(৬) ইট-বালি-সিমেন্ট ও টাইলস দ্বারা মিম্বর তৈরি করা ও তিন স্তরের বেশী স্তর বানানো

(৬) ইট-বালি-সিমেন্ট ও টাইলস দ্বারা মিম্বর তৈরি করা ও তিন স্তরের বেশী স্তর বানানো :

অধিকাংশ মসজিদে মূল্যবান পাথর বা টাইলস দ্বারা মিম্বার তৈরি করা হয়েছে। অথচ সুন্নাত হল কাঠ দ্বারা মিম্বার তৈরী করা এবং মিম্বারের তিনটি স্তর হওয়া। যেমন হাদীছে এসেছে,

أَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ إِلَى فُلَانَةَ امْرَأَةٍ مِنْ الْأَنْصَارِ قَدْ سَمَّاهَا سَهْلٌ مُرِي غُلَامَكِ النَّجَّارَ أَنْ يَعْمَلَ لِي أَعْوَادًا أَجْلِسُ عَلَيْهِنَّ إِذَا كَلَّمْتُ النَّاسَ فَأَمَرَتْهُ فَعَمِلَهَا مِنْ طَرْفَاءِ الْغَابَةِ ثُمَّ جَاءَ بِهَا فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ  فَأَمَرَ بِهَا فَوُضِعَتْ هَا هُنَا.

‘রাসূল (ছাঃ) জনৈক আনছারী মহিলার নিকট লোক পাঠান। তার নাম সাহল। এই মর্মে যে, তুমি তোমার কাঠমিস্ত্রী গোলামকে নির্দেশ দাও। সে যেন আমার জন্য একটি কাঠের আসন তৈরি করে। যার উপর বসে আমি জনগণের সাথে কথা বলব। ঐ মহিলা তার গোলামকে উক্ত মর্মে নির্দেশ দিলে সে গাবার ঝাউ কাঠ দিয়ে তা তৈরি করে নিয়ে আসে। অতঃপর মহিলা তা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দেয়। রাসূল (ছাঃ) তাকে এই স্থানে স্থাপন করার নির্দেশ দেন।[1]

উক্ত হাদীছ ইবনু খুযায়মাতে ছহীহ সনদে এসেছে, فَعَمِلَ هَذِهِ الثَّلاَثَ الدَّرَجَاتِ مِنْ طَرْفَاءِ الْغَابَةِ অতঃপর সে গাবার ঝাউ গাছ থেকে তিন স্তর বিশিষ্ট মিম্বর তৈরি করেছিল।[2] ত্বাবারাণীতে এসেছে, তিন স্তর বিশিষ্ট করার জন্য রাসূল (ছাঃ)-ই নির্দেশ দিয়েছিলেন।[3] এছাড়া রাসূল (ছাঃ) একদা মিম্বরের তিন স্তরে উঠে তিনবার ‘আমীন’ বলেছিলেন মর্মেও ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[4]

অতএব মিম্বর তিন স্তরের বেশী করা সুন্নাতের বরখেলাফ।[5] অনুরূপ ইট, পাথর ও টাইলস দ্বারা তৈরি মিম্বারও সুন্নাতের পরিপন্থী। রাসূল (ছাঃ) কাঠ দ্বারা মিম্বার তৈরি করার জন্য বলেছিলেন। ইমাম বুখারীও সেদিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।[6] তাই ঐ সমস্ত আধুনিক মিম্বার ত্যাগ করে তিনস্তর বিশিষ্ট কাঠের মিম্বর তৈরি করে সুন্নাত প্রতিষ্ঠা করা উচিৎ।

[1]. ছহীহ বুখারী হা/৯১৭, ১/১২৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/৮৭১, ২/১৮৪ পৃঃ), ‘জুম‘আ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২৬; মিশকাত হা/১১১৩, পৃঃ ৯৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০৪৫, ৩/৬৫, ‘কাতারে দাঁড়ানো’ অনুচ্ছেদ।

[2]. ছহীহ ইবনু খুযায়মাহ হা/১৫২১; ইবনু মাজাহ হা/১৪১৪, পৃঃ ১০২; মুসনাদে আহমাদ হা/২২৯২২; মুস্তাদরাক হাকেম হা/৭২৫৬; সনদ ছহীহ, আলবানী, আছ-ছামারুল মুস্তাতাব, পৃঃ ৪০৮।

[3]. ত্বাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৫৭৪৮; সনদ ছহীহ, আলবানী, আছ-ছামারুল মুস্তাতাব, পৃঃ ৪০৮।

[4]. মুস্তাদরাক হাকেম হা/৭২৫৬; সনদ ছহীহ।

[5]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩৫, ১/৩৩৪ পৃঃ।

[6]. বুখারী হা/৪৪৮, ১/৬৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৪৩৫, ১/২৪৬ পৃঃ), ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৬৪।