আরেকদল আলেম এ সালাত আদায়কে মুস্তাহাব মনে করেন না। তারা সালাতুদ-দুহা না আদায়ের হাদীসসমূহকে সনদের বিবেচনায় প্রাধান্য দিয়েছেন। সাহাবীদের আমল এটাই প্রমাণ করে। তাদের দলীল হলো:

মুওয়াররিক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَتُصَلِّي الضُّحَى؟ قَالَ: لاَ، قُلْتُ: فَعُمَرُ؟ قَالَ: لاَ، قُلْتُ: فَأَبُو بَكْرٍ؟ قَالَ: لاَ، قُلْتُ: فَالنَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: لاَ إِخَالُهُ».

“আমি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি চাশ্‌ত-এর সালাত আদায় করেন? তিনি বললেন, না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তা আদায় করতেন কি? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু? তিনি বললেন, না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম? তিনি বললেন, আমি তা মনে করি না। (আমার মনে হয় তিনিও তা আদায় করতেন না, তবে এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কিছু বলতে পারছি না)।”[1]

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«قَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَكَانَ ضَخْمًا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنِّي لاَ أَسْتَطِيعُ الصَّلاَةَ مَعَكَ، فَصَنَعَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَعَامًا، فَدَعَاهُ إِلَى بَيْتِهِ وَنَضَحَ لَهُ طَرَفَ حَصِيرٍ بِمَاءٍ، «فَصَلَّى عَلَيْهِ رَكْعَتَيْنِ» وَقَالَ فُلاَنُ بْنُ فُلاَنِ بْنِ جَارُودٍ لِأَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى؟ فَقَالَ: «مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى غَيْرَ ذَلِكَ اليَوْمِ».

“জনৈক স্থুলদেহী আনসারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিদমতে আরয করলেন, “আমি আপনার সংগে (জামা’আতে) সালাত আদায় করতে পারি না। তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্যে খাবার তৈরি করে তাঁকে দাওয়াত করে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলেন এবং একটি চাটাই এর এক অংশে (কোমল ও পরিচ্ছন্ন করার উদ্দেশ্যে) পানি ছিটিয়ে (তা বিছিয়ে) দিলেন। তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওপর দুই রাকাত সালাত আদায় করলেন। ইবন জারূদ রহ. (নিশ্চিত হওয়ার উদ্দেশ্যে) আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন (তবে কি) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাশ্‌ত-এর সালাত আদায় করতেন? আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, সেদিন ব্যতীত অন্য সময়ে তাঁকে এ সালাত আদায় করতে দেখি নি।”[2]

হাফেয ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন, মোদ্দাকথা হলো, ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীস থেকে সালাতুদ-দুহা শরী‘আতসিদ্ধ হওয়াকে অস্বীকার করে না। কেননা তার না বলাটা না দেখার প্রমাণ। এটা নয় যে, সে কাজটি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই করেন নি অথবা তার না বলার অর্থ হলো রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বক্ষনিক ও মসজিদে জামা‘আতের সাথে প্রকাশ্যে সালাতুদ-দুহা আদায়কে না বলা। কেননা এভাবে প্রকাশ্যে জামা‘আতের সাথে আদায় করাটা সুন্নাতের বিরোধী। মূল সালাতটা আদায় করা সুন্নাত বিরোধী নয়। আর তার একথা আরো শক্তিশালী করে ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীস থেকে,

«أَنَّهُ رَأَى قَوْمًا يُصَلُّونَهَا فَأَنْكَرَ عَلَيْهِمْ وَقَالَ إِنْ كَانَ وَلَا بُدَّ فَفِي بُيُوتِكُمْ».

“তিনি কিছু লোককে সালাতুদ-দুহা আদায় করতে দেখে তাদেরকে এভাবে আদায় করতে নিষেধ করলেন। তিনি তাদেরকে বললেন, যদি তোমরা এ সালাত আদায় করতেই চাও তবে ঘরে বসে আদায় করো”।[3]

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৭৫।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৭৯।

[3] মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবা, হাদীস নং ৭৭৭৭, খ. ২, পৃ. ১৭২; ফাতহুল বারী, ৩/৫৩।