প্রশ্ন: শোক পালনের ক্ষেত্রে চল্লিশা, বাৎসরিক পালন এবং কুরআন তেলাওয়াত (কুরআন খানী) ইত্যাদি রেওয়াজের হুকুম কি?

উত্তর: শরীয়তে এ সমস্ত ইবাদতের যেমন কোনো স্থান নেই, তেমনি এর কোনো ভিত্তিও নেই বরং তা বিদ‘আত এবং জাহেলী যুগের কাজ। কেউ মারা গেলে শোক পালনের জন্য আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদেরকে দাওয়াত করে খাওয়ানো ঠিক নয় বরং বিদ‘আত। এমনিভাবে সাপ্তাহিক বা বাৎসরিক অনুষ্ঠান করা জাহেলিয়া যুগের বিদ‘আত। মৃতের পরিবারের সদস্যদের করণীয় হলো ধৈর্য্য ধারণ করে পূণ্যের আশা করা এবং ধৈর্যশীলদের মত বলা (ইন্না লিল্লাহি অ-ইন্না ইলাইহি রাজি‘উন)। আল্লাহ তাদেরকে অঙ্গীকার দিয়েছেন, তাদের উপর তাদের রবের পক্ষ থেকে রহমত নাযিল হবে এবং তারাই হেদায়েত প্রাপ্ত। [সূরা বাকারা ১৫৭] কিন্তু মৃত ব্যক্তির লোকেরা তাদের নিজেদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করলে কোনো অসুবিধা নেই।

মুসলিমদের জন্য বৈধ কাজ হলো: তাদের কেউ মারা গেলে তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া এবং রহমত কামনা করা আর এ সমস্ত জাহেলিয়া যুগের অনুষ্ঠানাদি ছেড়ে দেওয়া। আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের জন্য করণীয় হলো: মৃতের পরিবারের জন্য খাবার তৈরী করা, কেননা তারা বিপদগ্রস্ত। আব্দুল্লাহ ইবন জা‘ফর ইবন আবু তালেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর হাদীসে এসেছে যে, “জা’ফর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন মুতার যুদ্ধে শহীদ হন তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদীনায় তাঁর পরিবারকে নির্দেশ দিলেন জা‘ফরের পরিবারের জন্য খাবার তৈরী করতে, তিনি বলেছিলেন: কেননা তাদের উপর সেই জিনিস এসেছে যা তাদেরকে ব্যস্ত রাখবে।” কিন্তু মৃতের পরিবার অন্য লোকদের জন্য খাবার তৈরী করবে না। তারা যদি তাদের নিজেদের জন্য বা দূরবর্তী মেহমানদের জন্য তৈরী করে তাহলে কোনো অসুবিধা নেই।