সপ্তম মূলনীতি: আল্লাহ তা‘আলার সিফাতসমূহ ওহীনির্ভর। এ ক্ষেত্রে বুদ্ধি বিবেচনার কোনো স্থান নেই।

অতএব আমরা আল্লাহ তা‘আলার জন্য এমন কোনো সিফাত বা গুণবৈশিষ্ট্য উল্লেখ করব না যা কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত হয়নি। ইমাম আহমদ র. বলেছেন: আল্লাহ তা‘আলা নিজেকে যেসব গুণে গুণান্বিত করেছেন অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলার যেসব গুণের কথা উল্লেখ করেছেন তা ব্যতীত অন্যকোনো গুণ আল্লাহর সঙ্গে যুক্ত করা শুদ্ধ হবে না। এ ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহকে অতিক্রম করা যাবে না। (দেখুন আল্লাহ তা‘আলার নাম-বিষয়ক পঞ্চম মূলনীতি)

নির্দিষ্ট কোনো সিফাত আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত কি না তা কুরআন-সুন্নাহ থেকে তিনভাবে প্রমাণিত করা যাবে:

প্রথমত: সিফাতটি সরাসরি উল্লিখিত থাকা: যেমন আল ইয্যাহ (শক্তি), আল কুউয়াহ (শক্তি), আর রাহমাহ (রহমত), আল বাত্শ (পাকড়াও করা), আল ওয়াজ্হ (চেহারা), আল য়াদাইন (দু‘হাত)। এসব সিফাত সরাসরি উল্লিখিত রয়েছে।

দ্বিতীয়ত: সিফাত সংবলিত নাম উল্লিখিত থাকা: যেমন আল গাফুর (ক্ষমাশীল), এ নামটি ‘আল মাগফিরাহ’ (ক্ষমা) সিফাতকে শামিল করে আছে। আস্‌সামীউ‘ (সর্বশ্রোতা), এ নামটি আস্‌সাসাম্‘উ (শ্রবণ) সিফাতকে শামিল করে আছে। (দেখুম: নাম সম্পর্কে তৃতীয় নীতি)

তৃতীয়ত: সরাসরি কোনো ক্রিয়াপদ অথবা ক্রিয়াপদের অর্থ প্রকাশক শব্দ উল্লিখিত থাকা যা সিফাতকে নির্দেশ করে: যেমন আরশের ওপরে ওঠা, নিম্নাকাশে অবতরণ করা, কিয়ামতের দিন বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্য আসা, অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া। উল্লিখিত প্রতিটি সিফাত নিম্নোক্ত আয়াত ও হাদীসে ধারাবাহিকভাবে উল্লিখিত রয়েছে:

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ ٱلرَّحۡمَٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ٥ ﴾ [طه: ٥]

দয়াময় যিনি আরশের ওপরে উঠেছেন। (সূরা তাহা: ২০: ৫)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস:

«ينزل ربنا كل ليلة إلى السماء الدنيا»

(আমাদের রব প্রতি রাতেই নিম্নাকাশে অবতরণ করেন)

আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿ وَجَآءَ رَبُّكَ وَٱلۡمَلَكُ صَفّٗا صَفّٗا ٢٢ ﴾ [الفجر: ٢٢]

আর তোমার রব ও ফেরেশতাগণ উপস্থিত হবেন সারিবদ্ধভাবে। (সূরা আল ফাজর: ৮৯: ২২)

এবং সবশেষে বলেন:

﴿إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢ ﴾ [السجدة: ٢٢]

নিশ্চয় আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী। (সূরা আস্‌সাজদা: ৩২: ২২)