জামা‘আতের চেয়ে আউয়াল ওয়াক্ত বেশী গুরুত্বপূর্ণ

জামা‘আতের চেয়ে আউয়াল ওয়াক্ত বেশী গুরুত্বপূর্ণ :

عَنْ أَبِىْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللهِ كَيْفَ أَنْتَ إِذَا كَانَتْ عَلَيْكَ أُمَرَاءُ يُؤَخِّرُوْنَ الصَّلاَةَ عَنْ وَقْتِهَا أَوْ يُمِيْتُوْنَ الصَّلاَةَ عَنْ وَقْتِهَا قَالَ قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِىْ قَالَ صَلِّ الصَّلاَةَ لِوَقْتِهَا فَإِنْ أَدْرَكْتَهَا مَعَهُمْ فَصَلِّ فَإِنَّهَا لَكَ نَافِلَةٌ.

আবুযার (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাকে বলেছেন, আমীরগণ যখন ছালাতের ওয়াক্ত থেকে সরিয়ে ছালাত দেরী করে পড়বে বা ছালাতকে তার ওয়াক্ত থেকে মেরে ফেলবে, তখন তুমি কী করবে? আমি তখন বললাম, আপনি আমাকে কী করতে বলছেন? তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, ছালাতের সময়েই ছালাত আদায় করে নাও। অতঃপর তাদের সাথে যদি আদায় করতে পার, তাহলে আদায় কর। তবে তা তোমার জন্য নফল হবে।[1]

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ يَعْجَبُ رَبُّكُمْ مِنْ رَاعِى غَنَمٍ فِىْ رَأْسِ شَظِيَّةٍ بِجَبَلٍ يُؤَذِّنُ بِالصَّلاَةِ وَيُصَلِّىْ فَيَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوْا إِلَى عَبْدِىْ هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيْمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّىْ فَقَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِىْ وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ.

উক্ববা ইবনু আমের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমাদের প্রতিপালক আনন্দিত হন ঐ ছাগলের রাখালের প্রতি, যে একা পর্বত শিখরে দাঁড়িয়ে ছালাতের আযান দেয় এবং ছালাত আদায় করে। আল্লাহ তা‘আলা তখন ফেরেশতাগণকে লক্ষ্য করে বলেন, তোমরা আমার বান্দার প্রতি লক্ষ্য কর! সে আমার ভয়ে আযান দিচ্ছে এবং ছালাত আদায় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালাম।[2]

সুধী পাঠক! উক্ত কুরআনের আয়াত ও হাদীছ সমূহের মাধ্যমে আউয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায়ের গুরুত্ব পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। এমনকি জামা‘আতে ছালাত আদায়ের চেয়ে ওয়াক্তকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ওয়াক্ত অনুযায়ী ছালাত আদায় করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোরও অঙ্গীকার করেছেন। এমনকি কোন রাখালও যদি ওয়াক্ত অনুযায়ী একাকী ছালাত আদায় করে, তবুও তাকে ক্ষমা করে দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করান। অতএব দেরী করে নয়, বরং ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে ছালাত আদায় করা অপরিহার্য। বিশেষ করে রাসূল (ছাঃ) ফজর ও আছর ছালাতের ব্যাপারে খুব কঠোরতা আরোপ করেছেন। অথচ ফজর ও আছর ছালাতের ক্ষেত্রেই বেশী অবহেলা করা হয়। এত ছহীহ হাদীছ থাকতে অধিকাংশ মুছল্লী কেন জাল ও যঈফ হাদীছের আলোকে ছালাত আদায় করছে? এটা কি কোন অদৃশ্যের চক্রান্ত? মুসলিম উম্মাহকে কোনদিন ঐক্যবদ্ধ হতে দিবে না- এটাই তার নীল নকশা। আমরা মুসলিম হিসাবে মাযহাবী গোঁড়ামীকে অগ্রাধিকার দেব, না রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শকে অগ্রাধিকার দেব এখন সেটাই দেখার বিষয়।

নোটঃ জমহুর আলেমদের মত অনুসারে জামাতের গুরুত্ব বেশি তবে তা অবশ্যই ওয়াক্তের বাইরে গিয়ে নয় - বাংলা হাদিস

[1]. ছহীহ মুসলিম হা/১৪৯৭, ১/২৩০ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৩৩৮); মিশকাত হা/৬০০, পৃঃ ৬০-৬১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৫২, ২য় খন্ড, পৃঃ ১৭৭।

[2]. আবুদাঊদ হা/১২০৩, ১/১৭০ পৃঃ; নাসাঈ হা/৬৬৬, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৬৬৫, পৃঃ ৬৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৬১৪, ২/২০২ পৃঃ।