পবিত্র আত্মা: পাক রূহ (Holy Spirit), পবিত্র ভূত (Holy Ghost), ঈশ্বরের আত্মা (Spirit of God/ Spirit of the LORD) শব্দগুলি বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মে অনেক স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। কোথাও একে ‘ঈশ্বর’ বা ‘ঈশ্বরের তিন ব্যক্তির এক ব্যক্তি’ বলে উল্লেখ করা হয় নি। বরং কখনো মানুষ, কখনো নবী, কখনো ফিরিশতা এবং কখনো আল্লাহর প্রেরণা বুঝানো হয়েছে। যেমন: “সদাপ্রভু কহিলেন, আমার আত্মা মনুষ্যদের মধ্যে নিত্য অধিষ্ঠান করিবে না; কারণ সেও তো মাংস মাত্র (My Spirit shall not always strive with man, for that he also is flesh) পরন্তু তাহাদের সময় এক শত বিংশতি বৎসর হইবে। (আদিপুস্তক ৬/৩) এখানে আল্লাহর আত্মা বলতে সুস্পষ্টত আল্লাহর সৃষ্ট মানবাত্মা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর রূহ বা মানবাত্মা অমর হবে না; বরং সীমিত বৎসর- ১২০ বৎসর!- আয়ু লাভ করবে।

অন্যত্র আল্লাহ মৃতদেরকে জীবন দান প্রসঙ্গে বলেন: “আর আমি তোমাদের মধ্যে আপন আত্মা দিব (And shall put my spirit in you)।” (যিহিষ্কেল ৩৭/১৪)। এখানেও “আল্লাহর রূহ” বলতে ‘মানবীয় আত্মা’ বা জীবন বুঝানো হয়েছে।

প্রচলিত ইঞ্জিলগুলির মধ্যে বিদ্যমান ঈসা মাসীহের বক্তব্যে পবিত্র আত্মা ও পবিত্র ভূতের কথা কয়েকবার এসেছে। কোথাও তিনি তাকে আল্লাহ বা আল্লাহর তিন ব্যক্তির একব্যক্তি বলে উল্লেখ করেন নি। বরং বাহ্যত তিনি তাঁকে আল্লাহর ওহীর বাহক হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন: “আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যদের সকল পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হইবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হইবে না। আর যে কেহ মনুষ্যপুত্রের (ঈসা মাসীহের) বিরুদ্ধে কোনো কথা কহে সে ক্ষমা পাইবে, কিন্তু যে কেহ পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা কহে সে ক্ষমা পাইবে না, ইহকালেও নয়, পরকালেও নয়।” (মথি ১২/৩১-৩২)

এখানে পবিত্র আত্মা অর্থ ওহীর বাহক। পবিত্র আত্মার মাধ্যমেই নবীগণ ওহী লাভ করেন। এজন্য যীশু বললেন, যদি কেউ সত্য নবীর ওহী লাভের দাবি অবিশ্বাস করে অথবা ওহীর নামে মিথ্যা বলে তবে দুনিয়া ও আখিরাতে তাকে শাস্তি পেতে হবে। এজন্যই বাইবেলের বিধান: ওহীর নামে মিথ্যা বললে দুনিয়াতেই নিহত হতে হবে।

সাধু পলই সর্বপ্রথম পবিত্র আত্মা বা ঈশ্বরের আত্মা বলতে পৃথক ঐশ্বরিক সত্ত্বা ও স্বয়ং সম্পূর্ণ ঈশ্বর বলে দাবি করেন। (রোমীয় ৮/২)