَكُونُ فِي ذَلِكَ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يَكُونُ فِي ذَلِكَ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ يُرْسَلُ الْمَلَكُ فَيَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ وَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأَجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ فَوَالَّذِي لاَ إِلَهَ غَيْرُهُ إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُهَا وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا)

‘‘তোমাদের কারো সৃষ্টি তার মাতৃগর্ভে প্রথমে চল্লিশ দিন বীর্য আকারে সঞ্চিত থাকে। পরবর্তী চল্লিশ দিনে উহা জমাট রক্তে পরিণত হয়। এরপর আরো চল্লিশ দিনে উহা মাংশ পিন্ডে রূপান্তরিত হয়। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা একজন ফেরেস্তা প্রেরণ করেন। সে তাতে রূহ ফুঁকে দেয়। এসময় তাকে চারটি বিষয় লিখার নির্দেশ দেয়া হয়ঃ (১) সে কি পরিমাণ রিযিক পাবে। (২) বয়স কত হবে। (৩) কর্ম কি হবে এবং (৪) পরিণামে সে ভাগ্যবান হবে না হতভাগ্য। শপথ সেই আল্লাহ্র যিনি ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, তোমাদের মধ্যে একজন জান্নাতবাসীদের আমল করতে থাকে, এমনকি তার মাঝে এবং জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাতের দূরত্ব অবশিষ্ট থাকে, এমন সময় (তক্দীরের) লিখন সামনে চলে আসে। অতঃপর সে জাহান্নামবাসীদের মত আমল করে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করে। এমনিভাবে একজন জাহান্নামবাসীদের মত আমল করতে থাকে, এমনকি তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক হাতের দূরত্ব অবশিষ্ট থাকে, এমন সময় (তক্দীরের) লিখন সামনে চলে আসে। অতঃপর সে জান্নাতবাসীদের মত আমল করে এবং জান্নাতে প্রবেশ করে।[1] এ হাদীছটি ব্যতীত এবিষয়ে একদল সাহাবী থেকে আরো সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। সবগুলা হাদীছের ভাবার্থ একই।

[1] - (সহীহ) বুখারী, অধ্যায়ঃ বাদ্উল খাল্ক, অনুচ্ছেদঃ ফেরেশতাদের আলোচনা, হাদীছ নং- ২৯৬৯, মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল কাদর, অনুচ্ছেদঃ মানব সৃষ্টির তিনটি পর্যায়, হাদীছ নং- ৪৭৮১।