৫৫২০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নিকৃষ্ট লোকেদের ওপরেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।

৫৫২০-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: দাজ্জাল বের হবে এবং সে চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করবে। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি জানি না তিনি (সা.) চল্লিশ দিন অথবা মাস অথবা বছর এটার কোনটি বলেছেন? অতঃপর আল্লাহ তা’আলা ’ঈসা ইবনু মারইয়াম আলায়হিস সালাম-কে পাঠাবেন। দেখতে তিনি উরওয়া ইবনু মাস’ঊদ-এর মতো। তিনি দাজ্জালের খোঁজ করবেন এবং তিনি তাকে হত্যা করবেন। তিনি (ঈসা আলায়হিস সালাম) সাত বছর এ জমিনে অবস্থান করবেন, সেই যুগে দু’জন লোকের মধ্যেও শত্রুতা থাকবে না। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা সিরিয়ার দিক থেকে একটি ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত করবেন, উক্ত বায়ু ভূপৃষ্ঠে এমন একজন লোককেও জীবিত রাখবে না, যার অন্তরে অণু-কণা পরিমাণ পুণ্য বা ঈমান থাকবে। যদি সে সময় তোমাদের কেউ পাহাড়ের ভিতরেও আত্মগোপন করে, উক্ত বাতাস সেখানে প্রবেশ করেও তার রূহ কবয করবে।

তিনি (সা.) বলেছেন, অতঃপর কেবলমাত্র নিকৃষ্ট ফাসিক ও খারাপ লোকগুলোই অবশিষ্ট থাকবে। তারা নিষ্ঠুর পাখিদের মতো দ্রুতগামী এবং খুন-খারাবিতে হিংস্র জন্তুর ন্যায় নিষ্ঠুর হবে। ভালো-মন্দ তারতম্য করার কোন যোগ্যতা তাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে না। তখন শয়তান একটি আকৃতি ধারণ করে তাদের কাছে এসে বলবে, তোমাদের ডাকে কী সাড়া দিব না? তখন লোকেরা বলবে, আচ্ছা তুমিই বল আমাদের কি করা উচিত। অতঃপর শয়তান তাদেরকে মূর্তিপূজায় আদেশ করবে। এ অবস্থায় তারা অতি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ও ভোগ-বিলাসে জীবনযাপন করতে থাকবে। অতঃপর শিঙ্গায় ফুক দেয়া হবে এবং যে লোকই উক্ত আওয়াজ শুনবে, সে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এদিক-সেদিক মাথা ঘুরাতে থাকবে।

তিনি (সা.) বললেন, সর্বপ্রথম উক্ত আওয়াজ সেই লোকই শুনতে পাবে, যে তার উটের জন্য পানির হাওয মেরামত কার্যে রত। সে তখন ভীত হয়ে সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং তার সাথে সাথে অন্যান্য লোকও মারা যাবে। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা কুয়াশার মতো খুব হালকা ধরনের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তাতে ঐ সকল দেহগুলো সজীব হয়ে উঠবে, যেগুলো কবরের মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে রয়েছিল। অতঃপর দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন সমস্ত লোক উঠে দাঁড়াবে। অতঃপর ঘোষণা দেয়া হবে, হে লোকসকল! তোমরা দ্রুত তোমাদের প্রভুর দিকে ছুটে আসো। (ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে) ঐখানে তাদেরকে থামিয়ে রাখ, তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। অতঃপর মালায়িকা- (ফেরেশতাদেরকে) বলা হবে, ঐ সকল লোকদেরকে বের কর যারা জাহান্নামের উপযোগী হয়েছে। তখন মালায়িকাহ্ বলবেন, কতজন থেকে কতজন বের করব? বলা হয়, প্রত্যেক হাজার থেকে নয়শত নিরানব্বইজনকে জাহান্নামের জন্য বের কর। এ পর্যন্ত বলার পর তিনি (সা.) বললেন, এটা সেদিন যেদিন সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে- (يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا) ’সেদিন শিশুদেরকে বৃদ্ধ করে ফেলবে।’ (অর্থাৎ সেদিনের বিভীষিকায় শিশুও বৃদ্ধ হয়ে যাবে)
(يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ) ’সেদিন বিরাট সংকটময় অবস্থায় প্রকাশ পাবে।’ (মুসলিম)

মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস (لَا تَنْقَطِعُ الْهِجْرَةُ) পূর্বে তাওবার’ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।

الفصل الاول (بَابُ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ إِلَّا عَلَى شِرَارِ النَّاس)

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَخْرُجُ الدَّجَّالُ فَيَمْكُثُ أَرْبَعِينَ» لَا أَدْرِي أَرْبَعِينَ يَوْمًا أَوْ شَهْرًا أَوْ عَامًا «فَيَبْعَثُ اللَّهُ عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ كَأَنَّهُ عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُودٍ فَيَطْلُبُهُ فَيُهْلِكُهُ ثُمَّ يَمْكُثُ فِي النَّاسِ سَبْعَ سِنِينَ لَيْسَ بَيْنَ اثْنَيْنِ عَدَاوَةٌ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ رِيحًا بَارِدَةً مِنْ قِبَلِ الشَّامِ فَلَا يَبْقَى عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ أَوْ إِيمَانٍ إِلَّا قَبَضَتْهُ حَتَّى لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ دَخَلَ فِي كَبِدِ جَبَلٍ لَدَخَلَتْهُ عَلَيْهِ حَتَّى تَقْبِضَهُ» قَالَ: فَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ فِي خِفَّةِ الطَّيْرِ وَأَحْلَامِ السِّبَاعِ لَا يَعْرِفُونَ مَعْرُوفًا وَلَا يُنْكِرُونَ مُنْكَرًا فَيَتَمَثَّلُ لَهُمُ الشَّيْطَانُ فَيَقُولُ أَلَا تَسْتَجِيبُونَ؟ فَيَقُولُونَ: فَمَا تَأْمُرُنَا؟ فَيَأْمُرُهُمْ بِعِبَادَةِ الْأَوْثَانِ وَهُمْ فِي ذَلِكَ دَارٌّ رِزْقُهُمْ حَسَنٌ عَيْشُهُمْ ثُمَّ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ فَلَا يَسْمَعُهُ أَحَدٌ إِلَّا أَصْغَى لِيتًا وَرَفَعَ لِيتًا قَالَ: وَأَوَّلُ مَنْ يَسْمَعُهُ رَجُلٌ يَلُوطُ حَوْضَ إِبِلِهِ فَيَصْعَقُ وَيَصْعَقُ النَّاسُ ثُمَّ يُرْسِلُ اللَّهُ مَطَرًا كَأَنَّهُ الطَّلُّ فَيَنْبُتُ مِنْهُ أَجْسَادُ النَّاسِ ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ أُخْرَى فَإِذَا هُمْ قِيَامٌ يَنْظُرُونَ ثُمَّ يُقَالُ: يَا أَيُّهَا الناسُ هَلُمَّ إِلى ربِّكم وقفوهُم إِنَّهم مسؤولونَ. فَيُقَالُ: أَخْرِجُوا بَعْثَ النَّارِ. فَيُقَالُ: مِنْ كَمْ؟ كَمْ؟ فَيُقَالُ: مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ قَالَ: «فَذَلِكَ يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا وَذَلِكَ يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ سَاقٍ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَذُكِرَ حَدِيثُ مُعَاوِيَةَ: «لَا تَنْقَطِعُ الْهِجْرَةُ» فِي «بَاب التَّوْبَة»

رواہ مسلم (116 / 2940)، (7381) 0 حدیث معاویۃ : لا تنقطع الھجرۃ ، تقدم (2346) ۔
(صَحِيح)

وعن عبد الله بن عمرو قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يخرج الدجال فيمكث اربعين» لا ادري اربعين يوما او شهرا او عاما «فيبعث الله عيسى ابن مريم كانه عروة بن مسعود فيطلبه فيهلكه ثم يمكث في الناس سبع سنين ليس بين اثنين عداوة ثم يرسل الله ريحا باردة من قبل الشام فلا يبقى على وجه الارض احد في قلبه مثقال ذرة من خير او ايمان الا قبضته حتى لو ان احدكم دخل في كبد جبل لدخلته عليه حتى تقبضه» قال: فيبقى شرار الناس في خفة الطير واحلام السباع لا يعرفون معروفا ولا ينكرون منكرا فيتمثل لهم الشيطان فيقول الا تستجيبون؟ فيقولون: فما تامرنا؟ فيامرهم بعبادة الاوثان وهم في ذلك دار رزقهم حسن عيشهم ثم ينفخ في الصور فلا يسمعه احد الا اصغى ليتا ورفع ليتا قال: واول من يسمعه رجل يلوط حوض ابله فيصعق ويصعق الناس ثم يرسل الله مطرا كانه الطل فينبت منه اجساد الناس ثم ينفخ فيه اخرى فاذا هم قيام ينظرون ثم يقال: يا ايها الناس هلم الى ربكم وقفوهم انهم مسوولون. فيقال: اخرجوا بعث النار. فيقال: من كم؟ كم؟ فيقال: من كل الف تسعماىة وتسعة وتسعين قال: «فذلك يوم يجعل الولدان شيبا وذلك يوم يكشف عن ساق» . رواه مسلم وذكر حديث معاوية: «لا تنقطع الهجرة» في «باب التوبة» رواہ مسلم (116 / 2940)، (7381) 0 حدیث معاویۃ : لا تنقطع الھجرۃ ، تقدم (2346) ۔ (صحيح)

ব্যাখ্যা: (يَخْرُجُ الدَّجَّالُ فَيَمْكُثُ أَرْبَعِينَ) দাজ্জাল বের হয়ে ৪০ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সা.) এর কোন ব্যাখ্যা দেননি। হয়তো ৪০ দিন হবে না হয় মাস আর তা না হলে বছর হতে পারে। এই তিনটির কোন একটি নবী (সা.) উদ্দেশ্য করেছেন।

(فَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ فِي خِفَّةِ الطَّيْرِ) অতঃপর নিকৃষ্ট মানুষেরাই বেঁচে থাকবে দোদুল্যমান অবস্থায়। ‘আল্লামাহ্ ক্বাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (خِفَّةِ الطَّيْرِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সামান্য সন্দেহ হলেই দোদুল্যমান ও উৎকণ্ঠায় থাকবে। মন্দ বা খারাপ লোকদের তুলনা দিতে গিয়ে এই উদাহরণ দেয়ার কারণ হলো তারা তাদের মধ্যে প্রশান্তি ও স্থিরতায় থাকবে না। তারা পাখির মতো বিচরণ করতে থাকবে সংশয়ে, পাপাচার ও বিপর্যয় সৃষ্টিতে।
(وَأَحْلَامِ السِّبَاعِ) তারা পশুর ন্যায় জ্ঞানশূন্য থাকবে। তাদের মধ্যে কোন ধৈর্য পরিলক্ষিত হবে না। সর্বদা রাগান্বিত থাকবে এবং দয়ামায়া কম থাকবে।
(لَا يَعْرِفُونَ مَعْرُوفًا وَلَا يُنْكِرُونَ مُنْكَرًا) তারা কোনটি ভালো আর কোনটি মন্দ কিছুই বুঝবে না। ফলে তাদের কর্মে উলটপালট দেখা দিবে।
(فَيَتَمَثَّلُ لَهُمُ الشَّيْطَانُ) অতঃপর শয়তান মানুষের আকৃতিতে উপস্থিত হয়ে তাদের মধ্যে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকবে। এজন্যই আল্লাহ তা'আলা শয়তান মানুষের কথা পবিত্র কুরআনে বলেছেন এভাবে,
(وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنَا لِکُلِّ نَبِیٍّ عَدُوًّا شَیٰطِیۡنَ الۡاِنۡسِ وَ الۡجِنِّ) “এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর নিকট মানুষ এবং জিন্ শয়তানকে শত্রু হিসেবে পাঠিয়েছি।” (সূরা আল আ'আম ৬: ১১২)
(فَيَأْمُرُهُمْ بِعِبَادَةِ الْأَوْثَانِ) অতঃপর শয়তান তাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপায় হিসেবে মূর্তিপূজার প্রতি আদেশ করে বলবে, আল্লাহর কাছে আমল পৌছাতে হলে এই মূর্তিগুলোয় ওয়াসীলাহ্ গ্রহণ করতে হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা তাদের সম্পর্কে বলেন, (مَا نَعۡبُدُهُمۡ اِلَّا لِیُقَرِّبُوۡنَاۤ اِلَی اللّٰهِ زُلۡفٰی) “আমরা তো তাদের ইবাদাত করি এজন্য যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য পৌছিয়ে দিবে।” (সূরা আয যুমার ৩৯: ৩)
তারা আরো বলে, (وَ یَقُوۡلُوۡنَ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنۡدَ اللّٰهِ) “এরা আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশকারী।” (সূরা ইউনুস ১০: ১৮)
(فَيُقَالُ: أَخْرِجُوا بَعْثَ النَّارِ) অতঃপর মালায়িকারকে (ফেরেশতাদেরকে) উদ্দেশ্য করে বলা হবে, সমস্ত মানুষের মধ্য থেকে জাহান্নামীদেরকে আলাদা করে ফেল। তখন সম্বোধিত মালাক জিজ্ঞেস করবে কত জন?
(فَيُقَالُ: مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ) তখন বলা হবে প্রতি হাজারে নয় শত নিরানব্বই জনকে আলাদা করে ফেল। যারা তাদের কৃতকর্মের দ্বারা জাহান্নামকে আবশ্যক করে নিয়েছে।
সম্ভবত এরা হবে কাফির যারা বিনা হিসাবে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং সেথায় চিরদিন অবস্থান করবে। অথবা, যারা অপরাধের কারণে জাহান্নামী হবে এবং শাস্তির পরিমাণ অনুযায়ী তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ তা'আলাই এ ব্যাপারে অধিক অবগত।
(فَذَلِكَ يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا) সেই সময়টি এতই ভয়ানক হবে যে, শিশু বাচ্চারা ঐ অবস্থায় বার্ধক্যে উপনীত হবে। (يَوْمَ) শব্দটি যবরযুক্ত পড়তে হবে। যেহেতু পবিত্র কুরআনে এভাবেই ব্যবহার হয়েছে।
(يَوْمَ يَجْعَلُ الْوِلْدَانَ شِيبًا) এমনিভাবে পরবর্তী (يَوْمَ) শব্দার্থও যবরযুক্ত পড়তে হবে। এটাও পবিত্র কুরআনের অনুরূপ (وۡمَ یُکۡشَفُ عَنۡ سَاقٍ) “যেদিন (কিয়ামতে) পায়ের গোছা (হাঁটুর নিম্নভাগ) উন্মোচিত হবে...”- (সূরাহ্ আল কলাম ৬৮: ৪২)।
অর্থাৎ ভয়াবহ অবস্থা আরবীতে বলা হয়: (كَشَفَتِ الْحَرْبُ عَنِ السَّاقِ) যখন যুদ্ধ কঠিন অবস্থা ধারণ করে। মূলত শব্দটির ব্যবহার এসেছে একটি বিশেষ প্রসঙ্গে, তা হলো যখন উটের পেটের ভিতর বাচ্চা মারা যায় তখন তার ধ্বংসকারী ব্যক্তি তার হাতকে জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে তার পা ধরে টেনে বের করে আনে। অতঃপর প্রত্যেক জটিল ও মারাত্মক বিষয়ের ক্ষেত্রে (ساق) শব্দটিকে প্রয়োগ করা হয়।
‘আল্লামাহ খত্ত্বাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, মাশায়েখগণের নিকট এটি বহুল প্রচলিত যে, প্রত্যেক ঐ ব্যাপারে শব্দটিকে প্রয়োগ করা যেখানে বিষয়টি জটিল কিন্তু এর প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা সম্ভবপর নয়। আর যারা এর ব্যাখ্যা করেছেন তারা বলেছেন, ব্যাপারটি হলো দুনিয়ার প্রস্থান এবং কিয়ামতের আগমন একটি বিভীষিকাময় অবস্থা। যখন এটা স্পষ্ট হবে এবং তার অস্পষ্টতা দূর হয়ে যাবে তখন বিষয়টিকে বলা হবে (كَشَفَ عَنْ سَاقِهِ) যদিও সংবাদের ক্ষেত্রে কোন (ساق) বা পায়ের সম্পর্ক নেই।

(وَذُكِرَ حَدِيثُ مُعَاوِيَةَ: «لَا تَنْقَطِعُ الْهِجْرَةُ») মু'আবিয়াহ্ (রাঃ)-এর হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, হিজরত ততদিন বন্ধ হবে না যতদিন তাওবার দরজা বন্ধ হবে না। আর তাওবাহ্ ততদিন পর্যন্ত বন্ধ হবে না যতদিন পর্যন্ত সূর্য পশ্চিম দিগন্তে উদিত না হবে। হাদীসে উল্লেখিত হিজরতের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, গুনাহকে পরিত্যাগ করে কল্যাণের পথে ফিরে আসা অথবা বিদআতী গৃহ পরিত্যাগ করে সুন্নাতের গৃহে পদার্পণ করা অথবা খারাপ রাষ্ট্র থেকে কল্যাণের রাষ্ট্রে চলে আসা। (মিরকাতুল মাফাতীহ শারহুন নাবাবী ১৮তম খণ্ড, হা, ২৯৪০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৭: ফিতনাহ (كتاب الْفِتَن)