(৩) মৃত স্বামী বা স্ত্রীকে দেখতে ও গোসল করাতে না দেয়া

কুধারণা চালু আছে যে, স্বামী বা স্ত্রী কেউ মারা গেলে অপরের জন্য তালাক হয়ে যায়। তাই তাকে গোসল দেয়া কিংবা দেখতে দেয়া নাজায়েয। সমাজে উক্ত অভ্যাস ব্যাপকভাবে প্রচলিত। কথিত আলেমরাও এ ফৎওয়া জারি করে রেখেছেন। অথচ এটা মূর্খতা ও সুন্নাতের বিরুদ্ধাচরণ। কারণ উক্ত মর্মে স্পষ্ট ছহীহ হাদীছ এসেছে।

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ رَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ مِنَ الْبَقِيْعِ فَوَجَدَنِىْ وَأَنَا أَجِدُ صُدَاعًا فِىْ رَأْسِىْ وَأَنَا أَقُوْلُ وَارَأْسَاهُ فَقَالَ بَلْ أَنَا يَا عَائِشَةُ وَارَأْسَاهُ ثُمَّ قَالَ مَا ضَرَّكِ لَوْ مِتِّ قَبْلِىْ فَقُمْتُ عَلَيْكِ فَغَسَّلْتُكِ وَكَفَّنْتُكِ وَصَلَّيْتُ عَلَيْكِ وَدَفَنْتُكِ.

আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বাক্বীউল গারক্বাদ থেকে যখন ফিরে আসলেন, তখন তিনি আমাকে মাথার যন্ত্রণা অবস্থায় পেলেন। আমি বলছিলাম, হ্যায় আমার মাথা ব্যথা! তখন রাসূল (ছাঃ) বলছিলেন, আয়েশা! বরং আমার মাথায় ব্যথা হয়েছে। অতঃপর তিনি বলেন, তোমার কোন সমস্যা নেই। তুমি যদি আমার পূর্বে মারা যাও তবে আমি তোমার পাশে থাকব, তোমাকে গোসল দিব, তোমাকে কাফন পরাব এবং তোমার জানাযার ছালাত আদায় করব।[1]

عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ عُمَيْسٍ قَالَتْ غَسَّلْتُ أَنَا وَعَلِىٌّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ

আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) বলেন, আমি এবং আলী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা ফাতেমাকে গোসল দিয়েছি।[2] অন্য দিকে আয়েশা (রাঃ) বলেন,

لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِىْ مَا اسْتَدْبَرْتُ مَا غَسَّلَهُ إِلاَّ نِسَاؤُهُ

‘পরে যা জানলাম তা যদি আগে জানতাম, তবে রাসূল (ছাঃ)-কে তাঁর স্ত্রীরা ছাড়া কেউ গোসল দিতে পারত না’।[3]

অতএব স্বামী আগে মারা গেলে স্ত্রী, কিংবা স্ত্রী আগে মারা গেলে স্বামী উভয় উভয়কে গোসল দেয়ার বেশী হকদার। এর বিরুদ্ধাচরণ করার অর্থই হল শরী‘আতের মর্যাদা নষ্ট করা। মৃত্যুর পর সম্পদের ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, অথচ তাকে দেখতে পারবে না, গোসল দিতে পারবে না কেন? এগুলো স্রেফ মূর্খতা।

[1]. ইবনু মাজাহা হা/১৪৬৫, পৃঃ ১০৫, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯; সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল হা/৭০০, ৩/১৬০ পৃঃ।

[2]. হাকেম হা/৪৭৬৯; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৯০৭; বায়হাক্বী, মা‘রেফাতুস সুনান ওয়াল আছার হা/২১৫৭; দারাকুৎনী হা/১৮৭৩; সনদ হাসান, ইওয়াউল গালীল হা/৭০১।

[3]. আবুদাঊদ হা/৩১৪১, ২/৪৪৮ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩২; সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল হা/৭০২, ৩/১৬২ পৃঃ।