(১৫) মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়া

(১৫) মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়া :

আল্লাহর ঘর মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়া জঘন্য অপরাধ। অনেক মসজিদে শিরক ও বিদ‘আত মিশ্রিত প্রচারপত্র ও লিফলেট ও দামী তাসবীহ ঝুলতে দেখা যায়। অথচ ছাহাবায়ে কেরাম মসজিদে বিদ‘আতী কর্মকান্ড হওয়াকে গুরুতর অপরাধ মনে করতেন।

عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ ابْنِ عُمَرَ فَثَوَّبَ رَجُلٌ فِى الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ قَالَ اخْرُجْ بِنَا فَإِنَّ هَذِهِ بِدْعَةٌ.

মুজাহিদ (রাঃ) বলেন, আমি একদা ইবনু ওমর (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম। যোহর কিংবা আছরের আযানের পর জনৈক ব্যক্তি মানুষকে ডাকাডাকি করছে। তখন ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, তোমরা আমাকে এই মসজিদ থেকে বের করে নাও। কারণ এটা বিদ‘আত।[1]

বিদ‘আতের ঘৃণায় তিনি উক্ত মসজিদে ছালাত আদায় না করে বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে মসজিদগুলোতে সকাল-সন্ধ্যায় বিদ‘আতী যিকিরের মজলিস বসানো হচ্ছে, গোল হয়ে বসে মিথ্যা ও বানোয়াট কাহিনী বর্ণনা করা হচ্ছে, তাসবীহ দানা দ্বারা তাসবীহ জপা হচ্ছে, প্রচলিত মুনাজাতের নামে রমরমা ব্যবসা চলছে। অথচ শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ছাহাবীগণ ছিলেন খড়গহস্ত।[2]

عَنِ الصَّلْتِ بْنِ بُهْرَامٍ قَالَ مَرَّ ابْنُ مَسْعُوْدٍ بِامْرَأَةٍ مَعَهَا تَسْبِيْحٌ تُسَبِّحُ بِهِ فَقَطَعَهُ وَأَلْقَاهُ ثُمَّ مَرَّ بِرَجُلٍ يُسَبِّحُ بِحَصَى فَضَرَبَهُ بِرِجْلِهِ ثُمَّ قَالَ لَقَدْ سَبَقْتُمْ! رَكِبْتُمْ بِدْعَةً ظُلْمًا! وَلَقَدْ غَلَبْتُمْ أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ  عِلْمًا!

ছালত ইবনু বুহরাম (রাঃ) বলেন, ইবনু মাসঊদ (রাঃ) এক মহিলার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার কাছে দানা ছিল। তা দ্বারা সেই মহিলা তাসবীহ গণনা করছিল। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) সেগুলো কেড়ে নিলেন এবং দূরে নিক্ষেপ করলেন। অতঃপর একজন লোকের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন, যে পাথর কংকর দ্বারা তাসবীহ গণনা করছিল। ইবনু মাসঊদ তাকে নিজের পা দ্বারা লাথি মারলেন। তারপর বললেন, তোমরা অগ্রগামী হয়েছ! আর অন্ধকার বিদ‘আতের উপর আরোহন করেছ! তোমরাই কি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিসাবে ইলমের দিক থেকে বিজয়ী হয়েছ![3]

মসজিদ কমিটিকে শরী‘আত বিরোধী উক্ত কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। কারণ তারা বিদ‘আতীকে আশ্রয় দিলে তাদেরও কোন ফরয কিংবা নফল ইবাদত কবুল হবে না।[4]

[1]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৫৩৮, ১/৭৯ পৃঃ, সনদ হাসান।

[2]. দারেমী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২০০৫, সনদ ছহীহ।

[3]. ইবনু ওয়াযযাহ, আল-বিদউ, পৃঃ ২৩, হা/২১; সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৩-এর আলোচনা দ্রঃ, সনদ ছহীহ।

[4]. ছহীহ বুখারী হা/৭৩০০, ২/১০৮৪ পৃঃ, ‘ই‘তেছাম’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫; ছহীহ মুসলিম হা/৩৩৯৩, ‘হজ্জ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৫; মিশকাত হা/২৭২৮, পৃঃ ২৩৮।