রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই মহান ফযীলতের বিষয়টি ভিন্নভাবে জোর দিয়েছেন; যেমন তিনি ইমামের কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলেয়ে ‘আমীন’ বলার ফযীলত নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন; কারণ, তা জামা‘য়াতে সালাত আদায়ের সময় এক গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী দৃশ্য ও ভাবধারার আবহ তৈরি করে; যা দীনের বলিষ্ঠ ঘোষণা ও বিশেষ শ্লোগান প্রকাশের বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« إِذَا قَالَ الْإِمَامُ ﴿ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ﴾ , فَقُولُوا آمِينَ , فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلَائِكَةِ , غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ » . ( رواه البخاري و مسلم ) .

“ইমাম যখন (غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ) বলবে, তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে; কারণ, যার কথা (আমীন বলা) ফিরিশ্তাদের কথার (আমীন বলার) সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে, তার বিগত দিনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।”[1]

অতএব, হে আমার ঈমানী ভাই! এসব সালাতের জন্য আগ্রহী হউন, যখনই তার জন্য আহ্বান করা হবে; কেননা, তা হলো হেদায়েতের পথ ও তাকওয়ার নিদর্শন।

শরী‘য়ত সম্মত ওযর ব্যতীত বিনা কারণে এই সালাত আদায়ে অলসতা করার ব্যাপারে সাবধান ও সতর্ক হউন; কেননা, জামা‘য়াতে সালাত আদায় করা মুসলিম জনগোষ্ঠী’র উপর ফরয।

আর সুসংবাদ গ্রহণ করুন কিয়ামতের দিনে পরিপূর্ণ নূরের এবং দুনিয়াতে গুনাহসমূহের ক্ষমা ও পাপরাশি মোচনের।

কিন্তু হে মুসল্লী সম্প্রদায়! জেনে রাখবেন যে, উল্লেখিত এই ফযীলতের অধিকারী শুধু সে ব্যক্তিই হবে, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে এমনভাবে যে— সে তার জন্য সুন্দরভাবে অযু করল, পরিপূর্ণভাবে তা (সালাত) আদায় করল এবং জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে এমনভাবে বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করল, যেভাবে করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; আর এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে আবূ আইয়ুব আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« مَنْ تَوَضَّأَ كَمَا أُمِرَ , وَصَلَّى كَمَا أُمِرَ , غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ) » . ( رواه النسائي و ابن ماجه) .

“যে ব্যক্তি অযু করল যেমনভাবে অযু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সালাত আদায় করল যেমনভাবে সালাত আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।”[2]আর এই জন্য প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উচিৎ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের ধরন ও পদ্ধতির দিকে মনোযোগ দেওয়া; আর যিনি এই ব্যাপারে সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তিনি যেন জ্ঞানী ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়ে মনোযোগ দিয়ে কথা শুনা ও সর্বোত্তম কথাটি অনুসরণ করার আগ্রহ নিয়ে তাদেরকে সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন।

>
[1] বুখারী, হাদিস নং- ৭৪৯ এবং হাদিসের শব্দগুলো ইমাম বুখারী রহ. এর; মুসলিম, হাদিস নং- ৯৪৭ এবং তাঁরা উভয়ে হাদিসটি আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।

[2] নাসায়ী: (১/৯০ - ৯১); ইবনু মাজাহ, হাদিস নং- ১৩৯৬; ইবনু হিব্বান, হাদিস নং- ১০৩৯