(২৮) ওযূ থাকা সত্ত্বেও ওযূ করলে দশগুণ নেকী

উক্ত ফযীলত সঠিক নয়। কারণ এ মর্মে বর্ণিত হাদীছ যঈফ।

(أ) عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ فَلَمَّا نُودِىَ بِالظُّهْرِ تَوَضَّأَ فَصَلَّى فَلَمَّا نُوْدِىَ بِالْعَصْرِ تَوَضَّأَ فَقُلْتُ لَهُ فَقَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ  يَقُوْلُ مَنْ تَوَضَّأَ عَلَى طُهْرٍ كَتَبَ اللهُ لَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ.

(ক) আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যখন যোহরের আযান দেয়া হল তখন তিনি ওযূ করলেন এবং ছালাত আদায় করলেন। অতঃপর যখন আছরের আযান দেয়া হল তখনও ওযূ করলেন। রাবী বলেন, আমি তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ওযূ অবস্থায় ওযূ করবে, তার জন্য আল্লাহ দশটি নেকী লিপিবদ্ধ করবেন।[1]

তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। ইমাম তিরমিযী, মুনযেরী, ইরাক্বী, নববী, ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) প্রমুখ মুহাদ্দিছ হাদীছটি যঈফ হওয়ার ব্যাপারে একমত।[2] উক্ত হাদীছের সনদে আব্দুর রহমান ইবনু যিয়াদ ইফরীক্বী ও গুত্বাইফ নামক দুইজন দুর্বল ও অপরিচিত রাবী আছে।[3]

(ب) عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ  قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وَاحِدَةً فَتِلْكَ وَظِيْفَةُ الْوُضُوْءِ الَّتِىْ لاَ بُدَّ مِنْهَا وَمَنْ تَوَضَّأَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُ كِفْلَانِ وَمَنْ تَوَضَّأَ ثَلاَثًا فَذَلِكَ وُضُوْئِىْ وَوُضُوْءُ الْأَنْبِيَاءِ قَبْلِىْ.

(খ) ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি একবার করে ওযূ করবে সে ব্যক্তি ওযূর নিয়ম পালন করল, যা তার জন্য আবশ্যক ছিল। যে ব্যক্তি দুইবার করে ধৌত করবে সে দ্বিগুণ ছওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি তিনবার করে ধৌত করবে তার ওযূ আমার ও আমার পূর্বের নবীগণের ওযূর ন্যায় হল।[4]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[5] উক্ত যঈফ হাদীছ হেদায়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে।[6] এর সনদে যায়েদ আল-আম্মী নামে একজন দুর্বল রাবী আছে।[7]

(ج) عَنْ عُثْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ  يَقُوْلُ لاَ يُسْبِغُ عَبْدٌ الْوُضُوءَ إِلاَّ غَفَرَ اللهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ.

(গ) ওছমান (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, কোন বান্দা যখন উত্তমরূপে ওযূ করে তখন আল্লাহ তার সামনের ও পিছনের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন।[8]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি মুনকার বা অস্বীকৃত।[9]

[1]. আবুদাঊদ হা/৬২, ১/৯ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/৫১২, পৃঃ ৩৯; তিরমিযী হা/৫৯, ১/১৯ পৃঃ; আলবানী, মিশকাত হা/২৯৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২৭৩, ২/৪৩ পৃঃ; মুন্তাখাব হাদীস, পৃঃ ২৯৭।

[2]. যঈফ আবুদাঊদ হা/১০।

[3]. আবুদাঊদ হা/৬২; ইবনু মাজাহ হা/৫১২; তিরমিযী হা/৫৯; আলবানী, মিশকাত হা/২৯৩, ১/৯৬ পৃঃ।

[4]. মুসনাদে আহমাদ হা/৫৭৩৫; মুন্তাখাব হাদীস, পৃঃ ২৯৪।

[5]. যঈফ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১৩৬; তাহক্বীক্ব মুসনাদ হা/৫৭৩৫।

[6]. ঐ, ১/১৯ পৃঃ।

[7]. যঈফ ইবনে মাজাহ হা/৪২০।

[8]. মুসনাদুল বাযযার হা/৪২২, ১/৯৩ পৃঃ; মুন্তাখাব হাদীস, পৃঃ ২৯২।

[9]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৫০৩৬, ১১/৬২ পৃঃ।